এলিসের হ্যাটট্রিকেও রক্ষা নেই অস্ট্রেলিয়ার, বাংলাদেশের সিরিজ জয়ে 'বাংলাওয়াশ'-এর শঙ্কা
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দেশের মাটিতে টি ২০-তে ঐতিহাসিক সিরিজ জয় নিশ্চিত করল বাংলাদেশ। এবার অজিদের ৫-০ ব্য়বধানে হারিয়ে 'বাংলাওয়াশ'-ই টার্গেট মাহমুদুল্লাহ-র দলের। একঝাঁক তারকা না থাকলেও টি ২০ বিশ্বকাপের আগে অস্ট্রেলিয়ার এই বিপর্যয় খুবই চিন্তাই রাখবে অ্যারন ফিঞ্চদের। আজ ঢাকার শের-এ-বাংলা স্টেডিয়ামে লো স্কোরিং ম্যাচে জেতা ম্যাচ মাঠে ফেলে এল অজিরা।
|
এলিসের হ্যাটট্রিক
প্রথম দুটি টি ২০ ম্যাচ বাংলাদেশ জিতে থাকায় আজ ডু-অর-ডাই ম্যাচ ছিল ম্যাথু ওয়েডের দলের কাছে। বাংলাদেশ টস জিতে ব্যাট করতে নেমে তিন রানের মধ্যেই দুই উইকেট হারায় এরপর ধস সামাল দেন অভিজ্ঞ শাকিব আল হাসান ও মাহমুদুল্লাহ। যদিও শেষ ওভারে অভিষেক ম্যাচেই কামাল দেখান পেসার নাথান এলিস। ২০তম ওভারের শেষ তিনটি বলে মাহমুদুল্লাহ, মুস্তাফিজুর রহমান ও মেহদি হাসানকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিক সেরে ফেলেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার পুরুষ দলের হয়ে ব্রেট লি ও অ্যাস্টন অ্যাগারের পর তিনিই তৃতীয় ক্রিকেটার যিনি টি ২০ আন্তর্জাতিকে হ্যাটট্রিক পেলেন।
|
মাহমুদুল্লাহ-শাকিব জুটিতে লড়াইয়ের রান
বাংলাদেশ নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে তোলে ১২৭ রান। চারটি চারের সাহায্যে ৫৩ বলে ৫২ রান করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ। ১৭ বলে ২৬ করেন শাকিব। সাতজন বোলার ব্যবহার করেন অজি অধিনায়ক ওয়েড। এলিস চার ওভারে ৩৪ রান দিয়ে নেন তিনটি উইকেট। জোশ হ্যাজলউড ১৬ রানে দুটি এবং অ্যাডাম জাম্পা ২৪ রানের বিনিময়ে দুটি করে উইকেট দখল করেন।
|
অস্ট্রেলিয়ার হারের হ্যাটট্রিক
জবাবে খেলতে নেমে দলের আট রানের মাথায় ওয়েড এক রান করে নাসুম আহমেদের শিকার হন। তবে বাংলাদেশের স্পিন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করে দলকে টার্গেটের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন বেন ম্যাকডারমট ও মিচেল মার্শ। ১৩.২ ওভারে ৭১ রানের মাথায় অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় উইকেট পড়ে। ৪১ বলে ৩৫ করে শাকিব আল হাসানের বলে বোল্ড হন ম্যাকডারমট। স্কোরবোর্ডে দলের আর তিন রান যোগ হতে ফেরেন মোজেস হেনরিকেস। শরিফুল ইসলামের শিকার হওয়ার আগে তিনি ৩ বলে ২ রান করেন। স্পিন চ্যালেঞ্জ কোনওক্রমে সামলাতে পারলেও মুস্তাফিজুর রহমানই ম্যাচে ফারাক গড়ে দেন। তাঁকে সামলাতে বেশ অস্বস্তিতে পড়ে অজিরা। ১৭.১ ওভারে মার্শ আউট হন। ৪৭ বলে তিনি ৫১ রান করে শরিফুল ইসলামের দ্বিতীয় শিকার হন। শেষ দুই ওভারে জিততে অজিদের দরকার ছিল ২২ রান। হাতে ৬ উইকেট। সেখান থেকে অস্ট্রেলিয়া ১০ রানে ম্যাচ হারল ১৯তম ওভারে মুস্তাফিজুরের অনবদ্য বোলিংয়ে। এই ওভারে তিনি মাত্র এক রান দিতে, শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার হয়ে পড়ে ২১ রান। যা আর তুলতে পারেনি অজিরা। ১৫ বলে ২০ করেন অ্যালেক্স ক্যারি, ১০ বলে ৭ রানে অপরাজিত থাকেন ড্যান ক্রিশ্চিয়ান। চার ওভারে ১৫টি ডট বল-সহ মুস্তাফিজুর রান খরচ করেন মাত্র ৯।
|
ঐতিহাসিক সিরিজ জয়
ম্যাচের সেরা হয়েছেন মাহমুদুল্লাহ, যদিও অনেকেই মনে করেন মুস্তাফিজই সেরার পুরস্কার পেতে পারতেন। মুস্তাফিজুরের প্রশংসার পাশাপাশি বাংলাদেশের অধিনায়ক বলেন, এটা ১৫০ ওঠার মতো উইকেট না থাকায় আমি আর শাকিব ঠিক করেছিলাম দুজনের কেউ ১৬-১৭ ওভার অবধি টিকব। সেটা হয়েছে। তাছাড়া আমাদের বোলিং ভালো হয়েছে। জিম্বাবোয়ে সফরের পর আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে যে রণকৌশল ঠিক করেছিলাম তা হওয়ায় ভালো লাগছে। আমাদের দল যথেষ্ট ব্যালান্সড, এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। অজি অধিনায়ক ওয়েড বলেন, প্রতি ম্যাচেই বোলাররা খুব ভালো বোলিং করছেন। তবে বিপক্ষকে ১২০-১৩০ রানে আটকে রেখেও ব্যাটিংয়ে যে আমরা জয় নিশ্চিত করতে পারছি না তা হতাশাজনক। এদিনই সহজ জয় হাতছাড়া হল। এই উইকেটে প্রয়োজনীয় রান রেট ৬-৭ হলেই চ্যালেঞ্জিং, ৮-এর উপর উঠে গেলে কিছুই করার থাকছে না। টি ২০ বিশ্বকাপের আগে এলিস দলের একজন সম্পদ হতে পারেন বলে আশাবাদী ওয়েড।
(ছবি- বাংলাদেশ ক্রিকেট)