লিটনের লড়াকু ব্যাটিংয়ে নজির, ভারতের বিরুদ্ধে লড়ে হারার ধারা বদলাতে না পেরে হতাশ শাকিব
টি ২০ আন্তর্জাতিকে দ্বাদশ দ্বৈরথেও ভারতের কাছে পরাস্ত বাংলাদেশ। এই নিয়ে এই ফরম্যাটে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ১১তম জয়টি ছিনিয়ে নিল ভারত। একটিতে জিতেছে বাংলাদেশ। অথচ আজ অ্যাডিলেডে বাংলাদেশ যেভাবে ১৮৫ রানের টার্গেট তাড়া করতে শুরু করেছিল, বলা ভালো লিটন দাস দাপট দেখাচ্ছিলেন তাতে জয়ের সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছিল। কিন্তু দ্রুত কয়েকটি উইকেট হারিয়েই ক্রমেই বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ। শেষ অবধি ডাকওয়ার্থ লুইস মেথডে ভারত ৫ রানে ম্যাচ জেতে।
এই ম্যাচ জিতলে গ্রুপ ২-এর শীর্ষে চলে যেতে পারত বাংলাদেশ। কঠিন হয়ে যেত ভারতের শেষ চারে ওঠার সমীকরণ। বৃষ্টির কারণে মিনিট পঁয়তাল্লিশ বন্ধ ছিল খেলা। তার আগে অবধি বাংলাদেশ ৭ ওভারে বিনা উইকেটে ৬৬ রান তুলে ফেলেছিল। এই সময় বাংলাদেশ ডাকওয়ার্থ-লুইস মেথডে প্রয়োজনীয় রানের তুলনায় ১৭ রান বেশি তুলে ফেলেছিল।
যদিও বৃষ্টির পরেই ছন্দপতন। যে তাড়াহুড়ো করে খেলা শুরুর চেষ্টা চলছিল তাতে বাংলাদেশ শিবির অসন্তুষ্ট ছিল। শাকিবরা আম্পায়ারদের বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন মাঠ ভিজে। এমনকী খেলা শুরুর পর প্রথম বলেই দু রান নিতে গিয়ে নন স্ট্রাইকিং এন্ডে পা পিছলে পড়ে যান লিটন দাস। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের পরের বলটি ডিপ মিড উইকেটে খেলেছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ঝুঁকিপূর্ণ রান নিতে গিয়ে লোকেশ রাহুলের দুরন্ত থ্রোয় রান আউট হয়ে যান লিটন। এতে তিনি ওপেনিং পার্টনার শান্ত ও আম্পায়ারের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন। দেখা গিয়েছে দ্বিতীয় রান নেওয়ার সময়ও পা পিছলে বেসামাল হয়ে গিয়েছিলেন লিটন, শরীর ছুড়ে দিয়েও রান আউট হওয়া থেকে বাঁচতে পারেননি।
ভারতীয় বোলারদের ক্লাবস্তরে নামিয়ে এনেছিলেন বেধড়ক ঠ্যাঙানি দিয়ে। শেষ অবধি ২৭ বলে ৬০ রান করে ফিরতে হয় লিটনকে। ২০০৭ সালের টি ২০ বিশ্বকাপে ২০ বলে অর্ধশতরান করেছিলেন মহম্মদ আশরাফুল। লিটন আজ ভারতের বিরুদ্ধে হাফ সেঞ্চুরি করতে নিলেন ২১ বল। ভারতের বিরুদ্ধে টি ২০ আন্তর্জাতিকে দ্রুততম অর্ধশতরানের নিরিখে লিটন রইলেন যুগ্ম তৃতীয় স্থানে। চলতি বছর অস্ট্রেলিয়ার ক্যামেরুন গ্রিন ভারতের বিরুদ্ধে ১৯ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন। ২০১৬ সালে ভারতের বিরুদ্ধে লডারহিলে জনসন চার্লস ২০ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন। লিটন দাসের আগে ভারতের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালে নাগপুরে টি ২০ আন্তর্জাতিকে শ্রীলঙ্কার কুমার সঙ্গকারা ২১ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন।
লিটনের রান আউট যেমন টার্নিং পয়েন্ট, তেমনই ১১ বলের ব্যবধানে ৯ রানের মধ্যে চার উইকেট হারিয়ে সমস্যায় পড়ে যায় বাংলাদেশ। পরপর দুটি ওভারে অর্শদীপ সিং ও হার্দিক পাণ্ডিয়া দুটি করে উইকেট তুলে বাংলাদেশের কাজ কঠিন করে দেন। শেষ অবধি মাত্র ৫ রানে ম্যাচ হেরে বাংলাদেশ অধিনায়ক শাকিব আল হাসান হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, ভারতের বিরুদ্ধে খেলায় সেই একই গল্প! আমরা কাছাকাছি পৌঁছেও লক্ষ্যপূরণ করতে পারলাম না। তবে ম্যাচ ভালো হয়েছে।
দর্শকদের পাশাপাশি দুই দলই ম্যাচটি উপভোগ করেছে। কেউ হারবে, কেউ জিতবে। তবে লিটন খুব ভালো ব্যাট করেছেন। সাম্প্রতিককালে তিনিই আমাদের সেরা ব্যাটার। যেভাবে শুরু হয়েছিল তাতে আমরা লক্ষ্য পার করতে পারবে বলে বিশ্বাস ছিল। তাসকিনকে শুরুর দিকে বল করানো প্রসঙ্গে শাকিব বলেন, ভারতের প্রথম চার ব্যাটার বিপজ্জনক। তাঁদের উইকেট তুলে নিতেই আমাদের সেরা বোলার তাসকিনকে দিয়ে বল করাই। উইকেট না পেলেও ভালো বোলিং করেছেন তাসকিন। ভাগ্য সঙ্গে থাকলে উইকেট পেতে পারতেন। পজিটিভ থেকেই বিশ্বকাপের পরবর্তী ম্যাচ উপভোগ করার বার্তা দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
অর্শদীপ অস্ত্রে বাজিমাত রোহিতের, বিরাট-রাহুলেরও প্রশংসায় হিটম্যান, কোহলি ভুলেছেন অতীতকে