আইসিসি-তে একা লড়তে পারবে কি পাকিস্তান, বিসিসিআইয়ের প্রয়োজন কতটা
ভারত ছাড়া আইসিসি-তে লড়তে পারবে তো ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করা পাকিস্তান
পাকিস্তানে দ্বিপাক্ষিক ক্রিকেট সিরিজ খেলার কথা ছিল নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ড দলের। দুটি সিরিজই বাতিল হয়েছে। নিরাপত্তা এবং সুরক্ষার স্বার্থে পাকিস্তানে ক্রিকেট খেলতে রাজি হয়নি দুই দেশের ক্রিকেট বোর্ড। তাতেই চটে লাল হয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে আইসিসি-তে লড়াই করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে পাকিস্তান। অন্যদিকে ঘরের মাঠে দুই দ্বিপাক্ষিক সিরিজ বাতিল হওয়া ভারতের বিরুদ্ধে ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগ এনেছে পাকিস্তানের কিছু মহল। কিন্তু বিসিসিআইয়ের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে আইসিসি-তে লড়াই করতে পারবেন তো পিসিবি।
ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ
পাকিস্তানে ক্রিকেট সিরিজ খেলতে পৌঁছে গিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে প্রাথমিকভাবে খুশিও হয়েছিলেন ব্ল্যাক ক্যাপরা। তারপরেই নাশকতা সংক্রান্ত একটি হুমকি ইমেল পায় নিউজিল্যান্ড শিবির। তারপরই বাইশ না নেমে পাকিস্তান ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয় কিউয়িরা। এর পিছনে ভারতের চক্রান্ত দেখেছেন পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ফওয়াদ চৌধুরী। ওই ভুয়ো মেলটি ভারত থেকে এসেছে বলে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ আনেন ওই পাক মন্ত্রী।
আইসিসিতে পাকিস্তান
১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপের পর ভারত এবং পাকিস্তান যৌথভাবে আইসিসি-তে পরিবর্তনের সূচনা ঘটিয়েছিলেন। ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার একাধিপত্যে ভাগ বসিয়েছিল এশিয় জুটি। সেখান থেকেই নতুন যুগের সূচনা হয়েছিল। ১৯৯৬ সালে এলটিটিই সমস্যায় শ্রীলঙ্কায় ক্রিকেট খেলতে যেতে অস্বীকার করেছিল অস্ট্রেলিয়া ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তৎকালীন বিসিসিআই সভাপতি জগমোহন ডালমিয়ার পৌরহিত্যে দ্বীপরাষ্ট্রে ক্রিকেট খেলতে গিয়ে সে দেশের পাশে দাঁড়িয়েছিল ভারত ও পাকিস্তান। দুই দেশের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক বৈরিতায় বিসিসিআই ও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের মধ্যেকার সম্পর্কেরও অবনতি হয়েছে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড প্রতিপত্তির নিরিখে আইসিসি-তে যত ওপরে উঠেছে ততই নিচে নেমেছে পাকিস্তান। ২০০৯ সালে পাকভূমে শ্রীলঙ্কার টিম বাসে হামলার পর থেকে বাইশ গজেও কোণঠাসা হয়ে গিয়েছে ইমরান খানের দেশ।
ভারতকে প্রয়োজন
প্রভাব, প্রতিপত্তির নিরিখে আইসিসি-তে এখন ফার্স্ট বয় বিসিসিআই। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় নেতৃত্বাধীন ক্রিকেট বোর্ডের কথা যে বিশ্বের সর্বোচ্চ ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থায় বিশেষ গুরুত্ব পায়। বিসিসিআই পরিচালিত আইপিএল বিশ্বের ধনী ও জনপ্রিয়তম ক্রিকেট লিগ। প্রভাবের নিরিখে আইসিসি সেকেন্ড ও থার্ড বয়ের মর্যাদা পেতে পারে যথাক্রমে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট বোর্ড। তারাও বিসিসিআইয়ের বিরুদ্ধে কার্যত টুঁ শব্দ করতে পারে না। ফলে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে এড়িয়ে আইসিসি-তে যুদ্ধ ঘোষণা করা যে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষে মুশকিল হবে, তা অনায়াসে বলা যায়।
পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের ক্ষতি
নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ড সিরিজ বাতিল হওয়ার কারণে তীব্র আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। পিসিবি প্রধান রামিজ রাজার দেওয়া প্রাথমিক খতিয়ান অনুযায়ী তাঁদের ২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতি হয়েছে। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড চাইলে আইসিসি বিষয়ট তুলে ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারে।