
Exclusive: হায়দরাবাদ এফসি চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় খুশি তবে এগতে হবে অনেকটা পথ, মত নঈমউদ্দিন-সাব্বির আলি-বলরাম’দের
নতুন চ্যাম্পিয়ন পেয়েছে আইএসএল। হায়দরাবাদ এফসি'র হাত ধরে নয়া দিশা পেয়েছে ভারতীয় ফুটবল। যেই হায়দরাবাদ একটা সময়ে একের পর এক কিংবদন্তি উপহার দিয়েছিল ভারতীয় ফুটবল আঙিনাকে, সেই রাজ্যটাই দীর্ঘদিন ছিল ফুটবলের মূল স্রোতের বাইরে।

২০১৯ সালে হায়দরাবাদ এফসি আইএসএল-এ আসার আগে পর্যন্ত নিজামের রাজ্যের কোনও দল ভারতী ফুটবলের মূলস্রোতে ছিল না। আইএসএল তো দূর অস্ত্ আই লিগেও ছিল না কোনও হায়দরাবাদের দল।
যেই রাজ থেকে মহম্মদ হাবিব, তুলসীদাস বলরাজ, পিটার থঙ্গরাজ, সৈয়দ নঈমুদ্দিন, সাব্বির আলির মতো কিংবদন্তি উঠে এসেছেন, সেই রাজ্যের ফুটবলের দৈন্যদশা চলে আসছে বিগত কয়েক দশক ধরে। আইনি জটিলতার কারণে ২০১৩ পর্যন্ত ঘরোয়া লিগ বন্ধ ছিল হায়দরাবাদে। সমস্যা কাটিয়ে ২০১৪-১৫ মরসুমে রাজ্যে ফুটবল ফিরলেও তা থমকে গিয়েছে শেষ দুই বছর করোনার কারণে। একাধিক প্রতিকূলতা স্বত্ত্বেও রাজ্যের দল হায়দরাবাদ এফসি আইএসএল চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় অত্যন্ত খুশি সেই রাজ্যের কিংবদন্তিরা।
সৈয়দ নঈমউদ্দিন:
প্রথমেই শুভেচ্ছা জানাতে চাই হায়দরাবাদ এফসিকে। আমি গর্বিত ওরা আইএসএল চ্যাম্পিয়ন হওয়া, অত্যন্ত খুশি। হায়দরাবাদ বহু তারকা উপহার দিয়েছে এই দেশের ফুটবলকে। রহিম সাব, ইউসুফ সাব, লতিফ সাবের মতো কিংবদন্তিরা উঠে এসেছে এই রাজ্য থেকে। আমি আশা করবো এই হায়দরাবাদ এফসি আরও বেশি স্থানীয় ফুটবলারকে সুযোগ দেবে দলে। আমার মনে হয় এক জনই স্থানীয় ফুটবলার রয়েছে। একটা সময়ে আমরা হায়দরাবাদের নাম উজ্জ্বল করতে পারায় এখনও গর্ব অনুভব করি। প্রতিশ্রুতিবান ফুটবলার তুলে আনার ক্ষেত্রে অতীতের মতো অগ্রণী ভূমিকা নিতে হলে আরও বেশি করে স্থানীয় ফুটবলারদের সুযোগ দিতে হবে দলগুলোতে। আশা করি ফুটবলে হায়দরাবাদের পুরনো গড়িমা ফিরে আসবে।
সাব্বির আলি:
১৯৬৫ সালে শেষ বার কোনও সর্ব ভারতীয় ট্রফি জিতেছিল হায়দরাবাদ। সেই বছর বাংলাকে হারিয়ে সন্তোষ ট্রফি জিতেছিল রাজ্যের ফুটবল দল। কিন্তু তার পর থেকে আর কোনও সর্ব ভারতীয় ট্রফি হায়দরাবাদে আসেনি। এটা রাজ্যের ফুটবলের জন্য ভাল খবর যে হায়দরাবাদ এফসি'ৎ হাত ধরে ফের ভারত সেরা হয়েছে এই রাজ্য।
আইনি জটিলতা থাকার ফলে রাজ্যে প্রায় আট-দশ বছর বন্ধ ছিল ঘরোয়া লিগ। ২০১৪-১৫ থেকে ঘরোয়া লিগ ফের চালু হয়। এইচএফসি দু-আড়াই বছরহয়েছে এসেছে। কিন্তু আগে এতটা সময়ে ভারতীয় ফুটবলের মূল স্রোতে না থাকার ফলে হায়দরাবাদের ফুটবল অনেকটা পিছিয়ে গিয়েছে।
এইচএফসি আসার পর ফুটবলকে ঘিরে আবার সেই পুরনো উন্মাদনা তৈরি হচ্ছে এখানে। যে কোনও রাজ্যে ফুটবলের উন্নতিতে সরকারের অগ্রণী ভূমিকা এবং কর্পোরেটের সাহায্য দরকার। কলকাতা লিগ আগে কত বড় হত। এখন দু-আড়াই মাসেই শেষ হয়ে যাচ্ছে। তা হলে সারা বছর ফুটবলাররা কী করবে! একটা পরিষ্কার ভিশন প্রয়োজন। আশা করি হায়দরাবাদের ফুটবলে আবার সেই পরিচিত জোয়াড় আসবে কিন্তু তার জন্য সময় লাগবে। ধীরে ধীরে উন্নতি হবে। তবে, হায়দরাবাদ এফসি আইএসএল জেতায় ফের ভারত সেরা হয়েছে এই রাজ্য এবং মানুষের মধ্যেও ফুটবলকে ঘিরে সেই পুরনো উন্মাদনা তৈরি হচ্ছে ধীরে ধীরে।
তুলসীদাস বলরাম:
আমি এখন আর খেলা দেখিনা। শরীরটাও খুব ভাল যায় না। সেই রকম ভাবে কোনও খোঁজ খবর রাখি না। তবে, হায়দরাবাদ এফসি চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এটা খুবই খুশির বিষয়। অনেক বছর পর হায়দরাবাদ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভাল লাগছে। হায়দরাবাদ একটা সময়ে একের পর মহিরূহের জন্ম দিয়েছে। ১৯৫৬ অলিম্পিতে রহিম সাবকে নিয়ে হায়দরাবাদ থেকেই ছিল মোট ৯ জন। হায়দরাবাদ যদি সেই পুরনো জায়গায় ফিরে আসতে পারে তা হলে অত্যন্ত খুবি হব আমি, খুবই খুশি হব। এমন নয় যে প্রতিভা নেই, কিন্তু সেই প্রতিভাকে অন্বেষন করতে হবে, তুলে আনতে হবে, ঠিক পথে চালিত করতে হবে। হায়দরাবাদ অ্যাসোসিয়েশনকে দায়িত্ব নিতে হবে।