দক্ষিণ আফ্রিকাকে চাপে ফেললেন রাহুল-ময়াঙ্ক, সেঞ্চুরিয়ন টেস্টে কোন নয়া কীর্তি ভারতীয় ওপেনারদের?
সেঞ্চুরিয়নে পয়া মাঠে ভারতের বিরুদ্ধে সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম সেশনে চাপে দক্ষিণ আফ্রিকাই। ভারতকে শক্ত ভিতে দাঁড় করিয়ে নয়া কীর্তিও গড়ে ফেললেন ভারতের ওপেনাররা। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে প্রথম ইনিংসে ভারতের স্কোর বিনা উইকেটে ৮৩। ময়াঙ্ক আগরওয়াল ৮৪ বলে ৪৬ ও লোকেশ রাহুল ৮৪ বলে ২৯ রান করে ক্রিজে আছেন।
|
প্রথম সেশন ভারতের
খেলার যা গতিপ্রকৃতি তাতে সুপারস্পোর্ট পার্কে ফ্ল্যাট উইকেটই হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। দক্ষিণ আফ্রিকার পেসারদের নির্বিষ বোলিং সামলে মসৃণভাবেই ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন লোকেশ রাহুল ও ময়াঙ্ক আগরওয়াল। রাহুলের বিরুদ্ধে রিভিউ নিয়ে তা নষ্ট করে ডিন এলগারের দল। মার্কো জেনসেনের বলে ময়াঙ্কের ক্যাচ ফেলেন উইকেটকিপার কুইন্টন ডি কক। বিরাট কোহলি বলেছিলেন, দ্বিতীয় দিন থেকে এই উইকেট গতিময় হতে পারে বলে প্রথম ইনিংসে বড় রান তুললেই টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত। মূল পিচের পাশে সেন্টার উইকেটে অনুশীলনও যে কার্যকরী হয়েছে তা স্পষ্ট অন্তত ওপেনারদের ব্যাটিং দেখে।
|
নির্বিষ বোলিং প্রোটিয়াদের
ম্যাচের পঞ্চম ওভারে কাগিসো রাবাডার চতুর্থ বলে রাহুলের বিরুদ্ধে কট বিহাইন্ডের জোরালো আবেদন উঠলে তাতে সাড়া দেননি আম্পায়ার। এলগার রিভিউ নিলে দেখা যায় বল ব্যাটের কাছে পর্যন্ত আসেনি। ১৮তম ওভারে এই টেস্টে অভিষেক হওয়া মার্কো জেনসেন বল করতে এলে দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে পরপর দুটি চার মারেন ময়াঙ্ক আগরওয়াল। পৌঁছে যান ব্যক্তিগত ৩৬ রানে। এই ওভারের চতুর্থ বলে ময়াঙ্কের ক্যাচ ডানদিকে ঝাঁপিয়ে পড়েও তালুবন্দি করতে পারেননি ডি কক।
|
ভরসা দিচ্ছে ওপেনিং জুটি
ইংল্যান্ড সফরের পর দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারতের ওপেনিং জুটি যেভাবে দলকে ভরসা দিয়েছিল, কর্নাটকের হয়ে দীর্ঘদিন ওপেন করা ময়াঙ্ক ও রাহুল যেভাবে এদিন ইনিংসকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তার প্রশংসা করেছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের কোচ তথা ভারতের প্রাক্তন ব্যাটিং কোচ সঞ্জয় বাঙ্গার। বল ছাড়ার ক্ষেত্রে যে ধৈর্য্যের পরিচয় ময়াঙ্ক দিয়েছেন তারও প্রশংসা করেছেন তিনি। ফ্রন্ট ফুটেও সাবলীল কিছু দৃষ্টিনন্দন শট এসেছে ময়াঙ্কের ব্যাট থেকে। সর্বোপরি মুম্বই টেস্ট-সহ নিউজিল্যান্ড সিরিজে যেভাবে ময়াঙ্ক ভরসা দিয়েছেন, সেই ফর্ম প্রোটিয়াদের দেশেও অব্যাহত রয়েছে। তিনি মেরেছেন সাতটি চার, চারটি বাউন্ডারি এসেছে রাহুলের ব্যাট থেকে।
|
নয়া কীর্তি ভারতীয় ওপেনারদের
২৮ ওভারে ভারতের কোনও উইকেট ফেলতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। নিজেদের দেশে কোনও টেস্ট সিরিজের প্রথম টেস্টে প্রথমে বল করছে দক্ষিণ আফ্রিকা আর প্রতিপক্ষ ওপেনিং জুটিতে ৫০-এর বেশি রান তুলেছেন এমন নজির আজ নিয়ে দ্বিতীয়বার হলো। ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিস গেইল ও ড্যারেন গঙ্গার জুটিতে উঠেছিল ৯৮ রান। আর ১৬ রান করলে সেই নজির ভেঙে দেবেন ভারতের দুই ওপেনার। দক্ষিণ আফ্রিকা গত জুনের পর টেস্ট খেলেনি। লাল বলের ক্রিকেটে তাই রাবাডা, এনগিডি, মুলডাররা হতাশই করেছেন। ১ জুলাই থেকে ধরলে থেকে রাবাডা ও এনগিডি লাল বলে বোলিংই করেননি। সেখানে ডুয়ান অলিভিয়ের ১৫৩.১ ওভার বল করেছেন। তবু তাঁকে না খেলিয়ে মার্কো জেনসেনের অভিষেক ঘটানো প্রোটিয়াদের ভুল বলে চিহ্নিত করছেন অনেকে। মনে করা হচ্ছে, জোহানেসবার্গের নেটে তিন বছর আগে বিরাটকে অস্বস্তিতে ফেলা জেনসেনকে নেওয়া হয়েছে ভারত অধিনায়কের দুর্বলতার কথা ভেবেই।