মন্ত্রী মনোজ শতরান হাঁকিয়েই রঞ্জি সেমিফাইনালের আগে দিলেন হুঙ্কার, বাংলা দলকে সংবর্ধনা সিএবির
রঞ্জি ট্রফিতে বাংলা অপরাজেয়। গ্রুপ পর্যায়ের তিনটি ম্যাচেই জিতেছিল বাংলা। কোয়ার্টার ফাইনালে ঝাড়খণ্ডের বিরুদ্ধে প্রথম ইনিংসে ৪৭৫ রানের লিড নিয়ে সেমিফাইনালের দিকে পা রেখেছিল অভিমন্যু ঈশ্বরনের দল। আজ বাংলা-ঝাড়খণ্ড ম্যাচ ড্র হতেই শুরু হয়ে গেল মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে সেমিনাইনালের রণকৌশল নেওয়ার প্রস্তুতি।
মন্ত্রী হিসেবে রঞ্জি শতরান
মনোজ তিওয়ারি রাজনীতিবিদ তথা মন্ত্রী হিসেবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে শতরান হাঁকিয়ে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন। নজিরবিহীন ঘটনা ঘটিয়ে। এমন নজির এর আগে কারও নেই। মনোজ এদিন ১৩৬ রানের ইনিংস খেলেন। প্রথম ইনিংসে করেছিলেন ৭৪। স্বাভাবিকভাবেই এই ইনিংস তাঁর আত্মবিশ্বাস বাড়াল। দ্বিতীয় ইনিংসে মনোজের স্ট্রাইক রেটও বেশ ভালো। বাংলার প্রাক্তন অধিনায়ক বলেন, দল জিতলে এবং সেমিফাইনালে উঠলে ভালো তো লাগেই। সেই সাফল্যে নিজের অবদান থাকলে আনন্দ কয়েক গুণ বেড়ে যায়। আমরা আমাদের লক্ষ্যের দিকে প্রথম হার্ডল টপকালাম। বাংলার হয়ে সাফল্য পেলে, জিতলে সব সময়ই গর্ব অনুভব করি। আমি বাংলার হয়ে তিনবার রঞ্জি ফাইনাল খেলেছি। তিনবারই রানার-আপ হতে হয়েছে। এ বছরও নিজেকে একইভাবে ট্রফি জেতার জন্য মোটিভেট করছি। সাফল্যের খিদে একইরকম রয়েছে। যে ধরনের অ্যাডজাস্টমেন্ট ও স্বার্থত্যাগ দরকার হয় সব কিছুই করেছি লক্ষ্যপূরণের জন্য।
মনোজের হুঙ্কার
মনোজ আরও বলেন, জীবনের পথ সব সময় মসৃণ হয় না। সমস্যা থাকে। তবে তাকে দূর করতে হয় লড়াই করেই। রাজনীতি ও খেলার মতো দুটি বিষয় একইসঙ্গে চালিয়ে যেতে দরকার হয় পরিকল্পনা তৈরি করে ভারসাম্য বজায় রাখা। একটা সময় ছিল যখন আমাকে প্রমাণ করার প্রয়োজন ছিল। রাজ্যের মন্ত্রী হওয়ার পর অনেকে আমার খেলা চালিয়ে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তাঁরা আমার বাংলার ক্রিকেটের প্রতি আবেগ ও অনুভূতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল না থাকাতেই সেটি করেছিলেন। আমি প্রথম থেকে বাংলার হয়ে খেলার লক্ষ্যে নিজেকে তৈরি করেছি। যখন সেই সুযোগ পেয়েছি তখন লক্ষ্য স্থির করি রঞ্জি ট্রফি জেতা। প্রথমে যে মানসিকতা ও দায়বদ্ধতা ছিল, এখনও তা একইরকমভাবে অটুট। দলের প্রত্যেকেই মোটিভেটেড। কার কী ভূমিকা, কোন দায়িত্ব পালন করতে হবে তা সম্পর্কে সকলেই ওয়াকিবহাল। এভাবে দলগত সংহতি বজায় রেখে খেলতে পারলে আমাদের থামানো সহজ হবে না।
খুশি অভিমন্যু
বাংলার অধিনায়ক অভিমন্য়ু ঈশ্বরন বলেন, সেমিফাইনালে উঠতে পেরে খুব ভালো লাগছে। দল ভালো ফর্মে রয়েছে। আমাদের ব্যাটিং উন্নত করার চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছি। নক আউট পর্বের শুরুতে ব্যাটিং ভালোই হয়েছে। আমরা এই মুহূর্তটা উপভোগ করতে চাই। একদিন বিশ্রাম নিয়ে ফের পরের ম্যাচের জন্য প্রস্তুতিতে নেমে পড়ব। সুদীপ ঘরামি প্রথম ইনিংসে ভালো খেলেছেন। মনোজ ভাইয়া প্রথম ইনিংসে ধৈর্য্যশীল দারুণ ইনিংস খেলার পর দ্বিতীয় ইনিংসে শতরান পেয়েছেন দ্রুতগতিতে রান তুলে।
Recommended Video
সিএবির সংবর্ধনা
বাংলা প্রথম ইনিংসে ৯ ব্যাটার ৫০-এর বেশি রান তুলে বিশ্বরেকর্ড গড়েছে। সেজন্য সব ক্রিকেটারকে বেঙ্গালুরুর মাঠে দাঁড়িয়ে সংবর্ধিত করলেন সিএবি সভাপতি অভিষেক ডালমিয়া। ঈশ্বরন বলেন, বিশ্বরেকর্ড গড়তে পারা দারুণ অনুভূতি। আশা করব, সেমিফাইনাল ও ফাইনালেও আমরা বড় স্কোর করতে পারব। প্রথম ইনিংসে সায়নশেখর মণ্ডল ও শাহবাজ আহমেদ চারটি করে উইকেট পেয়েছিলেন। তাঁদের প্রশংসা করে বাংলার অধিনায়ক বলেন, শাহবাজ ও সায়ন ভালো পারফর্ম করেছেন। সঠিক সময়ে যেটা তাঁদের কাছে দরকার সেটাই তাঁরা নিশ্চিত করেছেন। এমন অলরাউন্ডার থাকা সব দলের অধিনায়কের কাছেই খুশির বিষয়। এই ধারাবাহিকতা আগামী ম্য়াচগুলিতেও ধরে রাখতে চাই।
(ছবি ও ভিডিও- সিএবি মিডিয়া)