রঞ্জি ফাইনালের দিকে পা বাড়াল মুম্বই, যশস্বী শূন্য টপকাতেই কী কারণে ড্রেসিংরুমের অভিবাদন?
রঞ্জি ফাইনাল এবার মুম্বই ও মধ্যপ্রদেশের মধ্যে হতে চলেছে। অন্তত দুটি সেমিফাইনালের তৃতীয় দিনের শেষে তেমনই পরিস্থিতি। আলুরে বাংলার বিরুদ্ধে প্রথম ইনিংসে এগিয়ে থাকার পর লিড ধরাছোঁয়ার বাইরে নিয়ে যাচ্ছে মধ্যপ্রদেশ। অন্যদিকে, বেঙ্গালুরুর জাস্ট ক্রিকেট গ্রাউন্ডে উত্তরপ্রদেশের বিরুদ্ধে রঞ্জি সেমিফাইনালের রাশ পুরোটাই মুম্বইয়ের হাতে।
|
ফাইনালের দিকে মুম্বই
প্রথম ইনিংসে মুম্বইয়ের ৩৯৩ রানের জবাবে মাত্র ১৮০ রানে গুটিয়ে যায় উত্তরপ্রদেশ। ৫৫ বল সর্বাধিক ৪৮ রান করেন শিবম মাভি। মাধব কৌশিক ৩৮, অধিনায়ক করণ শর্মা ২৭, প্রিন্স যাদব ২০ ও রিঙ্কু সিং ১৬ রান করেন। বাকিরা কেউ দুই অঙ্কের ঘরেই পৌঁছাতে পারেননি। তুষার দেশপাণ্ডে, মোহিত অবস্থি ও তনুশ কোটিয়ান তিনটি করে উইকেট দখল করেন। এরপর তৃতীয় দিনের শেষ অবধি মুম্বই দ্বিতীয় ইনিংসে ৪২ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ১৩৩ রান তুলে ফেলেছে। লিড এখনই ৩৪৬ রানের। ১২টি চারের সাহায্যে অধিনায়ক পৃথ্বী শ ৭১ বলে ৬৪ রান করে আউট হন।
|
যশস্বীর মন্থর ইনিংস
যশস্বী জয়সওয়াল পাঁচটি চার ও একটি ছয়ের সাহায্যে ১১৪ বলে ৩৫ রানে অপরাজিত রয়েছেন। তাঁর সঙ্গে ক্রিজে আরমান জাফর, তিনি আপাতত ৬৭ বলে ৩২ রান করেছেন। তাঁর ইনিংসে রয়েছে পাঁচটি চার। যশস্বী প্রথম ইনিংসে শতরান করেছিলেন। ২২৭ বলে ১০০ রান করেন। এ ছাড়া উইকেটকিপার হার্দিক তামোরে করেন ২৩৩ বলে ১১৫ রান। কিন্তু এদিন দ্বিতীয় ইনিংসে মন্থর ইনিংস খেলেন যশস্বী। ২০.৩ ওভারে দলের ৬৬ রানের মাথায় যখন পৃথ্বী ব্যক্তিগত ৬৪ রানে আউট হন তখনও খাতাই খোলেননি অপর ওপেনার যশস্বী! এমনকী তিন নম্বরে নামা আরমান জাফর ৭ বলে যখন ৬ রানে অপরাজিত তখন প্রথম রানটি পান যশস্বী। আর তাতেই করতালিতে অভিবাদন জানায় মুম্বইয়ের ড্রেসিংরুম।
|
নজির নিয়ে চর্চা
যশস্বীর এই মন্থর ইনিংসের নজির নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় চর্চাও অব্যাহত। দেখা যাচ্ছে, মুম্বইয়ের রান যখন ২১.৫ ওভারে ছিল ১ উইকেটে ৭২, সেই সময় যশস্বী ৫৩ বলে শূন্য ও জাফর ৭ বলে ৬ রানে অপরাজিত, লেগ বাই ২। এর পরের বলে চার মেরে খাতা খোলেন যশস্বী। পরিসংখ্যানবিদরা জানিয়েছেন, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে প্রথম রান করতে সবচেয়ে বেশি সময় অপেক্ষার নিরিখে যশস্বীর ইনিংসটি রয়েছে দুই নম্বরে। ২০০৬ সালে বাংলার বিরুদ্ধে বরোদার শেখর যোশী ১২০ মিনিট খেলে প্রথম রান পেয়েছিলেন। যশস্বী নিলেন ১০৮ মিনিট। ২০১৩ সালে ইংল্যান্ডের স্টুয়ার্ট ব্রড নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১০৩ মিনিটে ক্রিজে কাটিয়ে তবে প্রথম রানটি পেয়েছিলেন।
|
পূজারাকে স্পর্শ
রঞ্জি ট্রফিতে ৫০ রানের বেশি পার্টনারশিপের ক্ষেত্রেও এদিন এক নজির তৈরি হয়েছে। ২০২০ সালে অরুণাচলের রাহুও দালাল বিহারের বিরুদ্ধে ৭৪ রান করেছিলেন, তাঁর সঙ্গী রাকেশ কুমার একটি রানও করেননি। শতকরা নিরিখে রাহুও দালাল জুটির ১০০ শতাংশ রান নিজেই করেছিলেন। এদিন দুটি লেগ বাই থাকায় পৃথ্বী শ যশস্বীর সঙ্গে জুটির ৯৬.৯৭ রান নিজেই করেন। বিগত আট বছরে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে প্রথম রান করতে ৫০টিরও বেশি বল খেলার নজির এর আগে ছিল চেতেশ্বর পূজারার। ২০১৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে জোহানেসবার্গ টেস্টে তিনি প্রথম রানটি করেন ৫৪ বলে। আজ যশস্বীও প্রথম রানটি পূর্ণ করেন সেই ৫৪ বলেই।