করোনায় স্তব্ধ ক্রিকেট, তাও নেটে পুত্র সহ মুথাইয়া মুরলীধরন, কিন্তু কেন!
করোনায় স্তব্ধ ক্রিকেট, তাও নেটে পুত্র সহ মুথাইয়া মুরলীধরন, কিন্তু কেন!
করোনা ভাইরাসের ভয়াবহ প্রভাবে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে বিশ্ব। অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে আইপিএল। পিছিয়ে কিংবা বাতিল করে দেওয়া হয়েছে বিশ্বের অন্যান্য ক্রীড়া প্রতিযোগিতাও। সরকারি নির্দেশ মেনে এই দীর্ঘ সময়ে ঘরে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন ক্রিকেটাররা। তারই মাঝে শ্রীলঙ্কার লেজেন্ড মুথাইয়া মুরলীধরনকে দেখা গেল পুত্রের সঙ্গে নেটে বল করতে। আঁতকে ওঠার মতো খবর হলেও ঘটনায় রয়েছে উলোটপুরাণ। জেনে নিন পুরো বিষয়টি।
কুণাল ঘোষ
সারদা মামলায় ২০১৩ সালের ২৩ নভেম্বর ৪২০ (প্রতারণা), ৪০৬ (অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ) এবং ১২০-বি (ষড়যন্ত্র) ধারায় অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় কুণাল ঘোষকে। তার আগেই অবশ্য ২৮ সেপ্টেম্বর দলে বিরুদ্ধে কথা বলায় এবং দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেস থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। সাসপেন্ড হওয়া তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ কুণাল ঘোষকে গ্রেফতার করা হয়।
বিধাননগর কমিশনারেটের তরফে জানানো হয়েছিল সারদা কাণ্ডে কর্ণধার সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে কুণাল ঘোষও সমানভাবে যড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন। গ্রেফতারের পরও বারবার দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের শীর্ষনেতা মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করতে থাকেন কুণাল।
অবশেষে ৩৪ মাস জেলে থাকার পর অবশেষে গত ৫ অক্টোবর শর্তসাপেক্ষ জামিনে জেল থেকে বের হন কুণাল।
করোনা ভাইরাসের প্রভাব
বিশ্বব্যাপী ২৪ লক্ষেরও বেশি মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ১ লক্ষ ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষের। ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে ১৭ হাজার পেরিয়ে গিয়েছে। মৃত্যু হয়েছে সাড়ে পাঁচশো জনের। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৩০০। মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। পরিস্থিতির সঙ্গে মোকাবিলায় দুই দেশেই লকডাউন লাগু করেছে সরকার।
রজত মজুমদার
প্রাক্তন পুলিশ কর্তা তথা তৃণমূল নেতা রজত মজুমদারকে ২০১৪ সালের ৯ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার করা হয়। কুণাল ঘোষকে যখন গ্রেফতার করা হয়েছিল তখন তিনি দল থেকে বহিষ্কৃত ছিলেন। তাই সেদিক থেকে বলতে গেলে রজত মজুমদারই প্রথম তৃণমূল নেতা যাকে সারদা কাণ্ডে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
রজত মজুমদারকে জেরা করার সময় তার কথায় প্রচুর অসঙ্গতি পেয়েছিল তদন্তকারীরা। এরপরই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এই ঘটনায় বেশ খানিকটা অস্বস্তিতে পড়েছিল দল। সমস্যা ঝাড়তে দলের তরফে দাবি করা হয়েছিল রজত দলের নেতা নয়, সহযোগী। তাতে অবশ্য খুব লাভ হয়নি।
সিবিআই যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ জমা দিতে না পারায় ৫ মাস পর রজতবাবুর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে আদালত।
অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত আইপিএল
ঠিক ছিল, চলতি বছরের ২৯ মার্চ থেকে শুরু হবে আইপিএল। করোনা ভাইরাসের জেরে তা পিছিয়ে ১৫ এপ্রিল থেকে শুরু করার কথা জানিয়েছিল বিসিসিআই। কিন্তু দেশজুড়ে লকডাউন জারি থাকায় এবং তার মেয়াদ বৃদ্ধি হওয়ায় আইপিএল ফের স্থগিত করে দিতে বাধ্য হয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। এবার অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে টুর্নামেন্ট। ফলে ক্রিকেট থেকে অনেক দূরে বাড়িতে বসেই সময় কাটছে ক্রিকেটারদের।
সৃঞ্জয় বসু
২০১৪ সালের ২১ নভেম্বর দফায় দফায় ৬ ঘন্টা জেরা করার পর অবশেষে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ সৃঞ্জয় বসুকে গ্রেফতার করে সিবিআই।
২০১০ সালের জুন মাসে মিডিয়া ব্যবসায় নামে সারদা গোষ্ঠী। দু'টি দৈনিক সংবাদপত্র যথাক্রমে 'সকালবেলা' ও 'বেঙ্গল পোস্ট' দিয়ে তাদের পথচলা শুরু হয়। সঙ্গে 'চ্যানেল টেন' কিনে নেন সুদীপ্ত সেন। এর পর মঞ্চে আবির্ভাব হয় কুণাল ঘোষের।
তখনও তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে সাংসদ হননি কুণালবাবু। তিনি তখন বাংলা দৈনিক 'সংবাদ প্রতিদিন'-এর সহযোগী সম্পাদক ছিলেন। বিভিন্নভাবে তিনি ভয় দেখাতে শুরু করেন সারদা গোষ্ঠীর কর্ণধার সুদীপ্ত সেনকে। বলেন, দাবি মতো টাকা না দিলে মিডিয়া ব্যবসা বন্ধ করে দেবেন। তখন রাজ্যে পালাবদলের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। অভিযোগ, কুণাল ঘোষের গোটা অপকর্মে মদত দিয়েছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ তথা 'সংবাদ প্রতিদিন' পত্রিকার সম্পাদক সৃঞ্জয় বসু।
সুদীপ্ত সেনের কাছ থেকে বিভিন্ন কারণে মোটা টাকা নেন সৃঞ্জয় বাবু। দুবার ইডি এবং দুবার সিবিআই জেরার পর গ্রেফতার হন সঞ্জয় বসু। তিন মাসের মাথায় ১ লক্ষ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন পান সৃঞ্জয় বসু। সৃঞ্জয় বসুকে ৭৫ দিন আটক রাখার পরও চার্জশিট দিতে পারেনি সিবিআই। তারই জেরে জামিন মঞ্জুর হয় তাঁর।
মুরলীধরনের ভিডিও
ইতিমধ্যে শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন স্পিনার তথা লেজেন্ড মুথাইয়া মুরলীধরনের একটি ভিডিও ইউ টিউবে বেশ বিখ্যাত হয়েছে। যাতে মুরলীকে নেটে বল করতে দেখা যাচ্ছে। ওই একই নেটে বল করতে দেখা যাচ্ছে শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তির পুত্রকেও। সেই ভিডিও যেমন নেটিজেনদের প্রশংসা কুড়িয়েছে, তেমনই লকডাউনের মধ্যে আশঙ্কিতও হয়েছেন ক্রিকেট প্রেমীরা।
মদন মিত্র
সারদাকাণ্ডে সবচেয়ে বড় ধাক্কা তৃণমূলের জন্য ছিল পরিবহন মন্ত্রী মদন মিত্রর গ্রেফতারি। ২০১৪ সালের ১২ ডিসেম্বর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনকে ব্ল্যাকমেল করে টাকা নেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, প্রতারণা থেকে বেআইনিভাবে আর্থিক সুবিধে নেওয়ার অভিযোগও আনা হয়েছিল।
গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে বারবার জামিনের আবেদন জানিয়েও প্রভাবশালী তত্ত্বে তাঁর জামিন আবেদন খারিজ করে আদালত। জেল বন্দি অবস্থাতেই পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন লড়েন তিনি। সারদা কাণ্ডের প্রভাব তৃণমূলের নির্বাচনী ফলে না পড়লেও নিজের এলাকা কামারহাটি থেকে দাঁড়ানো হেভিওয়েট তৃণমূল নেতা মদন মিত্র হেরে যান।
গ্রেফতার হওয়ার ২২ মাস পরে আলিপুর আদালত মদন মিত্রের জামিন মঞ্জুর করে। তিনি আর প্রভাবশালী নয়, এই যুক্তিকেই মান্যতা দিয়ে ১৫ লক্ষ টাকার দুটি ব্যক্তিগত বন্ড ও কিছু শর্ত লাগু করে তাঁকে জামিন দেওয়া হয়।
সৌজন্যে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ
না, ঘাবড়ে যাওয়ার মতো কোনও কারণ ঘটেনি। কারণ ভিডিওটি বেশ আগের। যখন ২০২০ আইপিএলের জন্য প্রস্তুতি সবে শুরু হয়েছিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ শিবিরে। সেই সময় দলের মেন্টর মুথাইয়া মুরলীধরন ও তাঁর ছেলের বোলিং-র ভিডিও তুলে রেখেছিল কর্তৃপক্ষ। সেটি নিজেদের ইউ টিউব চ্যানেলে পোস্ট করেছে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ।
তাপস পাল
সারদা কাণ্ডের তদন্তের পাশাপাশি রোজভ্যালি কান্ডে চলছিল তদন্ত। সম্প্রতি রোজভ্যালি কাণ্ডে তৃণমূল সাংসদ তাপস পালকে গ্রেফতার করে সিবিআই।
তাপস পাল রোজভ্যালির ফিল্ম ডিভিশনের ডিরেক্টর ছিলেন একসময়। এই সময় একাধিক বার বড় অঙ্কের নগদ টাকা নিয়েছিলেন বলে তাপসের বিরুদ্ধে অভিযোগ।
জেরায় সিবিআই তদন্তকারী আধিকারিকদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছিলেন তাপস পাল। তাঁর বয়ানেও অনেক অসঙ্গতি ছিল। তারই জেরে গ্রেফতার করা হয় তাপস পালকে।
সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়
তৃণমূল সাংসদ তাপস পালকে গ্রেফতারের চারদিনের মাথায় রোজভ্যালি কাণ্ডে তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করল সিবিআই। জিজ্ঞাসাবাদে তার বয়ানে একাধিক অসঙ্গতি মেলে। অনেক প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান সুদীপ বাবু। তাঁর পেটের কথা বার করতেই গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত নেয় তদন্তকারীরা।
ছবি সৌজন্যে: সানরাইজার্স হায়দরাবাদ
করোনার কারণে টি-২০ ক্রিকেট বিশ্বকাপ নিয়ে আশঙ্কা, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কবে?