আইপিএলের কোন বিষয়টি দেখে গর্বিত সৌরভ? লিডারশিপ আর ক্যাপ্টেন্সির ফারাকও ধরিয়ে দিলেন মহারাজ
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় দেশের প্রাক্তন অধিনায়কদের মধ্যে অন্যতম সেরা। আবার বিসিসিআইয়ের সভাপতি হিসেবেও খেলছেন দুরন্ত ইনিংস। তাঁর নেতৃত্ব-দানের দক্ষতা, অধিনায়কত্বের অভিজ্ঞতা কর্পোরেট দুনিয়ার কাছেও অনুপ্রেরণা দেয়। সে কারণেই মুম্বইয়ে ইকনমিক টাইমস ইন্ডিয়া লিডারশিপ কাউন্সিল তাদের সদস্য ও ম্যানেজিং ডিরেক্টরদের হাজির করল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সামনে। টাইমস স্ট্র্যাটেজিক সলিউশনস লিমিটেডের প্রেসিডেন্ট তথা ওয়ার্ল্ডওয়াইড মিডিয়ার সিইও দীপক লাম্বার সঙ্গে বিসিসিআই সভাপতির কথোকপথনে উঠে এলো নানা বিষয়।
আইপিএলের সাফল্যে গর্বিত সৌরভ
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, আমি ক্রিকেটের বিবর্তন দেখেছি। ক্রিকেটে আমার মতো ক্রিকেটাররা শতরান পেয়েছেন, এখন এই ক্রিকেট থেকেই কোটি কোটি অর্থ উপার্জন করা যায়। বিসিসিআইয়ের পাশাপাশি দেশের ক্রিকেটকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন দেশের মানুষ, ক্রিকেটপ্রেমীরা। তাঁদের জন্যই তো বিসিসিআই। ক্রিকেট এখন খুব শক্তিশালী জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে এবং বিবর্তনের প্রক্রিয়া জারি রয়েছে। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের চেয়েও আইপিএলে বেশি রাজস্ব আদায় হচ্ছে। এটা দেখে আমি খুবই খুশি ও গর্বিত। কারণ, আমার পছন্দের খেলাটিই এখন এতটা শক্তিশালী হয়ে উঠেছে।
জীবনের অভিজ্ঞতা থেকেই
সৌরভ আরও বলেন, লিডারশিপ বা নেতৃত্ব-দানের বিষয়ে অনেক কিছুই শিখেছি নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকেই। এ জন্য বই পড়ার প্রয়োজন হয়নি। বছরের পর বছর ধরে দেখেছি ক্রিকেট কীভাবে বদলেছে। দলের মধ্যে একেকজনের মানসিকতা একেকরকম থাকলেও আমি প্রথমেই বুঝতে পেরেছিলাম, দলে প্রতিভার কোনও অভাব নেই। কিন্তু প্রতিভা মেলে ধরার সুযোগ না দেওয়া হলে তা অর্থহীন হয়ে যায়। আমার অধিনায়কত্বে এমন অসাধারণ ক্রিকেটাররা ছিলেন যাঁরা যে কোনও দিন অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পেতেই পারতেন। আমি সেই গ্রেট প্লেয়ারদের সঙ্গে মিলিত হতে পেরে ভাগ্যবান বলেই মনে করি।
সাফল্যের নেপথ্যে
ভারতের অন্যতম সেরা প্রাক্তন অধিনায়ক, যিনি টিম ইন্ডিয়া গড়ে তুলেছিলেন, সেই মহারাজ বলেন, দেশকে নেতৃত্ব দেওয়া আমার কাছে যেমন সম্মানের, তেমনই অনেক কিছু বদলেরও সুযোগ করে দিয়েছে। যাতে দলের প্রত্যেকে সমানভাবে নিজেদের মেলে ধরতে পারেন আমি সেটা নিশ্চিত করার উপরেই জোর দিই। একজনকে যখন বেছে নেওয়া হয়, তখন তাঁর দক্ষতা দেখেই সেটা করা হয়। এবং বেছে নেওয়া হয় সাফল্যলাভের লক্ষ্যেই। দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করা আমার কাছে যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমন দলের বাকিদের কেরিয়ারের ক্ষেত্রেও যে তা একই গুরুত্বপূর্ণ সে ব্যাপারে ওয়াকিবহাল থেকেছি।
ক্যাপ্টেন্সি ও লিডারশিপ
দলের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সৌরভ কী পদক্ষেপ করেছিলেন তা জানতে চাওয়া হয়। সৌরভের উত্তর, নতুন দায়িত্ব পেলে সকলেই নার্ভাস থাকেন। নার্ভাসনেস ভালো। পারফরম্যান্সের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে আত্মবিশ্বাস, সাফল্য ও ব্যর্থতায় তা প্রভাবিত হয়, এটা একটা চক্রের মতো। কেউই সব সময় সফল হবেন বা ব্যর্থ হবেন তা নয়। সাফল্য ব্যর্থতাকে ঢেকে দেয়। ফলে সাফল্য সম্পর্কে সকলকে সচেতন থাকতে হবে, সেটা হলেই তা ব্যর্থতাকে ঢেকে দেবে। সৌরভ এক প্রশ্নের উত্তরে আরও বলেন, আমার কাছে ক্যাপ্টেন্সি হলো মাঠে নেমে নেতৃত্ব দেওয়া। আর লিডারশিপ হলো দল গঠন। ফলে আমি যখনই সচিন, আজহার বা দ্রাবিড়কে নিয়ে কাজ করেছি তখন কখনও তুলনায় যাইনি। তাঁদের নিয়ে একসঙ্গে কাজ করেছি, পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে লিডারশিপের দায়িত্ব ভাগ করে নিয়েই।