মমতা-সৌরভ সাক্ষাৎ নবান্নে! ডুমুরজলায় কেন হবে না ক্রিকেট স্টেডিয়াম? বৈঠক নিয়ে নানা জল্পনা
আজ বিকেলে নবান্নে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করলেন বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সৌরভ কোনও কাজ নিয়ে আজ আসেননি। তবে রাজ্য সরকারের তরফে স্টেডিয়াম তৈরির জন্য সিএবিকে যে জমি দেওয়া হয়েছিল ডুমুরজলার খেলনগরীতে, সেখানে জলাশয় থাকায় স্টেডিয়াম করা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন সৌরভ। রাজ্য সরকার স্টেডিয়ামের জন্য বিকল্প জমির খোঁজ চালাচ্ছে। সৌরভের সঙ্গে তাঁর নিখাদ গল্প হয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানালেও বৈঠক ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে।
নবান্নে মমতা-সৌরভ সাক্ষাৎ
আজ সকালেই জানা গিয়েছিল, বিকেল ৪টে নাগাদ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে নবান্নে যাবেন। জল্পনা ছিল, মে মাসের ২৪ ও ২৫ তারিখ ইডেনে যে আইপিএলের প্রথম কোয়ালিফায়ার ও এলিমিনেটর হবে এবং ১০০ শতাংশ দর্শক প্রবেশের অনুমতিও দেওয়া হয়েছে তা নিয়ে সৌরভ কথা বলবেন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে। তাঁকে আমন্ত্রণও জানাবেন। এদিন বিকেলে যথাসময়েই মমতা-সৌরভ বৈঠক হয়। এরপর মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। সাংবাদিক সম্মেলনের শেষের দিকে সৌরভের সঙ্গে তাঁর বৈঠক নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন করা হয়।
ডুমুরজলায় স্টেডিয়াম নয়
মুখ্যমন্ত্রী জানান, আইপিএল নিয়ে কোনও কথা হয়নি। সৌরভ জানাতে এসেছিলেন ডুমুরজলার খেলনগরীতে জলাশয় থাকায় সেখানে ক্রিকেট স্টেডিয়াম তৈরি করা যাচ্ছে না। উল্লেখ্য, মুম্বইয়ে তিনটি স্টেডিয়ামে এবার আইপিএল হচ্ছে। কলকাতায় আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম ইডেন ছাড়া আর কিছু নেই। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস মাঠে এমনিতে খেলা চলতে পারে। তবে সেখানে বা কল্যাণীতে দর্শকদের উপস্থিতিতে ম্যাচ আয়োজনের কোনও পরিকাঠামো নেই। সে কারণেই কলকাতা বা কলকাতার কাছেই একটি স্টেডিয়াম থাকলে একসঙ্গে সেখানে খেলা চালানো যেতে পারে। এমনকী ইডেনে আন্তর্জাতিক ম্যাচ থাকলে অন্যত্র বিভিন্ন টুর্নামেন্টের খেলা চালানোও সম্ভব। সে কারণেই ইডেনের মতোই আরেকটি স্টেডিয়াম তৈরির স্বপ্ন রয়েছে সৌরভ এবং সিএবির। রাজ্য সরকার জমি দেওয়ায় স্টেডিয়াম তৈরির দিকে সিএবি এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তও নেয়। কিন্তু আপাতত সেই পরিকল্পনা থমকে গেল বলেই স্পষ্ট মুখ্যমন্ত্রীর কথায়। মুখ্যমন্ত্রী বিকল্প কোন জায়গা সিএবিকে দেবেন তা অবশ্য এদিন স্পষ্ট করেননি।
বৈঠক নিয়ে জল্পনা
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় নিজেদের ব্যস্ততার মধ্যে নিছক গল্প করবেন নবান্নে বসে এটা অনেকেই মানতে রাজি নন। মঙ্গলবার সিএবিতে ইস্টবেঙ্গলের কার্যকরী সমিতির সদস্য সদানন্দ মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে গিয়েছিলেন দেবব্রত (নীতু) সরকার। সেখানে সৌরভের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। ইস্টবেঙ্গলের নতুন ইনভেস্টর চূড়ান্ত করার পথে লাল হলুদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের পাশাপাশি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সহযোগিতা চাইছেন বলে জানা যায়। সেদিন বৈঠক নিয়ে কিছু বলেননি নীতু সরকাররা। তারপরই সৌরভের নবান্নে যাওয়ার মধ্যে অনেকে দুয়ে দুয়ে চার করতে চাইছেন। উল্লেখ্য, ইস্টবেঙ্গলকে দু-বার আইপিএল খেলার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীই।
আলোচনায় কি ইস্টবেঙ্গলও?
নীতু সরকার এই মুহূর্তে মুম্বইয়ে রয়েছেন। তাঁর রবিবার কলকাতায় ফেরার কথা। ৪ বা ৫ মে ইস্টবেঙ্গলের ইনভেস্টর নিয়ে বড় কোনও ঘোষণাও হতে পারে। বসুন্ধরা গ্রুপ যেহেতু বাংলাদেশের তাই বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কিছু জটিলতার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। তবে মমতা ও সৌরভের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার খুব ভালো সম্পর্ক। সেটা ইস্টবেঙ্গলের সমস্যা সমাধানে কোনও ভূমিকা নেয় কিনা তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে ওঠে। ইতিমধ্যেই ইস্টবেঙ্গল ডিটিডিসি, মুখরোচক চানাচুর, টেকনো ইন্ডিয়া-সহ সাতটি কো-স্পনসর চূড়ান্ত করে ফেলেছে। যার মধ্যে একটির বাণিজ্যিক দূত সৌরভ। আদানি গোষ্ঠী ও রশ্মি সিমেন্ট ইস্টবেঙ্গলের ইনভেস্টর হতে পারে বলেও জল্পনা রয়েছে। সবমিলিয়ে মমতা-সৌরভ সাক্ষাতে সেই বিষয়ে কথা হওয়া নিয়ে সরকারিভাবে কিছু জানানো না হলেও, সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না।