ঋষভ পন্থের অগ্নিপরীক্ষা বেঙ্গালুরুতে! ভারত অধিনায়কের ব্যাটিংয়ের সমালোচনায় গাভাসকর-স্টেইন
রোহিত শর্মা ও লোকেশ রাহুলের অনুপস্থিতিতে ঋষভ পন্থ ভারতীয় দলের অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পালন করছেন দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে। কিন্তু সাদা বলের ক্রিকেটে লাগাতার ব্যর্থতা ব্যাটার পন্থের উপর চাপ তৈরির পক্ষে যথেষ্ট। গতকাল রাজকোটে নিজেকে দারুণভাবে মেলে ধরে প্রমাণের সুযোগ পেয়েছিলেন পন্থ। কিন্তু অফ স্টাম্পের বাইরের খেলতে গিয়ে যেভাবে উইকেট ছুড়ে দিলেন তাতে সমালোচনায় সরব বিশেষজ্ঞরা।
|
পন্থ ব্যর্থ
গত ফেব্রুয়ারি মাসের পর থেকে সাদা বলের ক্রিকেটে ছন্দে নেই ঋষভ পন্থ। অন্যদিকে, ঈশান কিষাণ ও দীনেশ কার্তিকরা ব্যাট হাতে সফল। ফলে ভারতের টি ২০ বিশ্বকাপের দলে পন্থের জায়গা পাকা এমনটা বলা যাচ্ছে না। চলতি সিরিজে পন্থ চারটি ম্যাচে খেলেছেন সাকুল্যে ৫৪ বল, রান করেছেন ৫৭। গড় ১৪.২৫, স্ট্রাইক রেট ১০৫.৫৫। চারটি চার ও দুটি ছয় মারতে সক্ষম হয়েছেন। আমেদাবাদে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে গত ১১ ফেব্রুয়ারি পন্থ ৫৪ বলে ৫৬ রানের ইনিংস খেলেন। টি ২০ আন্তর্জাতিকে শেষ অর্ধশতরানটি করেন কলকাতায় ১৮ ফেব্রুয়ারি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ২৮ বলে ৫২ রান করে অপরাজিত ছিলেন। আইপিএলেও অর্ধশতরান পাননি পন্থ। চলতি সিরিজে তাঁর রান যথাক্রমে দিল্লিতে ১৬ বলে ২৯, কটকে ৭ বলে ৫, বিশাখাপত্তনমে ৮ বলে ৬। গতকাল ২৩ বলে ১৭ রান করে আউট হন ঋষভ। চারটি ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে অফ স্টাম্পের বাইরের বল শরীরকে অনেক দূরে রেখে তাড়া করতে গিয়ে আউট হয়েছেন।
শট বাছাই নিয়ে প্রশ্ন
সুনীল গাভাসকর পন্থের শট সিলেকশন নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছেন, অফ স্টাম্পের বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে পন্থ যেভাবে বারবার আউট হচ্ছেন তা মোটেই ভালো লক্ষণ নয়। গাভাসকরের কথায়, পন্থ কিছুতেই ভুল থেকে শিক্ষা নিচ্ছেন না। আগের তিনটি আউটের ধরন থেকে শিক্ষা না নেওয়ায় ফের একইভাবে তিনি রাজকোটে আউট হলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা অফ স্টাম্পের বাইরে বল করছেন, পন্থ সেই বলগুলিই খেলতে যাচ্ছেন। জোরে শট মারতেও পারছেন না। অফ স্টাম্পের বাইরের বলগুলি তাঁর একেবারেই এভাবে খেলা উচিত নয়। প্রথম দুটি ক্ষেত্রে তিনি ক্যাচ দিয়েছিলেন ডিপ কভারে। তারপর কভার অঞ্চলে। রাজকোটে শর্ট থার্ডে। পন্থকে অফ স্টাম্পের বাইরে বল করে পরিকল্পনামাফিক আউট করছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
ভালো লক্ষণ নয়
গাভাসকর বলেন, পন্থ চলতি বছর অন্তত ১০ বার এভাবে আউট হয়েছেন। কয়েকটি বল ছেড়ে দিলে সেগুলি ওয়াইডও হতে পারতো। বলের কাছে না পৌঁছে অনেক দূর থেকে শট খেলছেন বলেই এভাবে তিনি আউট হচ্ছেন। এভাবে খেলতে গেলে কখনও জোরালো শট মারা সম্ভব নয়। একই সিরিজে বারবার একইভাবে ভারত অধিনায়কের আউট হওয়া মোটেই ভালো লক্ষণ নয়। পন্থ নিজেও ম্যাচের পর বলেছেন, ব্যাটিংয়ে কিছু জায়গায় খামতি মিটিয়ে উন্নতির প্রয়োজন রয়েছে। যদিও তিনি খুব একটা চিন্তিত নন। ইতিবাচক দিক খুঁজেই উন্নতি করতে চান বলে জানান পন্থ। বেঙ্গালুরুতে নিজের ১০০ শতাংশ দেওয়ার অঙ্গীকারও করেছেন।
পন্থের চেয়ে এগিয়ে কার্তিক
গাভাসকরের কথার রেশ ধরে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন স্পিডস্টার ডেল স্টেইন বলেন, পন্থ চারটি সুযোগ পেলেন এই সিরিজে। কিন্তু একই ভুল করে চলেছেন। ভালো ক্রিকেটাররা ভুল থেকে শিখবেন এটা প্রত্যাশিত। কিন্তু পন্থ পারছেন না। দীনেশ কার্তিক কিন্তু বারেবারেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে দেখাচ্ছেন তিনি একজন অসাধারণ ক্রিকেটার। অনেক ক্রিকেটারের খ্যাতির বিষয়টি রেখে দলে সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু ডিকে যে দারুণ ফর্মে রয়েছেন, সেটা অব্যাহত রাখলে তিনি বিশ্বকাপের দলে সুযোগ পাওয়ার নিরিখে এগিয়ে থাকবেন। কার্তিক চলতি বছর ক্রমাগত উন্নতি করে চলেছেন। ভালো স্কিল রয়েছে। বিভিন্ন ধরনের শট খেলে ম্যাচের পরিস্থিতি অনুয়ায়ী বোলারদের উপর চাপ তৈরিতে কার্তিক নিজের দক্ষতার প্রমাণ দিচ্ছেন।