বিরাটের বিকল্প কি হচ্ছেন শ্রেয়স? তিন নম্বর ব্যাটিং পজিশন নিয়ে কী বলছেন আইয়ার?
বিরাট কোহলিকে একদিনের আন্তর্জাতিকে ব্যাটিং অর্ডারে তিন নম্বর জায়গা থেকে সরানোর মতো কেউ এখনও ভারতীয় ক্রিকেটে নেই বলেই মনে করেন তাঁর ছোটবেলার কোচ রাজকুমার শর্মা। তবে এটাও ঠিক, বিরাট যখন থাকবেন না, তখন ভবিষ্যতে কে যোগ্য বিকল্প হয়ে উঠতে পারেন সেটাও দেখে নিতে চাইছে টিম ম্যানেজমেন্ট। আপাতত শ্রেয়স আইয়ার বাকিদের চেয়ে দৌড়ে কিছুটা এগিয়ে।
|
শ্রেয়স চাইছেন শতরান
শ্রেয়স আইয়ার শর্ট বল খেলার দুর্বলতা মেটানো নেটে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। হেড কোচ রাহুল দ্রাবিড় ও ব্যাটিং কোচ বিক্রম রাঠোরের পরামর্শ নিচ্ছেন। ইংল্যান্ডে একটি টি ২০ আন্তর্জাতিক খেলে ২৮ রান করেছিলেন। একদিনের সিরিজের প্রথম ম্যাচে দলে থেকেও ব্যাট করার সুযোগ পাননি। পরে বিরাট কোহলি, ঋষভ পন্থরা দলে আসায় বাদ পড়েন। ওয়েস্ট ইন্ডিজে অবশ্য সুযোগের সদ্ব্যবহার করছেন শ্রেয়স। প্রথম ম্যাচে ৫৪ রান করেছিলেন। গতকালের ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ ৬৩ রান করেছিলেন। যেভাবে খেলছিলেন তাতে শতরান পেতেও পারতেন। লেগ বিফোর আউট হন আম্পায়ার'স কলে। রিপ্লেতে দেখা গিয়েছে বল লেগ স্টাম্পের বাইরের দিকে লাগত। ফলে নিজের খেলায় খুশি হলেও দুর্ভাগ্যজনক আউটের ধরনে খুশি নন শ্রেয়স। তিনি চাইছেন, পরের ম্যাচে শতরান পেতে।
ব্যাটিং নিয়ে
ভারতের সিরিজ জয়ের পর শ্রেয়স সাংবাদিকদের বলেন, যেভাবে রান করেছি তাতে খুশি। কিন্তু যেভাবে আউট হয়েছি তাতে একেবারেই খুশি নই। দলকে সহজে লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে পারতাম। ভালোভাবে রান তাড়া করলেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে আউট হয়ে ফিরতে হয়েছে। আশা করি, পরের ম্যাচে আরও ভালো খেলে শতরান পাব। আগের ম্যাচেও একটা ভালো ক্যাচে আউট হতে হয়েছিল। আমি এটা বলব না নিজের উইকেট ছুড়ে দিয়েছি। কিন্তু অর্ধশতরানগুলিকে শতরানে পরিণত করা উচিত। যদিও দলের জয়ে অবদান রাখতে পেরে ভালো লাগছে। পরপর দুটি ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরি করতে পেরে আমি ভাগ্যবান। কিন্তু ভালো শুরুর পর শতরান পেতেই হবে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বারবার ভালো শুরুর সুযোগ পাওয়া যায় না। ফলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করার পর তা শতরানে নিয়ে যেতে পারলে সেটা খুবই সহায়ক হবে। দ্বিতীয় একদিনের আন্তর্জাতিকে সেই সুযোগ হাতছাড়া করার হতাশা ধরা পড়েছে শ্রেয়সের গলায়।
সুযোগের সদ্ব্যবহার
২০১৭ সালে একদিনের আন্তর্জাতিকে অভিষেকের পর ২৯টি ম্যাচে ১০৬৪ রান করেছেন শ্রেয়স। ১টি শতরান ও ১১টি অর্ধশতরান। তবু প্রথম পছন্দের দলে তাঁর জায়গা পাকা হয়নি। শ্রেয়সের কথায়, দলে সুযোগ পাওয়ার বিষয়টি আমার হাতে নেই। আমি কঠোর পরিশ্রম করতে পারি এবং যখন সুযোগ আসবে তার পূর্ণ সদ্ব্যবহারে নিজের সেরাটা দিতে পারি। সেটাই করার চেষ্টা করছি ওয়েস্ট ইন্ডিজেও। দেশের হয়ে খেলতে পারার চেয়ে বড় কিছু হতে পারে না। নিজের সেরাটা দিয়ে যখন মাঠ ছাড়ছি তখন কোনও আক্ষেপ থাকছে না। মাঠের বাইরে কঠোর পরিশ্রমের সুফল মেলে। মাঠের বাইরে কী করছি তার প্রতিচ্ছবিই উঠে আসে মাঠের পারফরম্যান্সে। উইকেট ও পরিবেশ-পরিস্থিতি দ্রুত বদলায়। সে কারণেই নিজেকে ফিট রেখে মোটিভেট করাটা জরুরি। ফলে আমার একটাই লক্ষ্য। নিজের কাজ সঠিকভাবে করে যাওয়া এবং যেটা নিয়ন্ত্রণে আছে সেটাকেই নিয়ন্ত্রণে রাখা।
উপভোগ করেন তিন
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে একদিনের আন্তর্জাতিকে টানা তিনটি হাফ সেঞ্চুরি করার পর শ্রেয়স জানিয়েছেন, তিনি তিন নম্বরে ব্যাট করতেই বেশি পছন্দ করেন। তিনি বলেন, এটা খুব মজাদার একটা পজিশন। আমি উপভোগ করি। উইকেট দ্রুত পড়লে কঠিন পরিস্থিতিতে তিনে নেমে নতুন বলের মোকাবিলা করে ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। আবার ওপেনাররা যদি ভালো পার্টনারশিপ গড়ে ফেলেন তখন নেমে সেই মোমেন্টাম বজায় রাখতে হয়। যে রান রেট রয়েছে সেটা বজায় রেখেই খেলতে হয় তখন। উল্লেখ্য, শ্রেয়স একদিনের আন্তর্জাতিকে একমাত্র শতরানটি অবশ্য পেয়েছিলেন চারে ব্যাট করতে নেমে। ২০২০ সালে নিউজিল্যান্ড সফরে হ্যামিলটনে করেন ১০৭ বলে ১০৩। ত্রিনিদাদে পরের শতরান আসে কিনা সেটাই দেখার।
বিরাটের বিকল্প কি হচ্ছেন শ্রেয়স? তিন নম্বর ব্যাটিং পজিশন নিয়ে কী বলছেন আইয়ার?