সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরাট ঘোষণা! ইডেনে গিয়েই জানালেন ভোটে লড়তে তৈরি
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় সিএবি সভাপতি হতে চলেছেন। এমনটা বলাই যায়। আজ ইডেনে গিয়েছিলেন বিসিসিআই সভাপতি। ১৮ অক্টোবর বোর্ডের সভাপতি হিসেবে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হবেন রজার বিনি। সৌরভ সম্ভবত বুঝে গিয়েছেন তাঁর আইসিসি চেয়ারম্যান হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তাই সিএবি সভাপতি হিসেবেই ক্রিকেট প্রশাসনে থাকতে চান। সৌরভ জানিয়েছেন, লোধা কমিটির সুপারিশ মেনেও আগামী চার বছর তিনি ক্রিকেট প্রশাসনে থাকতে পারবেন। ২০ তারিখের মধ্যে নিজের প্যানেল তৈরি করে ২২ অক্টোবর সিএবি নির্বাচনের মনোনয়ন জমা দেবেন বলেও জানিয়েছেন মহারাজ।
সৌরভের বড় সিদ্ধান্ত
সিএবির বার্ষিক সাধারণ সভা ৩১ অক্টোবর। ২২ অক্টোবর মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। সৌরভ এদিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন, কোনও সমঝোতার পথে তিনি যাবেন। নির্বাচন হলে লড়েই জিতবেন। সৌরভের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, বিসিসিআইয়ের সভাপতি পদ থেকে বিদায় নিশ্চিত হওয়ার পর যেভাবে তাঁর সমালোচনা শুরু হয়েছে কিছু মহল থেকে তাতে স্বাভাবিকভাবেই তিনি অসন্তুষ্ট। আর সেই 'কুৎসা'-রই জবাব দিতে চান নির্বাচনে জিতে।
ভোটে জিতেই সভাপতি হতে প্রস্তুত
সিএবির প্রাক্তন সচিব ও কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে ফেসবুক পোস্টে সৌরভের সমালোচনায় সরব হয়েছিলেন। এরপর সৌরভের আপ্ত সহায়ক তানিয়া ভট্টাচার্য-সহ অনেকেই বিশ্বরূপ দে-র পাল্টা সমালোচনায় সরব হন, রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়া হয়। এর মধ্যেই বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমেও বিশ্বরূপ দে একের পর এক তোপ দাগেন। বিশ্বরূপ দে সিএবিতে বর্তমানে বিরোধী শিবিরে রয়েছেন। সিএবি নির্বাচন হবে ধরে নিয়ে সলতে পাকাতেও শুরু করেছিলেন। সুবীর গঙ্গোপাধ্যায়, গৌতম দাশগুপ্ত, বিশ্ব মজুমদাররা বৈঠকও করেন বিশ্বরূপের উপস্থিতিতে। যদিও বউবাজারে মেট্রো রেলের কাজের জন্য বিভিন্ন বাড়িতে ফাটল ধরায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কলকাতা পুরসভার স্থানীয় কাউন্সিলর বিশ্বরূপ। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, সৌরভ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাহায্য নিয়ে সিএবি সভাপতি হন, বোর্ডের সভাপতি হন অমিত শাহের সাহায্য নিয়ে। যদিও বিশ্বরূপের এই যুক্তিকে মানতে নারাজ সৌরভ বা তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল।
ইলেকশন না সিলেকশন?
এদিন সিএবিতে গিয়ে সৌরভ কথা বলেন বর্তমান সভাপতি অভিষেক ডালমিয়ার সঙ্গে। অভিষেকের সিএবি সভাপতি হিসেবে মেয়াদ ফুরাচ্ছে। তিনি আইপিএলের গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য হয়ে বিসিসিআইয়ে পদার্পণ করছেন। সৌরভও আইনি দিক খতিয়ে দেখে নিশ্চিত হয়েছেন, ২০১৯ সালে বোর্ড সভাপতি হওয়ায় এখন সিএবিতে সভাপতি হতে তাঁর কোনও আইনি অসুবিধা নেই। এখন সিএবিতে নির্বাচন এড়ানো যাবে কিনা সেটাই লাখ টাকার প্রশ্ন। সূত্রের খবর, এখনও রাজ্যের শাসক দল এ ব্যাপারে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেনি। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হস্তক্ষেপ করবেন না, সেটাও কেউ নিশ্চিতভাবে বলতে পারছেন না।
মুখ্যমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করবেন?
তবে সূত্রের খবর, ইলেকশনের বদলে সিলেকশন হতে পারে একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হস্তক্ষেপ করলেই। বিসিসিআইয়ে বিজেপির প্রভাব খাটানো নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস সরব, ফলে সিএবিতে তারা সরাসরি সিএবির প্রশাসনে নাক গলাবে বলে মনে করছে না রাজনৈতিক মহল। তবে বেসরকারিভাবে বার্তা এলেও সেটাও যথেষ্ট। সৌরভকে ঘিরে এমনিতেই এখন সহানুভূতির হাওয়া। ফলে তাঁর সভাপতি হওয়া আটকাবে না। সেক্ষেত্রে সভাপতি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়ের, তিনি কোন পদে আসবেন সেটা নিয়ে চলছে জল্পনা। ভাই সভাপতি, দাদা সচিব এমনটাও বেমানান। যুগ্ম সচিব পদে সৌরভ-ঘনিষ্ঠ দেবব্রত দাস থাকবেন বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। সেক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী ঘনিষ্ঠ সাংবাদিক বিশ্ব মজুমদার সচিব হয়ে স্নেহাশিসের জায়গায় আসতে পারেন। দেবব্রত দাস নিজের জায়গাতেই রইলেন। সহ সভাপতি হতে পারেন অরুণ লাল। তবে সেটা বিরোধী শিবির মানবে কিনা সেটাও প্রশ্ন। ফলে সিএবি নির্বাচন নিয়ে নানা জল্পনা ঘুরপাক খাচ্ছে।