সৌরভ-বিরাট সংঘাত নিয়ে মুখ খুললেন কপিল, চাঞ্চল্যকর তথ্যে কীভাবে বাড়ছে কোহলির অস্বস্তি?
বিরাট কোহলির সাংবাদিক বৈঠকের পর থেকে ভারতীয় ক্রিকেটে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। বিরাট কোহলি না সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, কে সত্যি কথাটা বলছেন সেটাই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিরাটের প্রেস কনফারেন্সের পর সৌরভ নিজে আর মুখ খোলেননি। বিসিসিআইয়ের তরফেও কিছু বলা হয়নি। তবে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের আগে যে বাতাবরণ তৈরি হয়েছে তা অবিলম্বে কাটানোর পক্ষে জোরালো সওয়াল করেছেন তিরাশির বিশ্বকাপজয়ী প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক কপিল দেব।
ঝড়ের মাঝেও নীরবতা
একটা সময় অবধি রোহিত শর্মার সঙ্গে বিরাট কোহলির সম্পর্কের অবনতি নিয়ে জল্পনা চলছিল। গতকাল থেকে চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে সৌরভ-বিরাট সংঘাত! সৌরভের দাবি ছিল, তিনি নিজে বিরাটকে টি ২০ অধিনায়কত্ব ছা়ড়তে বারণ করেছিলেন। কিন্তু বিরাট গতকাল পাল্টা দাবি করে বলেন, এমন কোনও দাবিই করা হয়নি। তবে এর প্রেক্ষিতে সৌরভ আর কিছু বলেননি। যদিও যাবতীয় ধোঁয়াশা এবার সৌরভের কাটিয়ে দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন সুনীল গাভাসকর। কিন্তু বোর্ড সভাপতির ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, মহারাজ নিজে কাদা ছোড়াছুড়িতে যেতে চাইছেন না।
বিরাটকে নিয়ে অসন্তোষ
বোর্ডসূত্রে খবর, সিংহভাগ কর্তাই জানেন বিরাট কোহলিই মিথ্যা কথা বলছেন। কেন না, তাঁর সঙ্গে যখন কথা হয়েছিল তখন সৌরভ ছাড়াও ভিডিও কনফারেন্সে ছিলেন সচিব জয় শাহ, সহ অধিনায়ক রোহিত শর্মা, নির্বাচকমণ্ডলীর প্রধান চেতন শর্মা। সমস্ত কথোপকথনই রেকর্ড করা রয়েছে। সৌরভ বিরাটকে টি ২০ নেতৃত্ব না ছাড়়ার অনুরোধ জানিয়ে বলেছিলেন, এতে বিশ্বকাপের আগে বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়তে পারে। তাছাড়া চাপ কমাতে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের ক্যাপ্টেন্সিও ছেড়ে দেব। রোহিতের সঙ্গে কথা হয়ে গিয়েছে। রোহিত টি ২০-তে ক্যাপ্টেন্সি করুক, আমি টেস্ট ও ওয়ান ডে-তে। তরুণ ক্রিকেটারদের সহ অধিনায়ক করা হোক। যদিও এতেই এক বোর্ডকর্তা অসন্তুষ্ট হয়ে বলেন, কে অধিনায়কত্ব করবেন সেটা নির্বাচকরাই ঠিক করবেন। একটি সংবাদমাধ্যমের দাবি, পরে রোহিত বিরাটের সঙ্গে এমন কথোপকথনের বিষয়টি অস্বীকার করেন। এতে বোর্ডের অনেকেরই ধারণা, রোহিতকে ভিলেন বানিয়ে তাঁর কেরিয়ার শেষ করে দেওয়ারই ফন্দি আঁটেন বিরাট!
নজিরবিহীন কাণ্ড
বোর্ড সভাপতির দিকে আঙুল তুলেছেন কোনও ক্রিকেটার বা অধিনায়ক এমন নজির ভারতীয় ক্রিকেটে নেই। শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তানের অপসংস্কৃতি ভারতের আমদানির যে চেষ্টা বিরাট করছেন তাতে বোর্ডের অনেকেই রুষ্ট। বিরাটকে শোকজও করা হতে পারে। এমনকী দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে দল ব্যর্থ হলে বিরাট কোহলিকে টেস্টের অধিনায়কত্ব থেকে সরানোর বিষয়টিও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। অনেকেই দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপের দাবি জানাতে শুরু করেছেন। যদিও বোর্ডের শীর্ষকর্তারা তো বটেই, অন্য আধিকারিকরাও কেউ সংবাদমাধ্যমের ফোন ধরছেন না।
কপিলের আর্জি
গোটা ঘটনাটিই ঘটছে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের ঠিক আগে। এই বিষয়টিই উদ্বেগে রাখছে কপিল দেবকে। তিনি বলেন, সৌরভ যেমন বোর্ড সভাপতি তেমনই বিরাট কোহলিও দেশের অধিনায়ক। তবে সৌরভই হোন বা বিরাট, কারোরই উচিত নয় প্রকাশ্যে একে অপরের বিরুদ্ধে বিবৃতি দেওয়া। একে অন্যের দিকে এভাবে আঙুল তোলা একেবারেই উচিত নয়। সামনে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর, সেদিকেই নজর দেওয়া হোক। এখন যা হচ্ছে সেটা একেবারেই ঠিক হচ্ছে না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে দেশের ভালো কীসে হয় সেটা নিয়েই ভাবা উচিত। যদি কোনও ভুল কিছু হয়ে থাকে তা পরে জানা যাবে। কিন্তু বিদেশ সফরের আগে এমন পরিস্থিতি মোটেই কাম্য নয়।