বাংলাদেশে সিরিজ জয়েও রইল কাঁটা! অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে নামার আগে ভারতকে কী কী খামতি মেটাতে হবে?
বাংলাদেশে সিরিজ জয়েও রইল কাঁটা! অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে নামার আগে কী কী খামতি মেটাতে হবে? চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দাপুটে জয়ই ছিনিয়ে নিয়েছিল ভারত। তবে মীরপুরে দ্বিতীয় টেস্টে টেনশন কাটিয়ে জয়ের মুখ দেখতে হয়েছে। যে দল আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলার দিকে এগিয়ে চলেছে, তাদের কাছে এমনটা মোটেও প্রত্যাশিত নয়। ফলে একাধিক বিষয়ে জোর দিতেই হবে পারফরম্যান্স আরও উন্নত করার জন্য।
|
মীরপুরে কষ্টার্জিত জয়
আগামী বছর দেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে চার টেস্টের সিরিজ রয়েছে। আইপিএলের পর থাকছে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল। ফলে বাংলাদেশের বিরুদ্ধেই প্রস্তুতি নেওয়ার দারুণ সুযোগ ছিল ভারতের কাছে। পূর্ণশক্তির দল না নামিয়েও সিরিজ জয় নিশ্চিত হয়েছে, তাও হোয়াইটওয়াশ করে। কিন্তু রোহিতের পরিবর্তে দলের অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পাওয়া লোকেশ রাহুল যে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, দল তার ধারেকাছে পৌঁছতে পারেনি। মীরপুর টেস্ট জেতা গিয়েছে শ্রেয়স-অশ্বিনের লড়াকু পার্টনারশিপে ভর করে। বাংলাদেশ টেস্টে ভারতের বিরুদ্ধে প্রথম জয়ের কাছাকাছিই পৌঁছে গিয়েছিল।
রক্ষণাত্মক কৌশল কেন?
মীরপুর টেস্টে ভারত তো আক্রমণাত্মক হওয়া দূরে থাক, অতিরিক্ত রক্ষণাত্নক হয়ে খেলতে থাকে। বাংলাদেশের স্পিনাররা ভারতের তারকাখচিত ব্যাটিং লাইন আপে কাঁপুনি ধরিয়ে দিয়েছিলেন। কৌশলগত বেশ কিছু ভুলও চোখে পড়েছে। ইংল্যান্ড ক্রিকেটে বাজবল কথাটি এখন জনপ্রিয়। ছোট রানের টার্গেটে দ্রুত পৌঁছে যাচ্ছে ব্রেন্ডন ম্যাকালামের প্রশিক্ষণাধীন ও বেন স্টোকসের নেতৃত্বাধীন থ্রি লায়ন্স। আর ভারত ১৪৫ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে আক্রমণাত্মক খেলতে তো পারেইনি, ৭৪ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে। বাংলাদেশের স্পিনারদের ভারতীয় ব্যাটাররা যেভাবে মাথায় চড়ার সুযোগ দিয়েছেন তা খুশি করতে পারেনি বিশেষজ্ঞদের।
|
রাহুল বেশ চাপে
লোকেশ রাহুল ক্যাপ্টেন হিসেবে সিরিজ জিতলেও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে দলে তাঁর জায়গা হবে কিনা সেটাই বড় প্রশ্ন। অনেক বিশেষজ্ঞই মনে করছেন, রোহিত শর্মা এলে রাহুলের জায়গা পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। মীরপুরে দুই ইনিংসেই রাহুল ফ্রন্টফুটে আউট হয়েছেন। তাছাড়া শুভমান গিল শতরান পেয়েছেন বাংলাদেশে প্রথম টেস্টে, চেতেশ্বর পূজারা ম্যান অব দ্য সিরিজ হয়েছেন। আপাতত টেস্ট দলে জায়গা পাকা করে ফেলেছেন শ্রেয়স আইয়ার। ফলে রাহুলের জন্য কঠিন দিন অপেক্ষা করে আছে। পূজারা ও গিল মেহেদি হাসান মিরাজকে স্টেপ আউট করার চেষ্টায় সফল হননি। ভারতের বর্তমান প্রজন্মের ক্রিকেটারদের মধ্যে স্পিনারদের সামলানোর ক্ষেত্রে দুর্বলতাও প্রকট হচ্ছে বলে অভিমত বিশেষজ্ঞদের। যা দেখে নাথান লিয়ঁদের মুখের হাসি চওড়া হতে পারে।
কিং কোহলির টেস্ট শতরানের খরা
বিরাট কোহলির ব্যাটেও টেস্ট শতরানের খরা চলছে। ২০১৯ সালে ইডেনে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে টেস্টে তিনি শেষবার টেস্ট শতরান পেয়েছিলেন। চলতি বছর টি ২০ ও একদিনের আন্তর্জাতিকে শতরানের খরা কাটলেও টেস্টেররা এই বছরেও কাটল না। বিরাট কোহলি ২২ বলে ১ রান করার মুহূর্তটাও ভুলে যেতে চাইবেন। বিরাটও রক্ষণাত্নক ব্যাটিংয়ের রণকৌশলে আস্থা রেখে সফল হননি।
উইকেট বুঝতে ভুল, সাহসী হতে না পারা
কুলদীপ যাদবকে না খেলানোও ভারতের ভুল। কেন না, মীরপুরের উইকেটে তিন স্পিনার খেলালে সহজ জয় পেতেও পারতো ভারত। বাগে পেয়েও বাংলাদেশকে ফলো অন করাননি রাহুল। বাংলাদেশের মতো দলের বিরুদ্ধেও ফলো অন করানোর সাহস দেখাতে না পারলে পজিটিভ ক্রিকেট খেলার কথা তো স্রেফ কথার কথা হয়েই থেকে যাবে।