নাইট রাইডার্সে জুনিয়র নারিন, গুরকিরত সিং মানের সহযোগীতায় ভারতীয় ক্রিকেটে ছাপ ফেলতে তৈরি পাঞ্জাবের 'নারিন'
নাইট রাইডার্সে জুনিয়র নারিন, গুরকিরত সিং মানের সহযোগীতায় ভারতীয় ক্রিকেটে ছাপ ফলতে তৈরি পাঞ্জাবের 'নারিন'
আইপিএল-এর মহা নিলামে থেকে আরও একবার তারুণ্যের উপর ইনভেস্ট করেছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। নাইটরা পরিচিত বরাবর তরুণ ক্রিকেটরদের উপর ভরসা রাখার জন্য। সেই কাজটাই ফের এক বার বেঙ্গালুরুর মেগা নিলামে করল নাইট রাইডার্স। তরুণ পরিচিত মুখ যেমন নাইট শিবিরে রয়েছে, তেমনই এই শিবিরে জায়গা পেয়েছে রমেশ কুমারের মতো আনকোরা ক্রিকেটাররাও। এই রমেশ কুমার আবার পরিচিত জালালাবাদের সুনীল নারিন হিসেবে। তাঁর বোলিং অ্যাকশন, ব্যাটিং স্টাইল সবই নারিনের মতো।
কে এই রমেশ কুমার:
পঞ্জাবের জালালাবাদ থেকে উঠে আসা ২৩ বছর বয়সী বোলিং অলরাউন্ডার এই রমেশ কুমার। এখনও পর্যন্ত একটিও প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেননি তিনি। কিন্তু এই ক্রিকেটারের উপরই ভরসা রেখেছে কেকেআর। ২০ লক্ষ টাকা বেস প্রাইসে দলে তাঁকে তুলে নেয় কলকাতা। ব্যাটারদের তালিকায় রমেশের নাম নথিভুক্ত হলেও তাঁর মজুদ জায়গা বোলিং। লেফট আর্ম এই স্পিনার দুই দিকেই বলকে ঘোরাতে পারেন। পঞ্জাবের এই তরুণ পরিচিত নারিন জালালাবাদিয়া হিসেবে কারণ রমেশের কথা অনুযায়ী সুনীল নারিনের মতো তাঁর বোলিং অ্যাকশান এবং সুনীলের মতোই পিঞ্চ হিটার তিনি। ইউনিটউবে নারিন জালালাবাদ লিখলেই দেখতে পাবেন টেনিস বল ক্রিকেটে তাঁর করা দশ বলে পঞ্চাশ রানের ইনিংস।
লক্ষ্যে অচিবল:
অন্যান্য ছোট শহরের তরুণের মতো রমেশের ক্রিকেটে খেলা শুরু হয় টেনিস বল দিয়ে। ধীরে ধীরে ব্যাট এবং বল হাতে তাঁর প্রতিভা দৃষ্টি আকর্ষণ করে মানুষের এবং স্থানীয় বহু প্রতিযোগীতায় খেলার জন্য আমান্ত্রণ পাঠানো হয় তাঁকে। যদিও তাঁর পরিবার চাইতো ছেলে চাকরি করুক। সেই সময় খেলা চালিয়ে যাওয়ার জন্য পরিবারকে মিথ্যাও বলতে হয়েছে। বিভিন্ন টুর্নামেন্ট থেকে অর্জিত পুরস্কার মূ্ল্যেই নিজের পড়াশোনা এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন রমেশ এবং গ্রাজুয়েশন শেষ করেছেন।
কেরিয়ারে বন্ধুর অবদান:
রমেশের এই প্রতিভা যাতে অচিরেই নষ্ট না হয়ে যায় তার জন্য রমেশের এক বন্ধু তাঁকে উৎসাহিত করে টেনিস বল ছেড়ে ক্রিকেট বলে খেলরা জন্য়। তাঁর কোনও ফর্মাল ক্রিকেটের কোচিং না থাকা স্বত্ত্বেও তিনি এগিয়ে গিয়েছিলেন স্বপ্নকে সত্যি করার উদ্দেশ্যে। টেনিস এবং ক্রিকেট দুই বলেই মোগার অন্যতম সেরা ক্রিকেটার হয়ে ওঠেন রমেশ।
কী ভাবে কলকাতা নাইট রাইডার্সের নজরে এলেন তিনি:
জেলা স্তরে ভাল পারফর্ম করার সুবাদে রাজ্য স্তরের ক্যাম্পে গত বছর সুযোগ পান তিনি। সেখানেই গুরকিরত মানের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। ভারতের জার্সিতে প্রতিনিধিত্ব করা মানকে নিজের আর্থিক অবস্থার কথা খুলে বলেন রমেশ এবং তাঁকে অনুরোধ করেন যদি তিনি রমেশের নাম কোনও টুর্নামেন্টে সুপারিশ করেন। মান তাঁকে কথা দিয়েছিলেন এবং জে পি আর্টরে ট্রফিতে তাঁকে মিনার্ভা ক্রিকেট অ্যাকাডেমিক হয়ে খেলার সুযোগ করে দেন। ৯ ওভারে ৩৫ রান খরচ করে পাঁচ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন রমেশ এবং পরের ম্যাচে ৩২ রানে শিকার করেছিলেন ৪ উইকেট। ওই ম্যাচগুলির ফুটেজ কলকাতা নাইট রাইডার্সের সহকারী কোচ অভিষেক নায়ারকে পাঠান তিনি। এর কিছু দিনের মধ্যে তাঁরে ট্রায়ালে ডাকে কেকেআর।
আইপিএল-এ সুযোগ পেয়ে রমেশের প্রতিক্রিয়া:
এটা আমার পুরো জীবনকে বদলে দিল। এট বড় একট প্ল্যাটফর্ম পেয়েছি। আমি কখনও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলিনি। কিন্তু আমি নিশ্চিত রঞ্জি ট্রফির জন্য এখান থএকেই খুলবে রাস্তা। অবশ্যই প্রধান লক্ষ্য ভারতের হয়ে খেলা এবং এর কিছুই হত না যদি ভগবানের আশীর্বাদ না থাকত এবং গুরকিরত পাজি সাহায্য না করতেন।