পূজারার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা সচিনের, বিরাটদের জন্য দিলেন মূল্যবান পরামর্শ
নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের আগে চেতেশ্বর পূজারার প্রশংসা করলেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক সচিন তেন্ডুলকর। তিনি বলেন, যাঁরা তাঁর সমালোচক তাঁদের চেয়ে অনেক ভালো ব্যাটিং করেন পূজারা। ফাইনালের প্রথম একাদশে জাদেজা ও অশ্বিনকেও খেলানোর পক্ষপাতী সচিন।
পূজারা প্রসঙ্গে
ভারতীয় টেস্ট দলে চেতেশ্বর পূজারার অনস্বীকার্য ভূমিকা থাকলেও তাঁর ব্যাটিংয়ের সমালোচনাও করেন অনেকে। তাঁদের পাত্তা দিয়ে প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক সচিন তেন্ডুলকর বলেন, দেশের হয়ে চেতেশ্বর পূজারার যা অবদান রয়েছে তার প্রশংসাই করা উচিত আমাদের। টেস্ট ক্রিকেটে একইরকম স্ট্রাইক রেট সব সময় ধরে রাখা সম্ভব হয় না। সব সময় ভিন্ন ভিন্ন পরিকল্পনা থাকে সেই মতো দল গড়া হয়। অনেকটা হাতের পাঁচটা আঙুলের মতো। প্রত্যেকটা আঙুলেরই কিছু না কিছু ভূমিকা রয়েছে। পূজারা আমাদের দলের এক গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। যেভাবে পূজারা খেলেন তাতে আমি খুশি। প্রতি ইনিংস খুঁটিয়ে না দেখে তাঁর অবদানের কথা সর্বাগ্রে স্বীকার করা দরকার। যাঁরা তাঁর টেকনিক, রোটেশনে খুঁত খুঁজে বের করতে মুখিয়ে থাকেন আমার মতে, পূজারা সর্বোচ্চ পর্যায়ে যত খেলেছেন সমালোচকরা তার ধারেকাছে পৌঁছাতে পারেননি নিজেদের কেরিয়ারে।
টেস্টে আদর্শ পন্থা
সচিন বলেন, এখন ক্রিকেটারদের বিচার করা হয় টি ২০ ক্রিকেটের প্রেক্ষিতে যেখানে একটাই কথা সব বল মারতে হবে। যিনি সেটা পারেন তিনিই ভালো ক্রিকেটার হিসেবে গণ্য হন। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটে সেটা বড় কথা নয়। বড় শট খেলার থেকেও অনেক বেশি কিছু করতে হয় একজন ভালো টেস্ট ক্রিকেটারকে। তবে স্ট্রাইক রেট বাড়ানোর জন্য রবীন্দ্র জাদেজা, ঋষভ পন্থের মতো ক্রিকেটারও রয়েছেন আমাদের দলে। তাঁরা যে কোনও সময় স্ট্রাইক রেট বাড়াতে পারেন। তবে বিপক্ষ বোলারদের ক্লান্ত করতে, সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে রণকৌশলের সফল বাস্তবায়ন ঘটাতে চেতেশ্বরের মতো ক্রিকেটারদেরও দরকার।
ভারতের প্রথম একাদশ
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০০টি শতরানের মালিক সচিন মনে করেন, নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ফাইনালে ভারতের তিন পেসার ও দুই স্পিনার নিয়েই খেলা উচিত। পিচ ও পরিস্থিতি দেখে প্রথম একাদশ নিয়ে টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্তে আস্থা রাখলেও সচিনের যুক্তি, যেহেতু জাদেজা ও অশ্বিন দুজনেই ভালো ব্যাটিংও করেন সেক্ষেত্রে এই কম্বিনেশনেই খেলা উচিত ভারতের। উইকেট যদি চতুর্থ ও পঞ্চম দিনেও স্পিন সহায়ক বলে মনে না হয় তাহলে কী করা উচিত সে প্রশ্নের উত্তরে সচিন বলেন, লেগ স্পিনার শেন ওয়ার্ন ফ্লিপারে অনেক উইকেট পেয়েছেন, যা স্ট্রেট বল। সোজা বলেই অনেক উইকেট রয়েছে মুথাইয়া মুরলীধরনেরও। ফলে স্ট্রেট বলটাও স্পিনারদের একটা কার্যকরী অস্ত্র। অফ স্পিনারদের ক্ষেত্রে যেমন সোজা বলে কট বিহাইন্ড বা স্লিপে ক্য়াচের সম্ভাবনা থাকে, তেমনই বাঁহাতি স্পিনারের আর্ম বলেও বিপক্ষ ব্যাটসম্যান লেগ বিফোর বা বোল্ড হতে পারেন। ইংল্যান্ডের হাওয়াকে কাজে লাগিয়ে স্পিনাররা কার্যকরী হতে পারেন বলে বিশ্বাস সচিনের।
ওপেনারদের জন্য
সচিন তেন্ডুলকরের দাবি, বোলিং শক্তি বা বৈচিত্র্যের নিরিখে ভারত ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যে খুব বেশি তফাত নেই। নিউজিল্যান্ডের বৈচিত্র্যময় পেস আক্রমণ সামলাতে রোহিত শর্মা ও শুভমান গিলকে পরামর্শ দিয়ে সচিন বলেন, খেলার সময় শরীরের কাছে যাতে হাত থাকে সেটা খেয়াল রাখতে হবে। ব্যাক লিফটের সময় শরীরকে কাছে নিয়ে যেতে হবে। তাহলে বল ডিফেন্ড করতে বা তা খেলতে একটু বেশি সময় পাওয়া যাবে। কিন্তু দুই হাত যদি শরীরের থেকে দূরে চলে যায় তাহলে নিয়ন্ত্রণ কমবে, ভারসাম্য বিঘ্নিত হলে ব্যাট ঘোরাতেও সমস্যা হবে।