
অর্জুনের অবস্থা যেন ব্র্যাডম্যানের ছেলের মতো না হয়! সচিনের সঙ্গে তুলনা না টানার আর্জি জানিয়ে পরামর্শ কপিলের
অর্জুন তেন্ডুলকরকে দলে নিয়েও দুটি আইপিএল মরশুম বসিয়ে রাখল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। প্রথম ৮টি ম্যাচে টানা হারার জেরে আইপিএল থেকে ছিটকে গিয়েছিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। শেষ দিকের ম্যাচগুলিতে অন্তত অর্জুনকে একটিতে খেলানো হবে বলে আশায় ছিলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। কিন্তু তা হয়নি। তার উপর মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বোলিং কোচ শেন বন্ডের বক্তব্য সামনে আসার পর ফের চর্চা শুরু হয়েছে অর্জুনকে নিয়ে।

অর্জুন ব্রাত্য
সচিন তেন্ডুলকর মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের মেন্টর। কিন্তু যেহেতু পুত্র এই দলে রয়েছে সে কারণে সচিন দল গঠনের বিষয়টি ছেড়ে দেন টিম ম্যানেজমেন্টের উপরই। গত দুটি আইপিএল মরশুমে ২৮টি ম্যাচ ডাগআউটে কাটানো অর্জুনকে সচিন পরামর্শ দেন কঠোর পরিশ্রম চালিয়ে ধৈর্য্য ধরে সুযোগের অপেক্ষা করার জন্য। অর্জুনের অভিষেকের আশায় গ্যালারিতে গিয়েছিলেন দিদি সারা। অর্জুন নিজেও অভিষেকের আশায় অনুশীলনে নিজের ভালো পারফরম্যান্সের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন। শেষ ম্যাচের আগে রান-আপ ঠিক করতেও দেখা গিয়েছিল। কিন্তু প্রথম একাদশে জায়গা মেলেনি।

উন্নতির দরকার
শেন বন্ড জানিয়ে দিয়েছেন, দল তৈরি আর প্রথম একাদশ তৈরির মধ্যে ফারাক রয়েছে। অর্জুনকে ব্যাটিং ও বোলিংয়ের আরও উন্নতি ঘটাতে হবে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের মতো দলের প্রথম একাদশে থাকতে গেলে। দলের ২৪ জন ক্রিকেটারের মধ্যে এবারের আইপিএলে ২৩ জনকে খেলায় মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। কিন্তু যাঁরা সুযোগ পাননি তাঁদের মধ্যে অন্যতম অর্জুন। সচিন-পুত্রের প্রতি মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের এমন মনোভাব দেখে ক্ষুব্ধ ক্রিকেটপ্রেমীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি জানান, অর্জুনকে ছেড়ে দেওয়া হোক। অন্য দলের হয়ে তিনি নিজের দক্ষতার প্রমাণ রাখবেন।

আইপিএল অভিষেকের অপেক্ষায়
অর্জুনকে বিভিন্ন সময় ভারতীয় দলের অনুশীলনে বল করতে দেখা গিয়েছে। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে অনূর্ধ্ব ১৯ দলে ২০১৮ সালে অভিষেক হলেও ২০২০ সালে বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাননি। মুম্বইয়ের হয়ে খেলেছেন দুটি টি ২০ ম্যাচ। গত বছরের নিলামে ২০ লক্ষ ও এবার ৩০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে অর্জুনকে দলে নেয় মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। ঈশান কিষাণ-সহ অনেক ব্যাটারকেই নিখুঁত ইয়র্কারে বিব্রত করেছেন অর্জুন। অনুশীলনেও নিজের সেরাটা দিতে সবরকম প্রয়াস চালিয়েছেন। তবে আইপিএলের পর মুম্বইয়ের যে রঞ্জি দল ঘোষণা করা হয়েছে নক আউট পর্বের জন্য তাতে ঠাঁই হয়নি সচিন-পুত্রের।

কপিলের পরামর্শ
আনকাট-কে কপিল দেব বলেছেন, কেন অর্জুনকে নিয়ে এত কথা হচ্ছে? তিনি সচিন তেন্ডুলকরের পুত্র বলে। কিন্তু তাঁকে তাঁর স্বাভাবিক ক্রিকেট খেলতে দেওয়া হোক। সচিনের সঙ্গে তুলনা করা ঠিক নয়। তেন্ডুলকর নামের সঙ্গে যুক্ত থাকার ভালো দিক যেমন রয়েছে, তেমন খারাপ দিকটাও রয়েছে। ডন ব্র্যাডম্য়ানের পুত্র প্রত্যাশার চাপ সহ্য করতে না পেরে ব্র্যাডম্যান পদবিটা তিনি বদলে ফেলেছিলেন। কেন না, এটা থাকলে সকলেই তাঁকে বাবার মতো দেখতে চাইতেন, যে চাপ তিনি নিতে পারেননি। ফলে অর্জুনকেও চাপে ফেলা উচিত নয়। অল্প বয়স। যেখানে পিতা সচিন রয়েছেন সেখানে আমরা বলার কে? আমি শুধু এটুকুই বলব, যাও, নিজের খেলা উপভোগ করো। কোনও কিছু প্রমাণের দরকার নেই। পিতার দক্ষতার ৫০ শতাংশে পৌঁছাতে পারলেই যথেষ্ট। সচিন এত বড় মাপের ক্রিকেটার যে তেন্ডুলকর নামটি দেখলেই প্রত্যাশা বেড়ে যায়।