মহম্মদ শামি টি ২০ বিশ্বকাপে নিজের পারফরম্যান্সে খুশি, ধারাবাহিকতার রহস্যও ফাঁস করলেন
টি ২০ বিশ্বকাপের আগে গত এক বছরে একটিও টি ২০ আন্তর্জাতিক খেলেননি। তবে আইপিএলে গুজরাত টাইটান্সকে চ্যাম্পিয়ন করানোর পিছনে বোলার মহম্মদ শামি ভালোই অবদান রেখেছিলেন। এবারের টি ২০ বিশ্বকাপের দলে তিনি প্রথমে সুযোগ পাননি। জসপ্রীত বুমরাহ ও দীপক চাহারের চোট, আবেশ খানের ছন্দ হারানো শামির কামব্যাক নিশ্চিত করে। তবে তার আগে দেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সিরিজে খেলতে পারেননি করোনা আক্রান্ত হয়ে।
চলতি বিশ্বকাপে শামি
ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা বারবার বলছিলেন অস্ট্রেলিয়ায় যেহেতু টি ২০ বিশ্বকাপ, সেখানে শামির অভিজ্ঞতা ভারতীয় দলের জন্য কার্যকরী ও ইতিবাচক হতে পারে। তা যে স্রেফ কথার কথা নয় শামির পারফরম্যান্স দেখলেই তা বোঝা যাবে। টি ২০ বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতি ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে শেষ ওভারে বল করতে গিয়ে চার রানের বিনিময়ে তিন উইকেট নিয়ে ভারতকে জিতিয়েছিলেন মহম্মদ শামি। চলতি টি ২০ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৪ ওভারে ২৫ রান দিয়ে তুলে নিয়েছিলেন ৩৪ বলে ৫১ রান করা ইফতিখার আহমেদের উইকেট। নেদারল্যান্ডস ম্যাচে ৪ ওভারে ২৭ রান খরচ করে একটি উইকেট নিয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ভারত হারলেও শামি চার ওভারে মাত্র ১৩ রান দিয়ে আউট করেন অধিনায়ক তেম্বা বাভুমাকে। গতকাল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে শামি ৩ ওভার বল করেছেন ২৫ রান খরচ করে নিয়েছেন একটি উইকেট। দশম ওভারের প্রথম বলেই তিনি ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্তকে সাজঘরে পাঠিয়ে বাংলাদেশকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেন।
টিম ম্যানেজমেন্টের বার্তা ও নিবিড় অনুশীলন
ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচের শেষে অ্যাডিলেডে মিক্সড জোনে শামি সাংবাদিকদের বলেন, প্রস্তুতিটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। টিম ম্যানেজমেন্টের তরফে সব সময়ই আমাকে বলা হয়েছে প্রস্তুত থাকার জন্য। দলের যখনই প্রয়োজন পড়বে, তখনই ডাক আসবে। সেটা আমাদের সব সময়ই বলা হয়ে থাকে। আমার সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ভিডিও দেখলেও সকলে দেখতে পাবেন যে, আমি ট্রেনিং চালিয়ে গিয়েছি। কখনও প্র্যাকটিসের বাইরে ছিলাম না। লাল বল থেকে সাদা বলের ফরম্যাটের সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নেওয়া সহজ নয়। তবে এটা নির্ভর করবে দলের সঙ্গে কেউ কতটা যুক্ত, পারস্পরিক সম্পর্ক কতটা নিবিড় তার উপরেও। গত টি ২০ বিশ্বকাপের পর এই প্রথম টি ২০ আন্তর্জাতিক খেলছি। বলের রংয়ের চেয়ে ক্রিকেটারের আত্মবিশ্বাস এবং ধারাবাহিকতাই সবচেয়ে জরুরি। সেইসঙ্গে জরুরি অনুশীলনও। অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েই যে ধারাবাহিকভাবে ভালো বোলিং করতে পারছেন তা স্পষ্ট করে শামি বলেন, আমি সব সময় নিজেকে প্রস্তুত রাখি। যদি ম্যাচে দেখেন আমি সব সময় নতুন বলে বল করি। কিন্তু প্র্যাকটিসে সেমি নিউ বা পুরানো বলে অনুশীলন করি।
ডেথ ওভারে বোলিং
ডেথ ওভারে বল করার ক্ষেত্রে নিজের দক্ষতার উপর আস্থা রাখার উপর জোর দেন শামি। সেইসঙ্গে মাথা ঠাণ্ডা রাখা ও অভিজ্ঞতার বিষয়টি খুব জরুরি বলেও উপলব্ধি তাঁর। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে শেষ ওভার শামিকে না দিয়ে অর্শদীপ সিংকে দিয়ে করান অধিনায়ক রোহিত শর্মা। শামির কথায়, ২০ রান দরকার ছিল বাংলাদেশের। এটা অধিনায়কের সিদ্ধান্ত। অর্শদীপ ভালো ইয়র্কার দিতে পারদর্শী। সে কথা মাথায় রেখেই হয়তো অধিনায়ক তাঁর আত্মবিশ্বাস বাড়াতে চেয়েছেন। দল যেভাবে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে তাতে সতীর্থদের পারফরম্যান্সে খুশি শামি। তাঁর বিশ্বাস ১৮৪ রান যে কোনও উইকেটেই ভালো স্কোর। বৃষ্টির পরও বাংলাদেশের যে রান রেট রেখে রান তুলতে হতো তা সহজ ছিল না বলেই মনে করেন শামি।
সমালোচকদের পাত্তা দেন না
গত টি ২০ বিশ্বকাপে পাকিস্তান ম্যাচের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র সমালোচনা ও কটাক্ষে বিদ্ধ হতে হয়েছিল শামিকে। পাশে দাঁড়িয়ে বার্তা দিয়েছিলেন তৎকালীন অধিনায়ক বিরাট কোহলি। শামি সেই ঘটনার কথা মনে করাতে বলেন, আসল ক্রিকেটভক্তরা কখনও কাউকে হিরো থেকে জিরো বানিয় দেন না। যদি কেউ সত্যিই ক্রিকেটপ্রেমী হন তাহলে তিনি পছন্দের প্লেয়ারকে ভালো সময়ের পাশাপাশি খারাপ সময়েও সমর্থন করবেন।
বিরাট কোহলির উপর রেগে লাল বঞ্চিত বাংলাদেশ, কারণ জানতে দেখুন ভিডিও! কী বলছে আইসিসির নিয়ম?