সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের জীবনের হাফ সেঞ্চুরি বড়িশা প্লেয়ার্স কর্নারের ৫০ বছরের দুর্গাপুজোর ভাবনায়
বড়িশা প্লেয়ার্স কর্নার। এক কথায় সকলেই জানেন এটি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের পুজো। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অনেকেই এই পুজো মণ্ডপে যান ঠাকুর দেখার পাশাপাশি মহারাজের এক ঝলক দর্শন পাওয়ার আশায়। তাঁদের কাছে এবার এই পুজো বাড়তি আকর্ষণীয় হতে চলেছে। কেন না, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় আগামী ৮ জুলাই যেমন পঞ্চাশে পদার্পণ করবেন, তেমনই এবার বড়িশা প্লেয়ার কর্নারের পুজোরও পঞ্চাশ বছর। সেটাই মিলেমিশে একাকার হবে পুজো ভাবনায়।
পুজো ভাবনায় মহারাজ
আজ অক্ষয় তৃতীয়ার দিনে ক্লাবের সোশ্যাল মিডিয়ায় পুজোর টিজার প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে লেখা হয়েছে, "পঞ্চাশ বছর ধরে বয়ে আসা এক ধারাবাহিক ইতিহাসের উদ্যাপন হতে চলেছে ২০২২ এর শারদোৎসব। দুবছর ধরে বাংলা তথা গোটা পৃথিবী স্তব্ধ হয়ে যাওয়ার পরেও হার না মানা উদ্দীপনা নিয়ে ২০২২ এ একটু মাথা তুলে দাঁড়ানো। এরই মাঝে বাংলার দুর্গা পুজোর ইউনেস্কো স্বীকৃতি গর্বের প্রাপ্তি। আমাদের পুজোর প্রধান পৃষ্ঠপোষক তথা বাংলার গর্ব সৌরভ গাঙ্গুলীর (মহারাজদা) পঞ্চাশ বছরের জীবন যাত্রায় জড়িয়ে রয়েছে বড়িষা প্লেয়ার্স কর্নার এর দুর্গা পুজো। তাই ২০২২ এ আমাদের চেনা বাউন্ডারির বাইরে বেরিয়ে মহারাজদার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন "মহারাজার ৫০ এ ৫০"। আগামী দিনে পুজোর আরো বিস্তারিত তথ্য নিয়ে আমরা মাঠে নামবো। আপনারা সঙ্গে থাকুন।"
পুজোর প্রধান পৃষ্ঠপোষক
এই টিজার প্রকাশিত হতেই মহারাজের গুণমুগ্ধরা প্রবল উৎসাহিত। বড়িশা প্লেয়ার্স কর্নারের পুজোটি হয় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বাড়ির ঠিক পাশেই। সৌরভ পুজো উদ্বোধন করে থাকেন। সপরিবারে অঞ্জলি দেওয়া থেকে সকলের আবদার মিটিয়ে ঢাকও বাজান। চলে পরিচিত বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে নিখাদ আড্ডা। বিসর্জনের সময় গঙ্গার ঘাটেও যান মহারাজ। অবশ্য পুজোর প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে ব্যস্ততার মধ্যেই যাবতীয় খুঁটিনাটি জেনে সবরকম ব্যবস্থা করে থাকেন। এবার পাড়ার পুজোর ৫০ বছরের সঙ্গে তাঁর জীবনের হাফ সেঞ্চুরিও মিলেমিশে একাকার। প্রধান পৃষ্ঠপোষকের সম্মতি নিয়েই এবার পুজো আয়োজনে নেমে পড়েছেন ক্লাবের সদস্যরা।
বর্ণময় জীবনের সেলিব্রেশন
বড়িশা প্লেয়ার্স কর্নারের পুজোর উদ্যোক্তা তথা সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ভ্রাতৃবধূ জুঁই গঙ্গোপাধ্যায় ওয়ানইন্ডিয়া বাংলাকে বললেন, পাড়ার সকলকে নিয়ে এই পুজো প্রথম শুরু করেছিলেন প্রয়াত চণ্ডী গঙ্গোপাধ্যায়। এখন মহারাজদা আমাদের সবরকম সহায়তা প্রদান করে থাকেন, প্রয়োজনীয় পরামর্শও দেন। এবার পুজোর যেমন পঞ্চাশ বছর, তেমনই দাদাও পঞ্চাশে পদার্পণ করছেন। এটাকেই আমরা সেলিব্রেট করব। ফলে পুজোর থিম দাদা, বিষয়টি তা নয়। তবে তাঁর বর্ণময় জীবনকে নানাভাবে উপস্থাপিত করার পরিকল্পনা হয়েছে। আজ থেকে পুজোর কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেল। কয়েকদিন পরপর আমরা পুজো ভাবনা সংক্রান্ত টিজার প্রকাশ করতে থাকব। ক্লাবের কোর কমিটি পুজোর বিষয়টি পরিচালনা করছে সকলের সঙ্গে আলোচনা করে। নারীশক্তির জয়গানের বার্তা এবারও থাকবে আমাদের পুজোয়। এবারের নিশ্চিতভাবেই বড় আকারেরই হবে। বিশেষ একজনকে ভাবনা রূপায়ণের দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে, তবে সেটা এখনই জানাচ্ছি না।
দাদা ৫০
উল্লেখ্য, সচিন তেন্ডুলকরের পর এবার তাঁর ওপেনিং পার্টনার সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও ৫০-এ পা দিতে চলেছেন। তবে তাঁদের কাছে বয়স নেহাতই সংখ্যামাত্র। ৮ জুলাই জন্মদিন অবশ্য সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় কাটাবেন লন্ডনেই। সেখানে কন্যা সানা উচ্চশিক্ষা লাভ করছেন। ভারতীয় দল সে সময় ইংল্যান্ডেই থাকবে। টেস্টের পর তিনটি করে টি ২০ ও একদিনের আন্তর্জাতিক সিরিজ রয়েছে। সৌরভ নিজে অবশ্য জন্মদিন সেভাবে সেলিব্রেট করেন না। লো প্রোফাইল থাকতেই ভালোবাসেন। যদিও তাঁর ভক্তরা জন্মদিনের কাউন্টডাউন শুরু করে দেন অনেক আগে থেকেই। বেহালায় বাড়ির সামনে ভিড় জমে যায়। দূর দূরান্ত থেকে আসেন ভক্তরা। এবার দাদা লন্ডনে থাকলে সেই চেনা দৃশ্য হয়তো দেখা যাবে না। তবে তা পুষিয়ে যাবে বড়িশা প্লেয়ার্স কর্নারের পুজোয়।