রোহিত-শুভমানের ঝোড়ো শতরান, আশা জাগিয়েও চারশো পার করতে পারল না ভারত! ডাফি বল হাতে খরচ করলেন ১০০
ইন্দোরে তৃতীয় একদিনের আন্তর্জাতিকে নিউজিল্যান্ডের সামনে ৩৮৬ রানের লক্ষ্যমাত্রা দিল ভারত। রোহিত শর্মা ও শুভমান গিল শতরান করেন। অর্ধশতরান করেন হার্দিক পাণ্ডিয়া।
রোহিত শর্মা ও শুভমান গিলের ঝোড়়ো শতরান। হার্দিক পাণ্ডিয়াও ব্যাট হাতে ঝড় তুলে অর্ধশতরান পেলেন। ২৫ ওভার হওয়ার আগেই ভারত ওপেনিং জুটিতে ভর করে দুশো পেরিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তারপরও চারশো পার করতে পারল না মেন ইন ব্লু। ইন্দোরের হোলকার স্টেডিয়ামে হোয়াইটওয়াশ বাঁচাতে নিউজিল্যান্ডকে তুলতে হবে ৩৮৬ রান।
ওপেনিং জুটিতে দুশো পার
টস জিতে নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক টম লাথাম ভারতকে ব্যাট করতে পাঠান। স্টেডিয়ামের বাউন্ডারি বড় নয়। হাই স্কোরিং ম্যাচ যে হবে তা প্রত্যাশিতই ছিল। রোহিত শর্মা ও শুভমান গিল যেভাবে শুরু করেছিলেন তাতে চারশো কেন, সাড়ে চারশোও অসম্ভব ছিল না। অন্তত ভারতের যা শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন আপ। কিন্তু শেষ অবধি ৫০ ওভারে ভারত তুলেছে ৮ উইকেট হারিয়ে রান। শুভমান গিল ৭৮ বলে ১১২ ও রোহিত শর্মা ৮৫ বলে ১০১ রান করেন। ৩৮ বলে ৫৪ রান করেন হার্দিক পাণ্ডিয়া। ১৭ বলে ২৫ রান করেন শার্দুল ঠাকুর।
তিন বছর পর শতরান রোহিতের
ভারতের ওপেনিং জুটি নিউজিল্যান্ড ভাঙতে সক্ষম হয় ২৭তম ওভারের প্রথম বলে। ততক্ষণে ভারত ২১২ রান তুলে নিয়েছে। রোহিত শর্মা আউট হন প্রথমে। এরপর দলগত ২৩০ রানে ফেরেন শুভমান গিল। রোহিত ৪১ বলে অর্ধশতরান ও ৮৩ বলে শতরান পূর্ণ করেন। তিন বছর পর শতরান পেলেন, ওডিআইয়ে তাঁর শতরানের সংখ্যা হলো ৩০। রিকি পন্টিংয়েরও ৩০টি ওডিআই সেঞ্চুরি রয়েছে। তবে রোহিত অনেক কম ম্যাচ ও ইনিংসে এত সংখ্যক শতরান পেলেন। বিরাট কোহলি ৪৬টি ও সচিন তেন্ডুলকর ৪৯টি ওডিআই শতরান করেছেন। সচিন ও বিরাটের পরই তাই এখন রইলেন হিটম্যান। এদিন মারলেন ৯টি চার ও ৬টি ছয়।
গিলের চলতি সিরিজে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি
চলতি সিরিজের প্রথম ম্যাচে ২০৮ রান করার পর শুভমান গিল রায়পুরে অপরাজিত ছিলেন ৪০ রানে। গিল এদিন নিয়ে চারটি ইনিংসে তিনটিতেই শতরান হাঁকালেন। ১৩টি চার ও ৫টি ছয়ের সাহায্যে ৭৮ বলে ১১২ রান করে গিল সিরিজ সেরার পুরস্কারটিও কার্যত পকেটে পুরে ফেললেন। তবে রোহিত ও গিল যে মেজাজে খেলছিলেন সেই রান তোলার গতি পরের দিকে ধরে রাখতে পারেনি ভারত। নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারানোতেই সমস্যা হলো।
মিডল অর্ডার প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ
৩৪.৩ ওভারে ভারতের তৃতীয় উইকেট পড়ে ২৬৮ রানে। বিরাট কোহলির সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে যান ঈশান কিষাণ। তিনি ১টি করে চার ও ছয় মেরে ২৪ বলে ১৭ রান করেন। ৩৬.২ ওভারে দলগত ২৮৪ রানে সাজঘরে ফেরেন বিরাট কোহলি। তিনটি চার ও একটি ছয়ের সাহায্যে কোহলি করেন ২৭ বলে ৩৬। ৩৮.৪ ওভারে সূর্যকুমার যাদব ৯ বলে ১৪ রান করে আউট হন। ভারতের পঞ্চম উইকেটটি পড়েছিল ২৯৩ রানে। ৪২.২ ওভারে ওয়াশিংটন সুন্দর ১৪ বলে ৯ রান করে আউট হলে ভারতের স্কোর দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ৩১৩।
|
হার্দিকের হাফ সেঞ্চুরি
এরপর শার্দুল ঠাকুর ও হার্দিক পাণ্ডিয়া রান তোলার গতি বাড়ানোর চেষ্টা করেন। তিনটি চার ও একটি ছয়ের সাহায্যে শার্দুল করেন ১৭ বলে ২৫। তিনি ৪৮ ওভারের শেষ বলে আউট হন, ভারতের রান তখন ৩৬৭। ৪৯তম ওভারের চতুর্থ বলে প্যাভিলিয়নে ফেরেন হার্দিক পাণ্ডিয়া, আউট হন দলের ৩৭৯ রানে। তিনটি করে চার ও ছয় মেরে হার্দিক করেন ৩৮ বলে ৫৪। এটি তাঁর ওডিআই কেরিয়ারের নবম হাফ সেঞ্চুরি। ৩ বলে ৩ রান করে কুলদীপ যাদব শেষ বলে রান আউট হন। ৫ বলে ২ রান করে অপরাজিত থাকেন উমরান মালিক।
বল হাতে সেঞ্চুরি!
নিউজিল্যান্ডের সফলতম বোলার ব্লেয়ার টিকনার। তিনি তিনটি উইকেট নেন ৭৬ রানে। হেনরি শিপলির জায়গায় দলে আসা জ্যাকব ডাফি ৩ উইকেট পেলেও ১০ ওভারে ১০০ রান দেন। ৬ ওভারে ৫১ রান দিয়ে একটি উইকেট পেয়েছেন মাইকেল ব্রেসওয়েল। লকি ফার্গুসনের ১টি মেডেন ওভার, তিনি ১০ ওভারে ৫৩ রান দিয়ে কোনও উইকেট পাননি। শেষ ওভারে মাত্র ৩ রান দেন। মিচেল স্যান্টনার ১০ ওভারে ৫৮ ও ড্যারিল মিচেল ৪ ওভারে ৪১ রান দিয়ে উইকেট পাননি। এদিন জিতলেই বিশ্বের ১ নম্বর দল হয়ে যাবে ভারত।