বিরাট ব্যাটিং বিপর্যয়ে লর্ডসে হারের ধারা অব্যাহত ভারতের, টপলির ৬ উইকেটে সিরিজ জিইয়ে রাখল ইংল্যান্ড
লর্ডসে একদিনের আন্তর্জাতিকে ভারতের ১৮ বছরের জয়ের খরা অব্যাহত রইল। রোহিত শর্মার দলের ব্যাটিং ব্যর্থতায় একদিনের সিরিজে সমতা ফেরাল জস বাটলারের দল। সিরিজ নির্ণায়ক তৃতীয় ম্যাচটি রবিবার। ২০০৪ সালে লর্ডসে শেষবার একদিনের আন্তর্জাতিকে ভারত জয়ের মুখ দেখেছিল। যদিও তিন ম্যাচের সেই সিরিজে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ভারত একদিনের সিরিজে পরাস্ত হয়েছিল ১-২ ব্যবধানে, লর্ডসে এড়ানো গিয়েছিল হোয়াইটওয়াশ। আজ সিরিজ জয়ের সুযোগ হাতছাড়া করল মেন ইন ব্লু।
বিরাট ব্যাটিং বিপর্যয়
জয়ের জন্য ২৪৭ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে ভারত ১১.২ ওভারে ৩১ রানে চার উইকেট খুইয়ে বসে। রোহিত শর্মা ১০ বলে ০, শিখর ধাওয়ান ২৬ বলে ৯, ঋষভ পন্থ ৫ বলে ০ ও বিরাট কোহলি ২৫ বলে ১৬ রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। ২০.২ ওভারে ৭৩ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় ভারত। রিস টপলির ডেলিভারি সূর্যকুমার যাদবের ব্যাটে লাগার পর উইকেট ভেঙে দেয়। একটি করে চার ও ছয়ের সাহায্যে সূর্য ২৯ বলে ২৭ রান করেন। ২৮তম ওভারের প্রথম বলে দলগত ১০১ রানের মাথায় হার্দিক পাণ্ডিয়ার উইকেট হারায় ভারত। মঈন আলির বলে ছক্কা মারতে গিয়ে লিয়াম লিভিংস্টোনের হাতে ক্যাচ দেন হার্দিক, তিনি করেন ৪৪ বলে ২৯।
১০০ রানে হার
৩৯ রানের পার্টনারশিপ গড়েন মহম্মদ শামি ও রবীন্দ্র জাদেজা। যদিও পরপর দুই বলে তাঁরা দুজনেই আউট হয়ে যান। ৩৫তম ওভারের শেষ বলে মহম্মদ শামিকে ফেরান রিস টপলি। দুটি চার ও একটি ছয়ের সাহায্যে শামি করেন ২৮ বলে ২৩ রান। এরপর ৩৬তম ওভারে বল করতে এসে প্রথম বলেই রবীন্দ্র জাদেজাকে বোল্ড করে দেন লিভিংস্টোন। একটি করে চার ও ছয়ের সাহায্যে জাড্ডু করেন ৪৪ বলে ২৯। ভারতের সপ্তম ও অষ্টম উইকেটটি পড়ে ১৪০ রানে। ভারতের শেষ দুটি উইকেট যায় রিস টপলির ঝুলিতে। ৩৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে যুজবেন্দ্র চাহালকে বোল্ড করে দেন টপলি। চাহাল ১৩ বল খেলে করেন ৩। ভারতের নবম উইকেট পড়ে ১৪৬ রানে। এরপর এই ওভারের পঞ্চম বলে প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ কট বিহাইন্ড হন। তিনি তিন বল খেলে কোনও রান করতে পারেননি। ভারতীয় ইনিংসের তিনজন ব্যাটার শূন্য রানে আউট হন।
সেরা টপলি
ম্যাচের সেরা রিস টপলি ৯.৫ ওভারে ২টি মেডেন-সহ ২৪ রানে ছয় উইকেট নেন। কেরিয়ারের সেরা বোলিং করে তিনি এদিন তুলে নেন রোহিত, শিখর, সূর্য, শামি, চাহাল ও কৃষ্ণর উইকেট। ডেভিড উইলি ৯ ওভারে ২টি মেডেন-সহ ২৭ রানে একটি উইকেট নেন। ব্রাইডন কার্স, মঈন আলি ও লিয়াম লিভিংস্টোন একটি করে উইকেট নেন। লিভিংস্টোন ২টি ওভার করেন, তার মধ্যেও একটি মেডেন। এর আগে, টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ড ৪৯ ওভারে ২৪৬ রানে অল আউট হয়ে গিয়েছিল। মঈন আলি ৪৭ ও ডেভিড উইলি ৪১ রান করেন। উইলির সহজ ক্যাচ অবশ্য প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ ধরতে পারলে ইংল্যান্ডকে ২০০-র কমেও থামাতে পারত ভারত। যুজবেন্দ্র চাহাল ১০ ওভারে ৪৭ রানের বিনিময়ে চারটি উইকেট নেন। লর্ডসে ভারতীয়দের মধ্যে এটি সেরা বোলিং পারফরম্যান্স। জসপ্রীত বুমরাহ ও হার্দিক পাণ্ডিয়া নেন দুটি করে উইকেট। শামি ও কৃষ্ণ একটি করে উইকেট দখল করেন।
ব্যাটিংয়ের দিকে আঙুল রোহিতের
প্রথম ম্যাচ ভারত জিতেছিল ১০ উইকেটে, আজ ইংল্যান্ড জিতল ১০০ রানে। সিরিজের ফয়সালা হবে রবিবার ম্যানচেস্টারে। রোহিত শর্মা বলেন, আমাদের বোলিং ভালো হয়েছে। মঈন ও উইলির পার্টনারশিপ ইংল্যান্ডকে যে জায়গায় পৌঁছে দিয়েছিল সেই রান তাড়া করে আমাদেরও জেতা উচিত ছিল। আমরা পারিনি। উইলির ক্যাচ কৃষ্ণর হাতছাড়া করা প্রসঙ্গে রোহিত হতাশা গোপন না করে বলেন, ম্যাচ জিততে হলে ওই ধরনের ক্যাচ ধরতে হবে। আমরা বোলিং ভালো করলেও ব্যাট ভালো করতে পারিনি। পিচ ক্রমেই ভালো হয়েছে। তবে আগাগোড়া বোলাররাও সহায়তা পেয়েছেন। আমাদের দলে প্রচুর বোলিং বিকল্প থাকলেও টেল অনেকটাই বড়। ফলে টপ অর্ডার ব্য়াটারদের একজন যত বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেন তত সুবিধাজনক। ম্যানচেস্টারের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে সিরিজ জেতার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী ভারত অধিনায়ক।
বিরাটের পাশে বাবর-বাটলার! কোহলিকে নিয়ে কী বললেন রোহিত শর্মা?