বিরাট বিস্ফোরণের পরেও নীরব সৌরভ! বিসিসিআইকে মূল্যবান কোন পরামর্শ দিলেন গাভাসকর?
ভারতীয় দল দক্ষিণ আফ্রিকায় তিনটি টেস্ট ও তিনটি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচের সিরিজ খেলতে কাল রওনা হবে জোহানেসবার্গের উদ্দেশ্যে। তার ঠিক আগের দিন বিরাট কোহলির সঙ্গে বিসিসিআইয়ের সংঘাতের আবহ তৈরি হয়েছে। যদিও বিষয়টিকে বিরাট ও বিসিসিআইয়ের সঙ্গে সংঘাত বলে মানতে নারাজ প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক সুনীল গাভাসকর। বিরাট কোহলির যে বক্তব্যে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্যের সত্যতা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে, তা বোর্ড সভাপতিরই দূর করা উচিত বলে মনে করেন সানি।

সৌরভের বক্তব্য খারিজ বিরাটের
সম্প্রতি কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের কাছে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন, বিরাট কোহলিকে তিনি নিজে টি ২০ অধিনায়কত্ব না ছাড়ার অনুরোধ করলেও তা মানতে চাননি বিরাট। এরপর সাদা বলের ক্রিকেটে দুই অধিনায়ক রাখতে রাজি ছিলেন না নির্বাচকরা। সে কারণেই রোহিতকেই একদিনের অধিনায়কও করা হয়েছে। যদিও বিরাট আজ জানান, তিনি বিসিসিআইকে জানিয়েছিলেন টি ২০ অধিনায়কত্ব ছাড়ার ব্যাপারে। সকলে ভালোভাবেই সেই সিদ্ধান্ত মেনে নেন। কিন্তু কেউ অধিনায়কত্ব ছাড়ার জন্য অনুরোধ করেননি।

সমালোচিত মহারাজ
বিরাটের এই বক্তব্যের পরেই তাঁর সাহসকে কুর্নিশ জানিয়ে অনেক নেটাগরিক মন্তব্য করেন, মহম্মদ শামির পাশে দাঁড়িয়ে যে সাহসী সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন, এদিনেরটি তেমনই এক সাহসী বক্তব্য। বোর্ডের অভ্যন্তরে নোংরা রাজনীতিরও অভিযোগ উঠেছে। কেউ কেউ আরও একধাপ এগিয়ে গিয়ে মিথ্যাচারের অভিযোগে সৌরভের পদত্যাগ দাবি করেছেন। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এদিন সংবাদমাধ্যমকে এড়িয়ে গিয়েছেন। নির্বাচকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান চেতন শর্মারও সাংবাদিক বৈঠক করা নিয়ে জল্পনা ছিল। তিনিও সংবাদমাধ্যমের সামনে আসেননি। বিসিসিআই কোনও প্রেস রিলিজও পাঠায়নি বিরাটের বক্তব্যকে খণ্ডন করতে।

সানির পরামর্শ
এই পরিস্থিতিতে সুনীল গাভাসকর মনে করেন বিরাটের বক্তব্যের সঙ্গে বিসিসিআইকে জড়ানো সঠিক নয়। সৌরভের নাম না করেই তিনি বলেছেন, যদি কেউ দাবি করেন যে তিনি বিরাটকে যথাসময়ে কোনও বার্তা দিয়েছেন, তাহলে সে ব্যাপারে প্রশ্নের উত্তর তাঁর দেওয়াটাই কাম্য। তিনি বিসিসিআইয়ের সভাপতি, ফলে কারও বক্তব্যে কোনও অসঙ্গতি থাকলে তা নিয়ে তাঁকেও প্রশ্ন করা যেতেই পারে। ভারতের টেস্ট দলের অধিনায়ক যে কথা বলেছেন তার প্রেক্ষিতে অসঙ্গতি দূর করার জন্য যোগ্য ব্যক্তিই হলেন বোর্ড সভাপতি। জল্পনা দূর করতে বোঝাপড়ায় স্বচ্ছতা থাকা জরুরি। নির্বাচকমণ্ডলীর প্রধানেরও সিদ্ধান্তের ব্য়াখ্যা দেওয়াটা জরুরি। সব কারণ ব্যাখ্যা করে একটা ভালো মানের প্রেস রিলিজও এ ক্ষেত্রে যথেষ্ট। বিরাটকে যখন নির্বাচকমণ্ডলীর প্রধানই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন, তখন একদিনের অধিনায়কত্ব নিয়ে জলঘোলা চান না গাভাসকর।

কী বলছেন কীর্তি?
আরেক প্রাক্তন ক্রিকেটার ও নির্বাচক কীর্তি আজাদও মনে করেন, গোটা বিষয়টি আরেকটু ভালোভাবে সামলানো যেত। তিনি বলেন, আমরা যখন দল গঠন করতাম তখন তার চূড়ান্ত অনুমোদন দিতেন বোর্ড সভাপতি। পরে সচিব আহ্বায়ক হিসেবে দল জনসমক্ষে জানাতেন। ফলে বোর্ড সভাপতি যখন সমস্তটাই জানেন, তখন কোনও ক্রিকেটারকে সরানোর দায়িত্ব তাঁর প্রতি সম্মান দেখিয়েই আগেভাগে জানিয়ে দিলেই ভালো হতো। সবমিলিয়ে সৌরভ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের উপর ক্রমেই চাপ বাড়ছে। বাড়ছে নীরবতার জন্য।