সৌরভ মুখ খুললেন আইপিএলের মিডিয়া স্বত্বের রেকর্ড দর নিয়ে, কেন দিলেন সানি-দ্রাবিড়-কুম্বলের উদাহরণ?
আইপিএলের মিডিয়া স্বত্ব ২০২৩ থেকে ২০২৭ সালের জন্য বিক্রি হয়েছে ৪৮ হাজার কোটি টাকারও বেশিতে, যা সর্বকালীন রেকর্ড। ভারতীয় উপমহাদেশে টেলিভিশন সম্প্রচারের দায়িত্বে ডিজনি-স্টার থাকলেও ডিজিটাল স্বত্ব এবং উপমহাদেশের বাইরে টিভি সম্প্রচারের দায়িত্ব পেয়েছে ভায়াকম ১৮ ও টাইমস ইন্টারনেট। আইপিএল থেকে যে অর্থ আয় হচ্ছে তা দেশের ক্রীড়া পরিকাঠামোর বিকাশে ব্যয়ে জোর দিচ্ছে বিসিসিআই।
ক্রিকেট পরিকাঠামোয় জোর
বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় টাইমস অব ইন্ডিয়াকে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ভারতীয় ক্রিকেটকে আরও শক্তিশালী করে তোলার সুযোগ দিয়েছে আইপিএলের মিডিয়া স্বত্বের এই দর। বিসিসিআই আরও উন্নত মানের পরিকাঠামো গড়ে তুলতে পারবে। এই অর্থের সুফল পৌঁছে দিতে হবে তৃণমূলস্তরে। পুরুষ ও মহিলাদের ক্রিকেটে নানা বয়সভিত্তিক গ্রুপে ক্রিকেটারদের ফি বাড়ানো সম্ভব হবে। মহিলা ক্রিকেটারদের বেতন বাড়ানোর দিকে আমরা নজর দিচ্ছি। ঘরোয়া ক্রিকেটে ক্রিকেটারদের যে ম্যাচ ফি বাড়ানো হয়েছে তার সুফল এই মরশুম থেকেই মিলবে। এতে ভবিষ্যতে আরও অনেক ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা ক্রিকেট খেলায় আসবে, ক্রিকেটার হওয়া এখন ভালো কেরিয়ার অপশনও।
অর্থ শেষ কথা নয়
আইপিএলের মিডিয়া স্বত্বের এমন দর বৃদ্ধিতে অবাক নন সৌরভ। তাঁর কথায় এই প্রক্রিয়া গত দুই বছর ধরে চলছিল। পরিকল্পনামাফিক এগিয়েছে বিসিসিআই। ম্যাচপিছু দরে আইপিএল ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগকে টেক্কা দিয়ে রয়েছে শুধু আমেরিকান পেশাদার ফুটবল লিগ এনএফএলের পরেই। তবে ক্রিকেটারদের কাছে অর্থই যে সব তা মানতে চাননি সৌরভ। তিনি বলেন, অর্থের সঙ্গে পারফরম্যান্সের কোনও যোগ নেই। সুনীল গাভাসকরের সময় থেকে অনিল কুম্বলে, রাহুল দ্রাবিড়রা এখনকার ক্রিকেটারদের মতো এত পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে পারেননি। তবে তাঁদের সকলের মধ্যেই পারফর্ম করার খিদে ছিল। আমি মনে করি না ক্রিকেটাররা শুধু অর্থের জন্য খেলেন। এক্ষেত্রে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করা, নিজেকে ক্রমাগত উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার তাগিদটা উল্লেখযোগ্য। সকলেই বড় আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টগুলি জিততে মুখিয়ে থাকেন।
আইপিএলের উইন্ডো
আইপিএলের জন্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সূচি তৈরিতে আইসিসি আড়াই মাসের উইন্ডো তৈরি করতে চলেছে। তবে আইপিএল আন্তর্জাতিক সূচিতে কোনও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না বলে দাবি করেছেন বিসিসিআই সভাপতি। তিনি বলেন, দ্বিপাক্ষিক সিরিজ থাকবেই। আইপিএল ভারতের টুর্নামেন্ট। দ্বিপাক্ষিক সিরিজ আয়োজন করে বিভিন্ন দেশের ক্রিকেট সংস্থা রাজস্ব আদায় করে থাকে। ফলে অন্য দেশগুলিরও দ্বিপাক্ষিক সিরিজ প্রয়োজন। আগামী দুটি মরশুমের আইপিএলে ৭৪টি ম্যাচ থাকবে। পরবর্তী যে ফিউচার ট্যুরস প্রোগ্রাম বা এফটিপি তৈরি হবে তা সবদিক খেয়াল রেখেই করা হবে।
বিসিসিআইয়ের পরিকল্পনা
এখন প্রায় প্রতি বছরই থাকছে আইসিসি ইভেন্ট। আইপিএল ভারতীয় ক্রিকেটারদের ক্লান্তির কারণ হয়ে উঠবে না বলেই মনে করেন সৌরভ। বোর্ড সভাপতি বলেন, হেড কোচ রাহুল দ্রাবিড় বিষয়টি দেখছেন। অক্টোবরে টি ২০ বিশ্বকাপে কারা খেলবেন তা স্পষ্ট হয়ে যেতে পারে ইংল্যান্ড সফর থেকেই। সৌরভ জানান, রঞ্জি ট্রফির ঐতিহ্য ও গুরুত্ব অব্যাহত রাখতে যে সময় দেশের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের সেরা টুর্নামেন্ট চলবে তখন ভারতীয় এ দলের সফর বা সিরিজ রাখা হবে না। দেশের সেরা ক্রিকেটাররা যাতে রঞ্জি খেলতে পারেন সে কারণেই এই উদ্যোগ। ইমার্জিং ক্রিকেটারদের শিবির থেকে ফাস্ট বোলার, স্পিনারদের পুল তৈরি করা হবে। জানুয়ারিতে মহিলাদের অনূ্র্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ। সেপ্টেম্বর থেকে ভারতে মহিলা অনর্ধ্ব ১৯ দলের আন্তর্জাতিক ম্যাচের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও জানান সৌরভ।