অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারত বনাম বাংলাদেশ, দুই দলের কিছু স্মরণীয় ম্যাচে নজর দেওয়া যাক
অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারত বনাম বাংলাদেশ, দুই দলের কিছু স্মরণীয় ম্যাচে নজর দেওয়া যাক
আগামী রবিবার অর্থাৎ ৯ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ আফ্রিকার পোচেফস্ট্রুমে অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে বাংলাদেশের মুখোমুখি ভারত। এই নিয়ে সপ্তম বারের জন্য টুর্নামেন্টের ফাইনালে পৌঁছল মেন ইন ব্লু। ভারতের সামনে পঞ্চম বারের জন্য ট্রফি জয়ের হাতছানি। অন্যদিকে এই প্রথমবার অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছনো বাংলাদেশ, ভারতকে কতটা বেগ দেবে, সেদিকেই তাকিয়ে ক্রিকেট বিশ্ব।
ম্যাচ ঘিরে উন্মাদনা তুঙ্গে। এর আগে ছোটদের বিশ্বকাপে দুই দলের পাঞ্জা কষাকষি সেভাবে মাহের না হলেও, ভারত ও বাংলাদেশের সিনিয়র দলের লড়াই কিন্তু এই মুহূর্তে টক অফ দ্য ওয়ার্ল্ড। দেখে নেওয়া যাক দুই দলের কিছু স্মরণীয় ম্যাচ।
২০০৭-র বিশ্বকাপ
১) ওয়েস্ট ইন্ডিজে হওয়া ২০০৭ বিশ্বকাপের এক বিভাগে পড়েছিল ভারত ও বাংলাদেশ। ১৭ মার্চ পোর্ট অফ স্পেনে গুরুত্বপূর্ণ লিগ ম্যাচে দুই দল মুখোমুখি হয়েছিল। টসে জিতে আগে ব্যাটিং-র সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ভারত অধিনায়ক রাহুল দ্রাবিড়। সেই ম্যাচে ভয়ানক ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে পড়েছিল টিম ইন্ডিয়া। দেশের প্রাক্তন অধিনায়ক তথা বর্তমান বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (৬৬) ও যুবরাজ সিং (৪৭) ছাড়া কোনও ভারতীয় ব্যাটসম্যানই ক্রিজে বেশিক্ষণ স্থায়ী হননি। ১৯১ রানে শেষ হয়ে গিয়েছিল টিম ইন্ডিয়ার ইনিংস। ম্যাচে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন মাশরাফি মোর্তোজা।
২) জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৪৮.৩ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে নির্ধারিত লক্ষ্যে পৌঁছে গিয়েছিল বাংলাদেশ। ৫১ রান করেছিলেন বাংলাদেশের ওপেনার তামিম ইকবাল। ৫৬ ও ৫৩ রান করেছিলেন যথাক্রমে উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিম ও অল-রাউন্ডার শাকিব-আল-হাসান। সেদিনই আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রথম বার ভারতকে হারিয়েছিল ভারত। সম্ভবত সেটাই শেষ।
২০০৯-র টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ
ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হওয়া দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গ্রুপ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত ও বাংলাদেশ। আগে ব্যাট করে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৮০ রান করেছিল ভারত। জবাবে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত লক্ষ্যের থেকে ২৫ রান দূরেই থেমে গিয়েছিল বাংলাদেশ।
২০১১-র বিশ্বকাপ
২০১১ বিশ্বকাপের গ্রুপ ম্যাচে ঢাকার শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের মুখোমুখি হয়েছিল ভারত। বীরেন্দ্র শেহওয়াগের বিধ্বংসী ১৪০ বলে ১৭৫-র সৌজন্যে বাংলাদেশকে ৫০ ওভারে ৩৭১ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল ভারত। জবাবে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ ম্যাচ ৮৭ রানে হেরে যায়। ম্যাচে অর্ধশতরান করেন বাংলাদেশের ওপেনার তামিম ইকবাল ও অধিনায়ক শাকিব-আল-হাসান।
২০১৪-র টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ
বাংলাদেশে হওয়া ২০১৪-র টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্য়াচে হোম টিমের মুখোমুখি হয়েছিল ভারত। ঢাকায় হওয়া ওই ম্যাচে আগে ব্যাট করেছিল বাংলাদেশ। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৩৮ রান তুলেছিলেন শাকিব আল হাসানরা। ৩ ও ২ উইকেট নিয়েছিলেন ভারতীয় স্পিনার যথাক্রমে অমিত মিশ্র ও রবীচন্দ্রন অশ্বিন। জবাব ব্যাট করতে নেমে ৯ বল বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতে যায় ভারত। ৫৬ রান করেছিলেন ওপেনার রোহিত শর্মা ও ৫৭ রান করেছিলেন বিরাট কোহলি।
২০১৫-র বিশ্বকাপ
অস্ট্রেলিয়ায় হওয়া ২০১৫-র ৫০ ওভারের বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত ও বাংলাদেশ। আগে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩০২ রান তুলেছিল ভারত। ১৩৭ রান করেছিলেন ওপেনার রোহিত শর্মা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৪৫ ওভারে ১৯৩ রানেই শেষ হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের ইনিংস। ভারতের হয়ে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন উমেশ যাদব। ২ উইকেট নিয়েছিলেন মহম্মদ শামি।
২০১৬-র টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ
ভারতে হওয়া ওই বিশ্বকাপের সুপার টেনের অতি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ভারত ও বাংলাদেশ মুখোমুখি হয়েছিল। বেঙ্গালুরুর এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে ২০ ওভারে ১৪৬ রান তুলেছিল ভারত। জবাবে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ ২০ ওভারে ১৪৫ রানে আটকে গিয়েছিল। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ওই ম্যাচ, মাত্র ১ রানে হেরে যান টাইগার্সরা। ওই বছরই বাংলাদেশকে এশিয়া কাপেও হারায় ভারত।
২০১৭-র চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি সেমিফাইনাল
ইংল্যান্ডে হওয়া চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে বাংলাদেশের মুখোমুখি হয়েছিল ভারত। আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটের বিনিময়ে ২৬৪ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৪০.১ ওভারে ৯ উইকেটে ম্যাচ জিতেছিল ভারত। ১২৩ রান করেছিলেন ভারতীয় ওপেনার রোহিত শর্মা। ৯৬ রান করে অপরাজিত ছিলেন টিম ইন্ডিয়ার অধিনায়ক বিরাট কোহলি।
২০১৮-র নিদহাস ট্রফির ফাইনাল
শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত হওয়া চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা মূলক নিদাহাস ট্রফির ফাইনাল ৪ উইকেটে জিতেছিল ভারত। আগে ব্যাট করে ১৬৬ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। জবাব ৬ উইকেট হারিয়ে ১৬৮ রান তোলে ভারত। শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে টিম ইন্ডিয়াকে ম্যাচ জিতিয়েছিলেন দীনেশ কার্তিক।