Sachin 50: সচিনের জন্ম শ্রদ্ধানন্দ ঠাকুরের সাহসী সিদ্ধান্তে! উৎকণ্ঠা কাটিয়ে কীভাবে এড়ানো যায় অঘটন?
সচিন তেন্ডুলকর আজ ৪৯ পূর্ণ করে পা রাখলেন ৫০-এ। জীবনের হাফ সেঞ্চুরিতে মাস্টার ব্লাস্টার ভাসছেন অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা-বার্তায়। সচিনের ক্রিকেট কেরিয়ারে যেমন রমাকান্ত আচরেকরের অবদান সকলেই জানেন, তেমনই সচিনের জন্মের আগে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল ডা. শ্রদ্ধানন্দ ঠাকুরের সাহসী ও সময়োপযোগী এক সিদ্ধান্ত। তা না হলে হয়তো ক্রিকেটের ভগবান আবির্ভূত হওয়ার আগেই ঘটে যেত এক বড় অঘটন।
সচিনের জন্মস্থান
সচিন তেন্ডুলকরের জন্ম দাদরের নির্মল নার্সিং হোমে। সেখানকার রেজিস্টারে লেখা রয়েছে সচিনরা তখন থাকতেন ৩/৭৬, তুলসীদাস তেজপাল চল, পদ্মাবাঈ ঠক্কর রোডে। এটি শিবসেনা ভবনের ঢিল ছোড়া দূরত্বে। পরে অবশ্য সচিনের পরিবার চলে যায় সাহিত্য সহবাসে।
জন্ম বেলা ১টায়
ডা. শ্রদ্ধানন্দ ঠাকুরের নির্মল নার্সিং হোমের রেজিস্টার অনুযায়ী, ১৯৭৩ সালের ২৪ এপ্রিল বেলা ১টায় জন্ম হয়েছিল সচিন তেন্ডুলকরের। ওজন ছিল ২ কেজি ৮৫০ গ্রাম। এই নার্সিংহোমেই জন্মের পর দিন দশেক কেটেছিল মাস্টার ব্লাস্টারের। সচিনের জন্মদিন এলে তাই সকলেরই আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে এই নার্সিং হোম।
উৎকণ্ঠায় ছিল পরিবার
সচিনের জন্মের আগে অবশ্য বেশ উৎকণ্ঠায় ছিল তেন্ডুলকর পরিবার। রজনী তেন্ডুলকর সচিনের জন্ম দেন ৩৫ বছর বয়সে। প্রথম সন্তানের জন্মের আগে বেশ কিছু শারীরিক সমস্যা দেখা দিয়েছিল। তখনকার দিনে প্রায় সবই নর্মাল ডেলিভারি হতো। সচিনের পরিবারও সেটাই চেয়েছিল। কিন্তু এইপিএচ (APH) বা অ্যান্টিপার্টাম হেমারেজ (Antepartum Haemorrhage)-সহ বেশ কিছু জটিলতার কারণে নর্মাল ডেলিভারির জন্য অপেক্ষা করলে ঘটতে পারতো বড় অঘটন।
সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত
সচিন তেন্ডুলকরের বাবা মারাঠি লেখক রমেশ তেন্ডুলকরের বন্ধু ছিলেন অপর মারাঠি লেখক পিএল দেশপাণ্ডে (তিনি বেশ কয়েক বছর কাটিয়েছেন শান্তিনিকেতনেও)। পিএল দেশপাণ্ডে ছিলেন ডা. শ্রদ্ধানন্দ ঠাকুরের নিকটাত্মীয়। শ্রদ্ধানন্দ ঠাকুরের বাসভবনেই সচিনের জন্মের আগে পিএল দেশপাণ্ডে, রমেশ তেন্ডুলকর ও তাঁর বন্ধুরা উৎকণ্ঠা নিয়ে বসে ছিলেন। রজনী তেন্ডুলকর নির্মল নার্সিং হোমে ভর্তি হয়েছিলেন এই চিকিৎসকেরই তত্ত্বাবধানে। সিজারিয়ান সেকশনেই অঘটন যে এড়ানো যাবে, সে ব্যাপারে রমেশ তেন্ডুলকরকে আশ্বস্ত করেন ডা. শ্রদ্ধানন্দ ঠাকুর। সুস্থ পুত্রসন্তানের জন্মের পর অবশেষে আসে স্বস্তির হাওয়া। ডা. শ্রদ্ধানন্দ ঠাকুরের কথায়, সেদিন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, তা যে সঠিক ছিল সেটাই বড় তৃপ্তির। সচিনের সাফল্যে তাই গর্বিত শ্রদ্ধানন্দ ঠাকুরও। ফলে এই বিশিষ্ট চিকিৎসকের সময়োপযোগী সিদ্ধান্তেই আবির্ভূত হন ক্রিকেটের ভগবান।
ক্রিকেটের ভগবান
সচিনকে বলা হয় ক্রিকেটের ভগবান। আশ্চর্যের কথা, এই নির্মল নার্সিং হোম, রমাকান্ত আচরেকরের বাড়ি এবং শিবাজী পার্ক একই সরলরেখায়। বিষয়টি কাকতালীয়, তবে ভাবার মতোও। নির্মল নার্সিং হোমে জন্ম, আচরেকর স্যরের কাছে ক্রিকেটীয় পাঠ, শিবাজী পার্কে ক্রিকেট প্রশিক্ষণ সচিনের উত্থানের সঙ্গেই যে জড়িত। বলা হয়, সিজারিয়ান বেবিদের বিশেষ কিছু দক্ষতা থাকে। মাস্টার ব্লাস্টারের ক্ষেত্রে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।