প্রমাণের অভাবে ২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনাল বিতর্কের তদন্ত বন্ধ করল শ্রীলঙ্কা
প্রমাণের অভাবে ২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনাল বিতর্কের তদন্ত বন্ধ করল শ্রীলঙ্কা
উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে ২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনালের ফিক্সিংয়ের অভিযোগের তদন্ত করে দিল শ্রীলঙ্কা সরকার। শুক্রবার আনুষ্ঠানিক ভাবে এই ঘোষণা দিয়েছে দ্বীপরাষ্ট্রের ক্রীড়া মন্ত্রক। জানিয়েছে, তদন্তে যে প্রাক্তন ক্রিকেটারদের জেরা করা হয়েছে, তাঁদের বক্তব্যে কোনও অসঙ্গতি ধরা পড়েনি। এ ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
তদন্তে ইতি টানল শ্রীলঙ্কা
শ্রীলঙ্কার তিন কিংবদন্তি ক্রিকেটার এবং এক প্রাক্তন ওপেনারকে গত তিন ধরে জেরা করে পুলিশের ইনডিপেন্ডেন্ট স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন ও অ্যান্টি কোরাপশন ইউনিট। প্রত্যেকের বয়ানই স্বচ্ছ বলে মনে হয়েছে তদন্তকারীদের। একই সঙ্গে ২০১১ বিশ্বকাপের ফাইনালে ফিক্সিংয়ের অভিযোগও যে পুরোপুরি ভিত্তিহীন, তাও প্রমাণ হয়েছে এই তদন্তে। তাই তদন্ত বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে শ্রীলঙ্কা সরকার।
কিংবদন্তিদের বয়ান রেকর্ড
২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনালের শতরানকারী তথা শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি ক্রিকেটার মাহেলা জয়াবর্ধনের বয়ান রেকর্ড করেছে পুলিশের ইনডিপেন্ডেন্ট স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন ও অ্যান্টি কোরাপশন ইউনিট। একই বিতর্কে শ্রীলঙ্কার আরও এক কিংবদন্তি তথা প্রাক্তন অধিনায়ক কুমার সাঙ্গাকারার বয়ান ১০ ঘণ্টা ধরে রেকর্ড করেন তদন্তকারীরা। শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন ওপেনার উপুল থারাঙ্গা ও গ্রেট অরবিন্দ ডি সিলভাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে শ্রীলঙ্কা পুলিশের ইনডিপেন্ডেন্ট স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন ও অ্যান্টি কোরাপশন ইউনিট। ওই বিশ্বকাপের সময় লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচক প্রধান ছিলেন অরবিন্দ।
ক্রিকেট প্রেমীদের বিক্ষোভ
২০১১ সালে লড়াই করেও বিশ্বকাপ জিততে না পারা শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের তারকাদের প্রতি সরকারের এই আচরণ মেনে নিতে পারেননি সে দেশের সাধারণ মানুষ। এক বিশেষ মঞ্চের উদ্যোগে ঘটনার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। শ্রীলঙ্কার ক্রীড়া মন্ত্রকের সামনে জমায়েত করেন বহু মানুষ।
মাহিন্দানন্দার অভিযোগ ও অবস্থান বদল
শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন ক্রীড়ামন্ত্রী মাহিন্দানন্দা আলুথাগামাগ অভিযোগ করেছিলেন, ২০১১-র বিশ্বকাপ ফাইনাল ভারতকে বিক্রি করেছিল তাঁর দেশের কিছু ক্রিকেটার ও কর্মকর্তা। তিনি যখন দেশের ক্রীড়ামন্ত্রী ছিলেন, তখনও তিনি একই অভিযোগ এনেছিলেন বলে জানিয়েছিলেন মাহিন্দানন্দা। তাঁর কথায়, ওই বিশ্বকাপ জেতার কথা ছিল শ্রীলঙ্কার। যদিও পরে নিজের অবস্থান থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন আলুথাগামাগ। বলেছিলেন, ২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনালে গড়াপেটার যে অভিযোগ তিনি তুলেছিলেন, তা তাঁর সন্দেহমাত্র।
ফৌজদারি তদন্ত শুরু করে শ্রীলঙ্কা
২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনালে ফিক্সিংয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে ফৌজদারি তদন্ত শুরু করেছিল শ্রীলঙ্কা সরকার। সে দেশের ক্রীড়া মন্ত্রকের সচিব কেডিএস রুওয়ানচন্দ্রের তত্ত্বাবধানে তদন্ত নেমেছিল পুলিশের ইনডিপেন্ডেন্ট স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন ইউনিট। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড তদন্তকারীদের সবরকম সাহায্য করছিল।
টিম ইন্ডিয়ার বিশ্বজয়
মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হওয়া ২০১১-র বিশ্বকাপ ফাইনালে টসে হেরে গিয়েছিলেন টিম ইন্ডিয়ার অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। আগে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৭৪ রান করেছিল শ্রীলঙ্কা। ৮৮ বলে ১০৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছিলেন কিংবদন্তি মাহিলা জয়াবর্ধনে। জবাবে ব্যাট করতে নামা ভারতী দল ৪৮.২ ওভারেই ৪ উইকেট হারিয়ে নির্ধারিত লক্ষ্য পৌঁছে গিয়েছিল। ২৮ বছরের আক্ষেপ দূর হওয়ার পাশাপাশি দেশের মাটিতে ক্রিকেট বিশ্বকাপ জেতা প্রথম রাষ্ট্রের মার্যাদা পেয়েছিল ভারত। ম্যাচে ৯৭ ও ৯১ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছিলেন যথাক্রমে গৌতম গম্ভীর ও মহেন্দ্র সিং ধোনি।
ভাজ্জিকে ৪০তম জন্মদিনের শুভেচ্ছা বিরাটের, বিশেষ বার্তা যুবির, ভাইরাল টুইট