
স্বপ্নের অভিষেকে প্রথম ইনিংসেই ৭ উইকেট মিস্ট্রি স্পিনার আব্রারের, পাকিস্তানের এই ক্রিকেটারকে চিনে নিন
পাকিস্তান সফরে গিয়ে প্রথম টেস্ট জিতে নিয়েছে ইংল্যান্ড। দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম সেশনেও নয়া নজির গড়ল বেন স্টোকসের দল। যদিও ইংল্যান্ডকে বড় রান তুলতে দেয়নি পাকিস্তান। সেটা সম্ভব হয়েছে অভিষেকেই পাকিস্তানের বছর ২৪-এর স্পিনার আব্রার আহমেদ ৭ উইকেট তুলে নেওয়ায়। ইংল্যান্ডের ১০টি উইকেটই তুলে নিয়েছেন পাক স্পিনাররা।

আব্রারের দুরন্ত অভিষেক
প্রথম সেশনের খেলার সময় বাড়ানো হয়েছিল। প্রথম সেশনে ইংল্যান্ড ৩৩ ওভারে তুলেছিল ৫ উইকেটে ১৮০ রান। ১৯০২ সালে জোহানেসবার্গ টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম দিনের প্রথম সেশনে ৪১ ওভারে তুলেছিল ১৭৯ রান। সেই রেকর্ড এদিন ভেঙে দিল ইংল্যান্ড। প্রথম সেশনে পাঁচ উইকেট তুলে নিয়ে অভিষেকে নজির গড়লেন আব্রার। ১৯৫০ সালে অভিষেক টেস্টের প্রথম সেশনে পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের আলফ ভ্যালেন্টাইন। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যানচেস্টারে। তারপর সেই নজির স্পর্শ করলেন আব্রার। অভিষেক টেস্টে প্রথম সেশনে পাঁচ উইকেট নেওয়ার নজির আর রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার চার্লি টার্নার (ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১৮৮৭ সালে, সিডনি টেস্টে লাঞ্চের আগে খেলা হয়নি, চা বিরতির আগে তিনি এই উইকেটগুলি নেন) এবং ইংল্যান্ডের ফ্রেড মার্টিন (১৮৯০ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ওভাল টেস্টে নেন ৫ উইকেট)।

১০ উইকেট নেওয়া হলো না
অনেকেই আশায় ছিলেন আব্রার বুঝি ১০টি উইকেটই তুলে নেবেন অভিষেক টেস্টে। যদিও সেটা হয়নি। ১৯৬৯ সালে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের মহম্মদ নাজির ৯৯ রানে ৭ উইকেট নেন। তারপর ১৯৯৬ সালে কিউয়িদের বিরুদ্ধেই অভিষেক টেস্টে ৬৬ রানে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন মহম্মদ জাহিদ। ইংল্যান্ড মুলতানে টস জিতে ব্যাট করতে নামার পর আব্রার শেষ অবধি ২২ ওভার হাত ঘোরালেন, একটি মেডেন, ১১৪ রান দিয়ে পেলেন ৭ উইকেট।

একাধিক নজির
সাকলিন মুস্তাকের পর এই প্রথম পাকিস্তানের কোনও বোলার প্রতিপক্ষের প্রথম সাত উইকেট তুলে নিলেন। ২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে আবু ধাবি টেস্টে পাকিস্তানের স্পিনাররা ১০ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন। তারপর এদিনই তেমনটা হলো মুলতানে। ২৫০ বলে স্পিনাররা কোনও টেস্টে প্রথম ইনিংসে প্রতিপক্ষের ১০টি উইকেট তুলে নিলেন, এই নজির আগে নেই। ১৯৫২ সালে কানপুরে ভারতকে অল আউট করতে ইংল্যান্ডের স্পিনাররা নিয়েছিলেন ২৬৩ বল। ১৯৮৩ সালে কপিল দেব ফয়সালাবাদে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন ২২০ রান দিয়ে, ইকনমি ছিল ৫.৬৮। আব্রারের ইকনমি ৫.১৮।

মিস্ট্রি স্পিন
আব্রার এমনিতে লেগ ব্রেক বোলার। তবে গুগলি, ক্যারম বল করার ক্ষেত্রেও পারদর্শী। ফিঙ্গারস্পিনেও চমক দেখানোর মতো অস্ত্র মজুত রয়েছে। টাইপ-বল ক্রিকেট খেলেই তাঁর বেড়ে ওঠা। আব্রারের স্পিন বোলিং প্রতিভা নজর কাড়ে করাচির কোচেদের। ২০১৬ সালে তিনি ৫৩ উইকেট নিয়ে জোন থ্রিকে প্রথমবার খেতাব জেতান। রশিদ লতিফের আকাদেমিতে প্রশিক্ষণ নেন কোচ মহম্মদ মাসরুরের তত্ত্বাবধানে।

সতীর্থদের হ্যারি পটার
আব্রারকে হ্যারি পটার বলে ডাকেন তাঁর বন্ধু ও সতীর্থরা। তিনি যে চশমা পরে খেলেন সেটি হ্যারি পটারের চশমার মতো বলে। সবমিলিয়ে পাকিস্তানের এই মিস্ট্রি স্পিনার অভিষেকেই যেভাবে নজর কাড়লেন তাতে তাঁর ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল এবং তাবড় ব্যাটারদের সমস্যায় ফেলতে পারবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
FIFA World Cup 2022: পেলেকে ছুঁতে চলেছেন নেইমার, বিশ্বকাপে নয়া নজির গড়ার মুখে মেসি