IPL 2021: বিরাট কোহলিকে অধিনায়কত্ব থেকে সরাচ্ছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর? তুঙ্গে জল্পনা
ওয়ার্কলোডের কথা ভেবে একদিনের আন্তর্জাতিক ও টেস্টে অধিনায়ক থাকার ইচ্ছার কথা জানালেও টি ২০ বিশ্বকাপের পরই ভারতের টি ২০ অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘোষণা করেছেন বিরাট কোহলি। ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি বিরাট কোহলি ব্যাটিংয়ে আরও বেশি মনোনিবেশ করতে চান। কিন্তু বিরাটের এই সিদ্ধান্তের পর জল্পনা শুরু হয়েছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরে তাঁর অধিনায়ক থাকার মেয়াদ নিয়ে। ৭ ম্যাচে চেন্নাই সুপার কিংস ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের সংগ্রহে ১০ পয়েন্ট। ধোনিদের পরেই তৃতীয় স্থানে রয়েছে বিরাটের দল। আরসিবি সোমবার আইপিএলের দ্বিতীয়ার্ধের অভিযান শুরু করবে কেকেআরের বিরুদ্ধে।
|
বিরাট জল্পনা
বিরাট কোহলি ভারতের সিনিয়র দলের হয়ে এখনও অবধি কোনও আইসিসি ট্রফি জেতেননি। অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ জিতেছিলেন শুধু। একইভাবে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরকেও তিনি একবারও আইপিএল চ্যাম্পিয়ন করাতে পারেননি। প্রতি বছর তারকাখচিত শক্তিশালী দল থাকা সত্ত্বেও। বিসিসিআইয়ের বিবৃতিতে জানা গিয়েছে, ভারতীয় ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ রূপরেখা চূড়ান্ত করতে ভারতের অধিনায়কত্ব নিয়ে গত ছয় মাস ধরে বোর্ডের কথাবার্তা চলছিল বিরাট, রবি শাস্ত্রী-সহ লিডারশিপ টিমের সঙ্গে। তাতে যদি বিরাট কোহলি টি ২০ বিশ্বকাপের পর ভারতের টি ২০ দলের অধিনায়কত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন নিজের ওয়ার্কলোড কমাতে, তাহলে তিনি কেন আরসিবি-র অধিনায়কত্ব ছাড়লেন না সেই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। জল্পনা চলছে, তাহলে সত্যিই কি নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিরাট, নাকি চাপে পড়ে, সরিয়ে দেওয়ার আঁচ পেয়ে? তিনি যখন দেশের হয়ে টি ২০ অধিনায়কত্ব করতে চান না, তখন কেনই বা আইপিএলের ক্যাপ্টেন্সি আঁকড়ে পড়ে থাকছেন?
শেষ সুযোগ?
এবারের আইপিএলে আরসিবি রয়েছে তিনে। বিরাট যদি এবারও আইপিএল চ্যাম্পিয়ন করাতে না পারেন দলকে তাহলে তিনি কি আইপিএলেও অধিনায়কত্ব ধরে রাখতে পারবেন? সামনের বছর আইপিএলের জন্য জানুয়ারিতে মেগা নিলাম হওয়ার কথা। মনে করা হচ্ছে, বিরাটের নেতৃত্বে আরসিবি এবারও যদি চ্যাম্পিয়ন হতে না পারে তাহলে হয় তিনি নিজেই অধিনায়কত্ব ছাড়বেন, নয়তো তাঁকে সরিয়ে দেওয়াও হতে পারে। তবে ভারতীয় দলের মতো আরসিবিতেও উত্তরসূরী তৈরি না করার রণকৌশলই নিয়েছেন বিরাট। কিন্তু তাতে অসুবিধারও কিছু নেই। এবি ডি ভিলিয়ার্স দায়িত্ব পেতে পারেন। নয়তো এমন কাউকে আরসিবি বেছে নিতে পারেন যিনি বয়সে নবীন এবং বেশ কয়েক বছর দলকে নেতৃত্ব দিতে পারেন।
আইপিএল অধিনায়ক হিসেবে ব্যর্থ
বিরাটের নেতৃত্বে পুনে ওয়ারিয়র্সের বিরুদ্ধে আরসিবি যেমন আইপিএলের সর্বাধিক ২৬৩ রান তুলেছিল তেমনই আবার কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে ৪৯ রানে অল আউটও হয়ে গিয়েছিল। ৬০৭৬ রান করে বিরাট কোহলি আইপিএলে সর্বাধিক রানের মালিক। কিন্তু আরসিবি তিনবার ফাইনালে উঠে হেরেছে, গত বছর-সহ তিনবার বিদায় নিয়েছে প্লে অফ থেকেই। এই পরিস্থিতিতে বিরাট আইপিএলের অধিনায়কত্ব ধরে রেখে ভারতের টি ২০ অধিনায়কত্ব ছাড়ায় অবাক হয়েছেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক সুনীল গাভাসকর। প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক দিলীপ বেঙ্গসরকার বলেছেন, আরসিবি বিরাটকে অনেক সময় দিয়েছে। বিশ্বমানের ব্যাটিং লাইন-আপ, বোলিং লাইন-আপ নিয়েও বিরাট যদি আরসিবিকে কাঙ্ক্ষিত খেতাব জেতাতে না পারেন তাহলে নেতৃত্বে রদবদল দোষের কিছু নয়। ফলে আইপিএল শুরুর আগে সেই চাপ নিয়েই নামতে হবে বিরাটকে। মুখে তিনি যতই বলুন না কেন বাইরের আলোচনা, চর্চা দলের অভ্যন্তরে প্রভাব ফেলে না। অর্থাৎ তিনি এ সব কিছুকে পাত্তা দেন না!
নেতৃত্বে সাফল্যের নিরিখে পিছিয়ে
বিরাট কোহলি আইপিএলে ১৩২টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে জিতেছেন ৬০টি ম্যাচে, হেরেছেন ৬৫টিতে। জেতার শতকরা হারের নিরিখে অনেকের চেয়েই পিছিয়ে বিরাট (৪৮.০৪)। আইপিএলের সফলতম দল মুম্বই ইন্ডিয়ান্সে রোহিত শর্মার সাফল্যের শতকরা হার ৬০.১৬ শতাংশ, মহেন্দ্র সিং ধোনির ৫৯.২৭ শতাংশ, গৌতম গম্ভীরের ৫৫.৪২ শতাংশ। ধোনি আইপিএলে ১৯৫টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন। বিরাট ১৩২টি ম্যাচে আরসিবিকে, গম্ভীর ১২৯টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং রোহিত শর্মা আইপিএলে নেতৃত্ব দিয়েছেন ১২৩টি ম্যাচে। এই চারজনই একশোর বেশি ম্যাচে নিজেদের ফ্র্যাঞ্চাইজির অধিনায়ক হিসেবে খেলেছেন।