ভারত বনাম নিউজিল্যান্ড, সুরক্ষিত নন সচিন-সেওয়াগ-অ্যাস্টল! আসন্ন ওডিআই সিরিজে ভাঙতে পারে ছয়টি রেকর্ড
আসন্ন নিউজিল্যান্ড বনাম ভারত ওডিআই সিরিজে ভাঙতে পারে যে ৬টি রেকর্ড।
ক্রিকেট হল সংখ্যার খেলা। কাজেই প্রতি সিরিজে, প্রতি ম্যাচে, এমনকী প্রতি বলেই বদলে যায় রেকর্ড বইয়ের পাতা। আজকের রেকর্ড হয় ভবিষ্যতে কোনও না কোনওদিন ভাঙার জন্য়ই। বর্তমানে ক্রিকেট খেলার পরিমান অত্যন্ত বেড়ে গিয়েছে। এই যেমন অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক একদিনের সিরিজ জয়ের ঢেকুর তুলতে না তুলতেই ভারতকে হুশিয়ারি দিতে শুরু করেছে ব্ল্যাক ক্যাপসরা। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে রেকর্ড ভাঙা গড়ার খেলাও।
অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে একদিনের সিরিজে ভারতীয় দলের জার্সিতে ১০ হাজার রান পূর্ণ করেছিলেন ধোনি। ১০০ উইকেটের মাইলফলকে পৌঁছান ভুবনেশ্বর কুমার। একই রকম ভাবে বুধবার (২৩ জানুয়ারি) থেকে শুরু হতে চলা নিউজিল্যান্ড বনাম ভারত ওডিআই সিরিজেও ভাঙার মুখে দাঁড়িয়ে আছে বেশ কয়েকটি রেকর্ড। নেপিয়ারে সিরিজের প্রথম বল পিচে পড়ার আগে জেনে নেওয়া যাক সেইসব রেকর্ড সম্পর্কে।
রস টেলর
নিউজিল্যান্ডের হয়ে ভারতের বিপক্ষে সবচেয়ে বেশি রান করার রেকর্ড আপাতত রয়েছে নাথান অ্যাস্টল-এর ঝুলিতে। ২৯ ইনিংসে ৪৩.১০ গড়ে তিনি ১২০৭ রান করেছিলেন। ৫টি করে শতরান ও অর্ধশতরানও রয়েছে তাঁর। এ পর আছেন প্রাক্তন কিউই অধিনায়ক স্টিফেন ফ্লেমিং (৩৮ ম্যাচে ৩২.২৯ গড়ে ১০৯৮ রান)। তালিকার তৃতীয় নাম রস টেলর। এখনও পর্যন্ত টেলর ২৫ ইনিংসে ৪০.৮৬ গড়ে ৯৪০ রান করেছেন। অর্থাত, অ্যাস্টলকে ছাপিয়ে যেতে, ৫ ম্যাচের সিরিজে তাঁকে ২৬৮ রান করতে হবে। শেষ ১০ ম্যাচে তিনি ৩টি শতরান ও ৫টি অর্ধশতরান করেছেন। কাজেই এই রেকর্ড এই সিরিজেই তার দখলে যাওয়াটা প্রায় নিশ্চিত।
বিরাট কোহলি
রেকর্ড গড়া বা ভাঙায় এই মুহূর্তে কোহলির জুড়ি নেই। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ শতরানের রেকর্ডটি কিন্তু এই সিরিজে সেওয়াগের হাত থেকে বিরাটের হাতে আসতে পারে। বীরেন্দ্র সেওয়াগ ২৩ ইনিংসে কিউইদের বিরুদ্ধে ৬টি শতরান করেছিলেন। এই ব্যাপারে তাঁর পরেই ৫টি করে শতরান নিয়ে যুগ্মভাবে আছেন, সচিন তেন্ডুলকার (৪১ ইনিংসে) ও বিরাট কোহলি (১৯ ইনিংসে)। কাজেই এই সিরিজে ১টি শতরান করলে সেওয়াগকে ছোঁবেন কোহলি, আর দুটি করলে টপকে যাবেন। তাঁর শতরান করার যা হার, তাতে এই রেকর্ডটিও হয়ে যাওয়াই উচিত।
শিখর ধাওয়ান
আপাতত ১১৭ ইনিংসে ওডিআই-তে ৪৯৯০ রান করেছেন গব্বর। এই সিরিজের প্রথম ম্যাচে আর ১০ রান করতে পারলেই তিনি তৃতীয় দ্রুততম ক্রিকেটার হিসেবে একদিনের ক্রিকেটে ৫ হাজার রানের মাইলফলকে পৌঁছবেন। তাঁর আগে আছেন হাসিম আমলা (১০১ ইনিংস) এবং বিরাট কোহলি ও ভিভ রিচার্ডস (১১৪ ইনিংস)। ১১৮ ইনিংসে এই মাইলফলকে পৌঁছেছিলেন ব্রায়ান লারা। আর ১১৯ ইনিংসে বর্তমান কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন।
মহম্মদ শামি
সাম্প্রতিককালে একদিনের দলে নিয়মিত খেলার সুযোগ পাননি মহম্মদ শামি। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সিরিজের পর একদিনের ম্যাচেও পুরনো ছন্দ ও ধারাবাহিকতায় হল করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। এই সিরিজে ৩ ম্যাচে ৫ উইকেট নিয়ে তিনি মোট ৫৫টি ওডিআই ম্যাচে ৯৯ উইকেটে পৌঁছেছেন। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত (৫৯ ম্য়াচে) ১০০ উইকেট দখল করার রেকর্ড এখন রয়েছে ইরফান পাঠানের দখলে। ফলে পাঠানের রেকর্ড ভাঙার জন্য সিরিজের প্রথম তিন ম্য়াচের মধ্যে শামিকে মাত্র ১টি উইকেট নিতে হবে। এই মুহূর্তে যেই রকম বল করছেন তিনি, তাতে এই রেকর্ড সহজেই তিনি নিজের ঝুলিতে নিতে পারবেন।
রবীন্দ্র জাদেজা
১৪৭টি ওডিআই খেলে জাদেজার রান এই মুহূর্তে ১৯৯০। এরসঙ্গে ১৭১ উইকেটও আছে তাঁর। অর্থাত আর মাত্র ১৮ রান করতে পারলেই এই অলরাউন্ডার একদিনের ক্রিকেটে ২০০০ রান ও ১৫০ উইকেট দখলের ডাবল-এ পৌঁছবেন। কজন ভারতীয়ের এই রেকর্ড আছে? উত্তরে আসবে দুই কিংবদন্তি কপিল দেব ও সচিন তেন্ডুলকারের নাম। কপিল ২৫৩ উইকেট দখলের সঙ্গে ৩৭৮৩ রান করেছিলেন। আর সচিন তাঁর পাহাড় প্রমাণ রানের সঙ্গে একদিনের ক্রিকেটে নিয়েছেন ১৫৪টি উইকেটও।
মহেন্দ্র সিং ধোনি
সব শেষে রয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজের সবচেয়ে আলোচিত ক্রিকেটার মহেন্দ্র সিং ধোনিও। ক্যাঙারুর দেশে তিনি পঞ্চম ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে ১০০০০ রানের মাইলস্টোনে পৌঁছেছেন। এবার কিউই-ল্যান্ডে তাঁর সামনে সুযোগ রয়েছে সচিন তেন্ডুলকারকে টপকে যাওয়ার। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে সচিন ১৮ ম্যাচে ৬৫২ রান করেছেন। যা আপাতত ভারতীয় ব্যাটসম্য়ানদের মধ্যে সর্বোচ্চ। তাঁর পরে আছেন সেওয়াগ (১২ ম্যাচে ৫৯৮ রান)। ধোনি আছেন তেন্ডুলকারের থেকে ১৯৭ রান পিছনে (১২ ম্যাচে ৫৪১ রান)। অস্ট্রেলিয়ায় যে দুরন্ত ফর্মে ধোনিকে দেখা গিয়েছে, তাতে আগামী ৫ ম্যাচে তাঁর সচিনকে টপকে যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই উজ্জ্বল।