মনোজ তিওয়ারি অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেললেন, তার আগে চান কোন লক্ষ্যপূরণ?
মনোজ তিওয়ারির নেতৃত্বে উত্তরপ্রদেশের বিরুদ্ধে দুরন্ত জয় দিয়ে অভিযান শুরু করল বাংলা। প্রথম ইনিংসে পিছিয়ে পড়ার পরেও চতুর্থ তথা শেষ দিনের মধ্যাহ্নভোজের বিরতির আগেই ৬ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয় লক্ষ্মীরতন শুক্লার প্রশিক্ষণাধীন দল। তারপরই মনোজ জানিয়ে দিলেন, এবারের রঞ্জি ট্রফি অভিযান শেষেই তিনি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটকে বিদায় জানাবেন। তবে তার আগে বাংলার রঞ্জি জয়ের খরা কাটাতে চান।
মনোজের নেতৃত্বে জয়
প্রথম ইনিংসে মনোজ ৭১ বলে ২৩ রান করেছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে সাতটি চার ও একটি ছয়ের সাহায্যে ১০৮ বলে ৬০ রানে অপরাজিত রইলেন। ২০০৪ সালে মনোজের অভিষেক হয়েছিল ইডেনে দিল্লির বিরুদ্ধেই। ১৩২টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে তাঁর রান ৯৫১৮, ২৯টি শতরান ও ৪০টি অর্ধশতরান রয়েছে। ২০ তারিখ থেকে ইডেনে বাংলার পরবর্তী প্রতিপক্ষ হিমাচল প্রদেশ। প্রথম ম্যাচ ইনিংসে জেতায় সাত পয়েন্ট নিয়ে তারা আপাতত পয়েন্ট তালিকায় বাংলার উপরেই রয়েছে। দ্বিতীয় ম্যাচেও অভিমন্য়ু ঈশ্বরনকে পাচ্ছে না বাংলা। তিনি রয়েছেন বাংলাদেশে ভারতের টেস্ট দলে। মনোজ বলেন, অভিমন্যু বাংলাদেশে দুটি শতরান করেছেন। ফলে তাঁকে রঞ্জিতে প্রথম থেকে পাওয়া গেলে ভালো হতো। কিন্তু রঞ্জি জয় নিশ্চিত করতে হলে রিজার্ভ ক্রিকেটারদেরও ভালো খেলতে হবে।
খামতি মেটাতে সচেষ্ট
প্রথম ইনিংসে বাংলা ১৬৯ রানে অল আউট হয়ে গিয়েছিল। এই পারফরম্যান্সে মোটেই সন্তুষ্ট নন অভিমন্যুর অনুপস্থিতিতে বাংলার অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পালন করা মনোজ। তিনি বলেন, এটা ঠিক আমার এবং অভিষেক দাসের আউটের ক্ষেত্রে আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমাদের ব্যাটিং ভালো করতে হবে। বিশেষ করে ওপেনিং জুটি মজবুত করতে হবে। প্রথম ইনিংসে সব উইকেট যে ভালো বোলিংয়ের জেরে পড়েছে তা নয়। শট বাছাইয়ের বিষয়টিতেও জোর দিতে হবে। ব্যাটারদের সঙ্গে কথা বলব।
বোলিং বিভাগেও চাইছেন উন্নতি
মনোজ আরও বলেছেন, অসুস্থতা ও ফিটনেস সমস্যা কাটিয়ে ঈশান পোড়েল যেভাবে বোলিং করেছেন রঞ্জির প্রথম ম্যাচেই তা যথেষ্ট ইতিবাচক। তবে দলের সামগ্রিক বোলিংকেও উন্নত করতে হবে। এমনি কে কতগুলি উইকেট পেলেন তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ কোন সেশনে কত উইকেট পড়়ল। এটার ক্ষেত্রে আমরা কয়েকটি সেশনে বেশি লুজ বল করেছি। এই খামতিটাও মেটাতে হবে। পরের ম্যাচেও অভিষেক ও কৌশিকই ওপেন করবেন বলে জানিয়েছেন মনোজ। দ্বিতীয় ইনিংসে কৌশিক অর্ধশতরানও পেয়েছেন। অনুষ্টুপের পারফরম্যান্সের প্রশংসাও শোনা গিয়েছে বাংলার অধিনায়কের গলায়। পাশাপাশি মনোজ বলেন, আকাশ দীপ ব্যাটিংয়ের উন্নতি ঘটাতে পারলে ভারতীয় দলে অলরাউন্ডার হিসেবে নিজের জন্য কড়া নাড়তে পারবেন। কেন না, হার্দিক পাণ্ডিয়ার বিকল্প হিসেবে ভেঙ্কটেশ আইয়ার বা বিজয় শঙ্কর ডাক পান। সেখানে বড় বিকল্প হয়ে ওঠার দক্ষতা রয়েছে আকাশের।
প্রশংসা করলেন লক্ষ্মী
মনোজের অধিনায়কত্বের প্রশংসা করেছেন বাংলার কোচ লক্ষ্মীরতন শুক্লাও। তিনি বলেন, প্রথম ইনিংসে অভিষেকের আউট নিয়ে সংশয় রয়েছে। কৌশিক গ্রিন টপে আউট হয়েছেন প্রথম ইনিংসে। উত্তরপ্রদেশের টপ অর্ডারও এই পিচে সমস্যায় পড়েছিল। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে কৌশিক ভালো খেলেছেন। তাঁর ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ ভালো ছিল। দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি ভালো বলে আউট হয়েছেন। তারপর মনোজ ও অনুষ্টুপ যেভাবে খেলেছেন তা দেখে সকলেই অনুপ্রাণিত হবেন। নিজেদের দক্ষতার প্রতি বিশ্বাস রাখলে যে কোনও সময়ই ঘুরে দাঁড়ানো যায়। মনোজের আগের মতো ফিটনেস না থাকলেও তিনি যেভাব মনের জোরকে সম্বল করে দলকে পরিচালনা করেছেন, তার প্রশংসা শোনা গিয়েছে লক্ষ্মীর গলায়। ক্রিকেটার হিসেবে লড়াকু মানসিকতা হেড কোচ হিসেবেও লক্ষ্মীরতন দারুণভাবে বাংলা দলে ছড়িয়ে দিয়েছেন।
(ছবি- সিএবি মিডিয়া)