ICC WTC Final: বন্ধু বিরাটকে টেক্কা দিয়ে টেস্টে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন কেনের নিউজিল্যান্ড
৪৩ ওভার ১০৬ রানে ৮ উইকেট। সাউদাম্পটনে আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের রিজার্ভ ডে-তে এভাবেই নিউজিল্যান্ডের নিয়ন্ত্রিত পেস অ্যাটাকের সামনে আত্মসমর্পণ ভারতের। এরপর চা বিরতির আগে ৮ ওভার খেলে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচের শেষ ঘণ্টায় ঐতিহাসিক জয় ছিনিয়ে নিল নিউজিল্যান্ড। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে একমাত্র নিউজিল্যান্ডের কাছেই হেরেছিল ভারত। কিউয়িদের কাছে টেস্ট হারের হ্যাটট্রিক স্বপ্নভঙ্গ করল বিরাট কোহলিদের। অধিনায়কোচিত অর্ধশতরান করে অপরাজিত থেকে দলকে টেস্টে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করলেন কেন উইলিয়ামসন। এই নিয়ে দ্বিতীয় কোনও আইসিসি ইভেন্টে চ্যাম্পিয়ন হল নিউজিল্যান্ড। দুবারই ভারতকে হারিয়ে।
অশ্বিনের বলে আম্পায়ার লেগ বিফোর দিলে রিভিউ নিয়ে রক্ষা পান কেন উইলিয়ামসন। শেষের দিকেও জীবন পেলেন। স্লিপে চেতেশ্বর পূজারা জসপ্রীত বুমরাহ-র বলে ক্যাচ ফেলায় জীবন পান রস টেলরও। জয়ের জন্য ১৩৯ রান দরকার ছিল। ৪৪ রানের মধ্যে দুই ওপেনারকে প্যাভিলিয়নে পাঠান রবিচন্দ্রন অশ্বিন। এরপর মাথা ঠাণ্ডা রেখে নিউজিল্যান্ডের দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানই শেষে পৌঁছে দিলেন অভীষ্ট লক্ষ্যে। আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে কিউয়িদের হয়ে সর্বাধিক রান কেনেরই। ফাইনালে দুই ইনিংসেই খেললেন অধিনায়কোচিত ইনিংস।
নাইরোবিতে ২০০০ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ভারতকে হারিয়ে প্রথম কোনও আইসিসি ইভেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল নিউজিল্যান্ড। সেই ম্যাচে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ১১৭ রান করলেও ক্রিস কেয়ার্নসের অপরাজিত ১০২ রানের সুবাদে ২ বল বাকি থাকতে চার উইকেটে জয় পেয়েছিল কিউয়িরা। তারপর বছরের পর বছর আন্ডারডগ তকমা নিয়েই খেলতে হয়েছে কিউয়িদের। ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে ভারতকে হারিয়ে কেন উইলিয়ামসনের দল ফাইনালে উঠলেও চ্যাম্পিয়ন হতে না পারার যন্ত্রণায় বিদ্ধ হতে হয়েছিল। ইংল্যান্ডের মাঠেই শাপমুক্তি ঘটল। বন্ধু বিরাট কোহলির ভারতকে হারিয়ে প্রথম আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে চ্যাম্পিয়ন। ২০০৮ সালে অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে কেন উইলিয়ামসনের নিউজিল্যান্ডকে ৯ বল বাকি থাকতে ৩ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে উঠে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বিরাট কোহলির ভারত। তবে বিরাট কোহলি অধিনায়ক হিসেবে আইসিসি বিশ্বকাপ বা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিততে পারেননি। আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে বিরাটকে তাই ছাপিয়ে গেলেন কেন, এমনকী বিরাটের তুলনায় অনেক বেশি দায়িত্বশীল ব্যাটিং করেও।
দেশের সফলতম টেস্ট অধিনায়ক হওয়ার দিকেও আরও এক ধাপ এগোলেন কেন উইলিয়ামসন। তাঁর নেতৃত্বে ২০১৬ সাল থেকে ৩৭টি টেস্টে এই নিয়ে ২২তম জয় পেল নিউজিল্যান্ড। কেনের অধিনায়কত্বে ড্র হয়েছে সাতটি টেস্ট, কিউয়িরা হেরেছে ৮টিতে। স্টিফেন ফ্লেমিংয়ের নেতৃত্বে নিউজিল্যান্ড ১৯৯৭ সাল থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে খেলেছে ৮০টি টেস্ট, জয় ২৮টিতে, হেরেছে ২৭টিতে, ২৫টি ড্র। বিজে ওয়াটলিংয়ের অবসর মুহূর্ত সাক্ষী থাকল স্মরণীয় জয়ের।