ট্রফি আসুক ভারতেই, মেগা ফাইনালের আগে বিরাটদের মূল্যবান পরামর্শ সৌরভের
ট্রফি আসুক ভারতেই, মেগা ফাইনালের আগে বিরাটদের মূল্যবান পরামর্শ সৌরভের
১৪৪ বছরের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে এই প্রথম নির্ধারিত হবে টেস্টের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। কাল থেকে সাউদাম্পটনে শুরু হচ্ছে ভারত ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যে আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল। কে এগিয়ে, কে পিছিয়ে, কী করতে হবে বিরাট কোহলিদের, সে সব নিয়ে একটি জাতীয় সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাতকারে নিজের মতামত জানিয়েছেন বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়।
জোর টক্কর
ভারত ইংল্যান্ডে পা রেখেছিল বিশ্বের এক নম্বর টেস্ট দল হিসেবেই। কিন্তু ইংল্যান্ডকে ১-০ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজ হারিয়ে নিউজিল্যান্ড আইসিসি টেস্ট ব্যৃাঙ্কিংয়ের সিংহাসন পুনর্দখল করেছে। এক নম্বর দুই নম্বর লড়াইয়ে যেটা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তা হলো এই প্রথম এই দুই দেশ নিরপেক্ষ কোনও মাঠে খেলবে। সাউদাম্পটনে নিউজিল্যান্ড কখনও টেস্ট খেলেনি। ভারত দুটির দুটিতেই হেরেছে। এই আবহে মেগা ফাইনাল নিয়ে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, একজন ক্রিকেটারের কাছে এটা বিশাল মুহূর্ত। কারণ এই প্রথম বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল হতে চলেছে। একজন ক্রিকেটারের কাছে টেস্টের চেয়ে বড় কোনও মঞ্চ হতে পারে না নিজেকে প্রমাণের জন্য। বিরাট কোহলি নিঃসন্দেহে গর্বিত ও খুশি রয়েছে দলকে ফাইনালে নিয়ে যেতে পারায়। গত দুই বছর ধরে ভারত সত্যিই ভালো ক্রিকেট খেলছে। বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়ায় সিরিজ জয় ছিল স্পেশ্যাল। আমার বিশ্বাস ভারত ফাইনাল খেলতে নামবে এক অন্য পর্যায়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে।
ট্রফি আসুক ভারতেই
নিউজিল্যান্ড দলের প্রশংসা করে সৌরভ বলেন. নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটও অনেক দিন ধরে আমি দেখছি। গত ৩০-৩৫ বছরে এটিই নিউজিল্যান্ডের সেরা দল। দলে দারুণ ভারসাম্য রয়েছে। সদ্য ইংল্যান্ডকে সিরিজে হারিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই নিউজিল্যান্ডের আত্মবিশ্বাসও তুঙ্গে থাকবে। ফলে নিউজিল্যান্ডকে হারানোর কাজটা ভারতের পক্ষে সহজ হবে না। ক্রিকেটে কিছুই পূর্বানুমান করা যায় না। ভারত সেরা ফর্মের নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হলেও আমি আশা রাখছি, ট্রফি ভারতেই আসবে।
ব্যাটিং নিয়ে
ব্যাটিং বিভাগকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে সৌরভ বলেন, ইংল্যান্ডে ভারতের ব্যাটিংয়ের বিষয়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ট্রেন্টব্রিজে সাড়ে চারশোও করেছি। ফলে বড় রান তুললেই বিপক্ষকে চাপে ফেলা যায়। বড় রান হলে বোলারদেরও সুবিধা হয় সেই রান অনুযায়ী নিজেদের বোলিং করতে। আগে আমরা ইংল্যান্ডে যে কম রান করেছি সেগুলি মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে হবে। ইংল্যান্ডে টেস্টে লড়াই করতে তিনশো-সাড়ে তিনশো রান অত্যন্ত দরকারি। আমার আশা সেটা মাথায় রেখেই ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে ব্যাটিং করবে ভারত।
বড় রান টার্গেট
আগের চেয়ে আরও ভালো ব্যাটিং করার প্রত্যাশা রেখে সৌরভ বলেন, ইংল্যান্ডের কন্ডিশন ভারত, এমনকী অস্ট্রেলিয়ার চেয়েও আলাদা। সারা দিন ধরে ডিউকস বল স্যুইং করবে। সূর্যের দেখা মিললে বল এক ইঞ্চিও মুভ করে না। কিন্তু মেঘলা হলেই পরিস্থিতি বদলে যায়। তা জেমস অ্যান্ডারসন বা স্টুয়ার্ট ব্রডরা দেখিয়ে দিয়েছেন। টিম সাউদি, ট্রেন্ট বোল্ট, কাইল জেমিসনদের সামলে তারপর ভারত ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাঁচ টেস্ট খেলবে। ফলে রান তোলাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
ওপেনারদের ভূমিকা
ওপেনারদের অবদানের কথা মনে করিয়ে সৌরভ বলেছেন, আমাদের সময় অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, পাকিস্তানে আমরা সাফল্য পেয়েছি কারণ বীরেন্দ্র শেহওয়াগ ও আকাশ চোপড়া নতুন বলে দীর্ঘক্ষণ খেলে তাকে পুরানো করে দিতেন। কিন্তু ২ উইকেটে ৩০ রান নিয়ে মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের খেলতে হলে তাঁদের কাজটা কঠিন হয়ে যায়। এই সফরেও ওপেনিং জুটির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। আমি নিশ্চিত বিরাট, শাস্ত্রী-সহ টিম ম্যানেজমেন্টের সকলেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। গত ১৫-২০ বছরে ক্রিকেট বদলেছে। এখন ব্যাটসম্যানরা কম সময়ে রান তোলার গতি বাড়িয়ে ব্যাটিং করেন। তবে তারই মধ্যে রোহিত শর্মা ও শুভমান গিলকে লক্ষ্য রাখতে হবে নতুন বলে দীর্ঘক্ষণ খেলে একে পুরানো করে দিতে। পুরানো বলেও নিউজিল্যান্ডের বোলাররা স্যুইং বা মুভ করাবেন। তা সত্ত্বেও ওপেনিং জুটি অনেকক্ষণ টিকলে ভারতের কাজ তুলনায় সহজ হবে।
ছবি সৌ: বিসিসিআই টুইটার