প্রথম টি২০-তেই মুখ থুবড়ে পড়ল রোহিত-বাহিনী, কী কী কারণে হারল ভারত - পরাজয়ের ময়নাতদন্ত
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি২০আই সিরিজের প্রথম ম্যাচে ভারতের হেরে যাওয়ার ৫ টি কারণ এখানে আলোচনা করা হল।
৪-১ ফলে ওডিআই সিরিজ জিতে দারুণ আত্মবিশ্বাসী হয়ে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে নেমেছিল রোহিত শর্মার ভারত। অপর দিকে দেশের মাটিতে সম্মান রক্ষাই লক্ষ্য ছিল কিউইদের। ওয়েলিংটনে প্রথম ম্যাচেই মুখ থুবড়ে পড়ল মেন ইন ব্লুজ।
প্রথমে ব্যাট করে টিম সেইফার্টের ৪৩ বলে ৮৪ রানের বিধ্বংসী ইনিংস ও মুনরো ও উইলিয়াসনের দুটি ৩০-এর ঘরের ক্যামিও ইনিংসের দৌলতে নিউজিল্যান্ডের স্কোর ২০০ পার করে যায়। আর কাগেলেইজ্ন ৭ বলে অপরাজিত ২০ করে কিউইদের ২১৯ রানের স্কোরে পৌঁছে দেন। ভারতের প্রত্যেক বোলারই প্রচুর রান দিয়েছেন।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম থেকেই নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারায় কিউইরা। শিখর ধাওয়ান ও বিজয় শঙ্কর ভাল শুরু করেও বড় রান পাননি। সবচেয়ে বড় কথা ভারতের ৭ ব্য়াটসম্যানই এদিন ২ অঙ্কের ঘরের রান পাননি। শেষ পর্যন্ত ১৯.২ ওভারে ১৩৯ রানেই শেষ হয় ভারতের ইনিংস। হারতে হয়েছে রেকর্ড ৮০ রানে।
জিততে জিততে টিম ইন্ডিয়ার আচমকা এই হারে বিস্মিত ক্রিকেট মহল। দেখে নেওয়া যা কী কী ভুল হল ভারতীয় দলের। কেন হারল ভারত -
কিউই ওপেনারদের দুর্ধর্ষ সূচনা
টি২০ ক্রিকেটে ছন্দটা পাওয়া জরুরি। আর এদিন মার্টিন গাপ্টিলের অনুপস্থিতিতে টিম সেইফার্ট ও মুনরো ঠিক প্রত্যআশিত ভঙ্গীতেই সূচনা করেন কিউই ইনিংসের। প্রথম ৫ ওভারেই বিনা উইকেটে তাঁরা ৫৪ রান তুলে দিয়েছিলেন। সাধারণত অত্যন্ত মিতব্যয়ী ভুবনেশ্বর কুমারও তাঁদের রান তোলার গতি আটকাতে পারেননি। ৮.১ ওভারেই এই জুটি ৮৬ রান তুলেছে।
ভারতীয় দল নির্বাচন
এদিন ভারত ৩ অলরাউন্ডার নিয়ে নেমেছিল। দুইজন জোরে বোলার অলরাউন্ডার - হার্দিক ও শঙ্কর। ও এক স্পিনার অলরাউন্ডার ক্রুণাল। খেলানো হয়নি কুলদীপকে। অথচ স্পিনাদের বিরুদ্ধে নিউজিল্যান্ড ব্য়াটসম্যানদের দুর্বলতা একদিনের সিরিজে বারে বারে ধরা পড়েছে। এদিন এক অলরাউমন্ডার কমিয়ে কুলদীপকে খেলালে, তাদের সেই দুর্বলতাকে কাজে লাগানো যেত। তবে টসের মতোই দল নির্বাচনও সম্ভবত বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখেই করা।
খারাপ ফিল্ডিং
বর্তমানে ভারতীয় দল ফিল্ডিংয়ে দারুণ উন্নতি করেছে। এদিন কিন্তু, দলের ফিল্ডিং গড়পড়তা থেকেও খারপ হয়েছে। ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম সংস্করণে গাদা গাদা ক্যাচ ফেলে আর যাই হোক জেতা সম্ভব নয়। ব্ল্যাক ক্যাপসদের পক্ষে সর্বোচ্চ রান করা সেইফার্টকে দুইবার জীবন দিয়েছেন ধোনি ও কার্তিক। কার্তিক এরপর আবার রস টেলরের ক্যাচও মিস করেন। পরে অবশ্য দারুণ ক্যআচ নিয়ে মিচেলকে ফিরিয়ে পাপস্খালন করেন কার্তিক।
বোলারের খারাপ দিন
বর্তমানের ভারতীয় বোলিং আক্রমণকে বিশ্বের সেরা বলে ধরা হচ্ছে। এদিন অবশ্য প্রথম দলের অনেকেই খেলেননি। দিনটাও সব ভারতীয় বোলারদের জন্যই খারাপ গেল। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার কোনও টি২০ ম্যাচে দলের ৫ বোলারই ৪ ওভারে ৩৫-এর উপর করে রামন দিলেন। সবচেয়ে বেশি মার খেলেন হার্দিক (৪ ওভারে ৫১)। এমনকী ভুবনেশ্বর কুমার তাঁর কেরিয়ারে সবচেয়ে বেশি রান (৪৭) দিলেন বুধবারই। রোহিত শর্মা হাতে বিজয় শঙ্করের বিকল্প থাকলেও বোলিং-এ তাঁকে কাজে লাগানো হয়নি।
টপ অর্ডারের ব্যর্থতা
সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ভারতের ব্যাটিং টপ অর্ডারের উপর কতটা নির্ভরশীল, তা আরও একবার প্রমাণ হহয়ে গেল এই ম্যাচে। চেজমাস্টার বিরাট ছিলেন না। রোহিতও মাত্র ১ করেই আউট হয়ে যান। এরপর ৩ নম্বরে এদিন পাটানো হয়েছিল বিজয় শঙ্করকে। শঙ্কর কিন্তু দারুণ ব্যাট করছিলেন। অপর্রান্তে শিখরও ছিলেন জমাট। কিন্তু তাঁরা দুজনেই একপ্রকার উইকেট ছুঁড়ে দেন। ২২০ রান তাড়া করতে গেলে কিন্তু টপ অর্ডারকে একটা শক্ত ভিত তৈরি করে দিতে হত।