সৌরভ-সচিন কীভাবে ভেস্তে দেন বুকিদের পরিকল্পনা? দাউদকে কে বের করেন ভারতের ড্রেসিংরুম থেকে? জানুন অজানা ঘটনা
ভারতীয় ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা ওপেনিং জুটির নাম বললে প্রথমেই মনে আসে সচিন-সৌরভের পার্টনারশিপের কথাই। মাঠে তো বটেই, মাঠের বাইরেও দুজনের বন্ধুত্ব খুব নিবিড়়। ম্যাচ গড়াপেটা অধ্যায়ে বেসামাল ভারতীয় ক্রিকেটকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে তাঁরা দাঁড় করিয়েছেন মজবুত ভিতে। সচিন, সৌরভের বর্ণময় পার্টনারশিপ থেকে মাঠের বাইরের পারফরম্যান্স যেমন অসাধারণ, তেমনই অনেক স্মরণীয় ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন তাঁরা।

শতরানে বুকিদের ওড়ানো
সচিন তেন্ডুলকরের কানে এসেছিল বুকিরা কোনও একটি সিরিজের পরের ম্য়াচ ফিক্স করতে চাইছে। বিষয়টি সচিন তাঁর ওপেনিং পার্টনার সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে জানান। এরপর সচিন ও সৌরভ দুজনেই শতরান হাঁকিয়ে বুকিদের পরিকল্পনায় জল ঢেলে দেন।

সচিনের সুপারিশ
ভারতীয় ক্রিকেটের আকাশে ২০০০ সালে ম্যাচ গড়াপেটার কালো মেঘ। ক্রিকেটারদের ধারেকাছে যেন কোনও বুকি ঘেঁষতে না পারে সেজন্য সক্রিয় হন সচিন তেন্ডুলকর। মহম্মদ আজহারউদ্দিনের সঙ্গে মতানৈক্যের জেরে সচিন নিজেও ক্যাপ্টেন্সি ছেড়ে দেন। ভারতীয় ক্রিকেটের প্রতি সমর্থকদের বিশ্বাস ফেরাতে দরকার ছিল এমন একজন অধিনায়ক যিনি শক্ত হাতে দলকে নেতৃত্ব দিতে পারেন। মেলবোর্নে নামার সময় সতীর্থদের সচিন বুঝিয়েছিলেন কোন কারণে সৌরভই হতে পারেন ভারতের যোগ্যতম অধিনায়ক।

নেতৃত্ব ছাড়তে চান সৌরভ
২০০৫ সালে ভারত তখন পাকিস্তান সফরে। সৌরভকে বোকা বানানোর পরিকল্পনা করেন যুবরাজ সিং, হরভজন সিং ও বীরেন্দ্র শেহওয়াগ। এক অনুষ্ঠানে সেই ঘটনার কথা পরে জানান যুবরাজ। তিনি বলেন, আমরা সৌরভের একটি কাল্পনিক সাক্ষাৎকারের প্রিন্ট আউট বের করেছিলাম। যেখানে সৌরভ তাঁর দলেরই ক্রিকেটারদের সমালোচনা করেছেন। এটা তাঁকে দেখানো হলে সৌরভ বারেবারেই বলতে থাকেন, এমন কোনও সাক্ষাৎকার তিনি দেননি। কথাবার্তা চলাকালীন পরিকল্পনামাফিক হঠাৎই ঘর থেকে বেরিয়ে যান আশিস নেহরা ও হরভজন সিং। পরিস্থিতি সিরিয়াস হয়ে যায়! তখনই সৌরভ বলে দেন, এই মুহূর্ত থেকেই তিনি আর দলকে নেতৃত্ব দেবেন না! এরপর শেহওয়াগ ও যুবরাজ মজা করার কথা বলতেই ব্যাট নিয়ে তাঁদের তাড়া করেছিলেন মহারাজ।

যুবরাজকে সৌরভের প্রস্তাব
তার আগে অবশ্য যুবরাজকে চমকাতে চেয়েছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ভারতীয় দলে যখন কেউ নতুন আসেন তাঁর সঙ্গে নানারকম মজা করে থাকেন সতীর্থরা। আইসিসি ২০০০ নক আউট টুর্নামেন্টে যুবরাজ সিংয়ের একদিনের আন্তর্জাতিক অভিষেকের ঠিক আগের দিনের তেমনই এক ঘটনা। অধিনায়ক সৌরভ যুবিকে বলেন, ওপেন করেগা ক্যায়া? (তুমি কি ওপেন করবে?) সৌরভের প্রশ্ন শুনেই সম্মতি দিয়ে দেন যুবরাজ। সৌরভ ভাবেননি যুবি এমনটা করবেন। এমনকী পরদিন ম্যাচ শুরুর আগে ওপেন করার প্রস্তুতি নিতে যুবরাজ প্যাডও পরতে যান। তখন তাঁকে জানানো হয়, এটা তাঁর সঙ্গে মজা করা হয়েছিল।

দাউদকে কপিলের নির্দেশ
শারজায় খেলা হলে দাউদ ইব্রাহিমকে দেখা যেত টিভির পর্দায়। এমনকী দাউদ নাকি ঢুকে পড়তেন ভারতীয় ড্রেসিংরুমেও! তেমনই ঘটনার কথা একবার জানিয়েছিলেন দিলীপ বেঙ্গসরকার। ১৯৮৬ সালে শারজায় ভারত-পাক ম্যাচ ছিল। ড্রেসিংরুমে ঢুকে দাউদ বলেন, পাকিস্তানকে হারাতে পারলে প্রত্যেক ক্রিকেটারকে গাড়ি উপহার দেওয়া হবে। অধিনায়ক কপিল দেব ক্ষিপ্ত হয়ে দাউদকে ড্রেসিংরুম থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। দাউদকে যেভাবে কপিল বের করে দিয়েছিলেন তাতে তাঁর সাহস দেখে মুগ্ধ হয়ে যান সতীর্থরা।