মিতালিদের - লজ্জার হারে রেকর্ড ঝুলনের, ছুঁলেন ২৫০ তম উইকেটের মাইলস্টোন
মিতালিদের - লজ্জার হারে রেকর্ড ঝুলনের, ছুঁলেন ২৫০ তম উইকেটের মাইলস্টোন
ব্যক্তিগত নজির গড়েই চলেছেন ঝুলন গোস্বামী। এই নিয়ে বিশ্বকাপে পরপর চারটি ম্যাচে রেকর্ডের খাতায় নাম লেখালেন তিনি। দল হারলেও ফের রেকর্ড করলেন চাকদহ এক্সপ্রেস। বিশ্বকাপ শুরুতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দুই উইকেট নেন। বিশ্বকাপের ইতিহাসে সব থেকে বেশি উইকেটশিকারিদের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসেন ঝুলন। ম্যাচে তিনি পেরিয়ে যান ইংল্যান্ডের ক্যারল হজেসকে। পরের ম্যাচ নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ছিল। ইনিংসের একেবারে শেষ ওভারে ঝুলন কেটি মার্টিনকে ফিরিয়ে যুগ্মভাবে মহিলা বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির তালিকায় চলে আসেন।
ভারতীয় পেস তারকা বসে পড়েন অস্ট্রেলিয়ার লিন ফুলস্টোনের পাশেই। বিশ্বকাপের তৃতীয় ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের আনিসা মহম্মদকে ফিরিয়ে ওয়ান ডে বিশ্বকাপে সব থেকে বেশি উইকেট নেওয়া বোলার হয়ে যান। ৩৯ বছরের পেসার বিস্বকাপে নিয়ে নেন ৪০ তম উইকেট।
আজকের ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধেও রেকর্ডের ধারা অব্যাহত। এবার ট্যামি বিউমন্টকে ফিরিয়ে মেয়েদের ওয়ান ডে ক্রিকেটে প্রথম বোলার হিসেবে ২৫০ উইকেটের মালিক হন ঝুলন। বিশ্বের আর কোনও মহিলা বোলার ২০০-র ঘরেই ঢুকতে পারেননি।
এদিকে দল আইসিসি মহিলা বিশ্বকাপ ২০২২ মোটেই ভালো খেলছে না। একবার খুব ভালো খেলেই পরের ম্যাচে ভরাডুবি অব্যাহত রইল। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে উড়িয়ে নিজেরাই উড়ে গেল তিন ম্যাচ হেরে আসা ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে। একই ঘটনা ঘটেছিল নিউজিল্যান্ড ম্যাছেও। প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দুরন্ত জয় দিয়ে অভিযান শুরু করে কিউইদের বিরুদ্ধে বিশ্রী হার। এদিনও সেটাই করল টিম মিতালি।
২০১৭ সালে বিশ্বকাপ ফাইনালের বদলা তো দূর লড়াই হল না। লজ্জাজনক হারের মুখ দেখতে হল ভারতকে। আসলে মাত্র ১৩৪ রানের পুঁজি নিয়ে ম্যাচ জেতা যায় না। সেটাই হয়েছে। বোলাররা চেষ্টা করেছিলেন। ৬ উইকেট ফেলেছিলেন। অন্তত বোর্ডে ২০০ রান থাকলে না হয় কিছু করা যেত। ওই রান নিয়ে ম্যাচ জেতা যায় না বিশেষ অঘটন ছাড়া। হয়েছেও তাই। শেষ পর্যন্ত ১৮ ওভার ৪ বল বাকি থাকতে ৪ উইকেটে জয় তুলে নেয় হেদার নাইটের দল।
অথচ আগের ম্যাচেই কী দুরন্ত পারফর্মেন্স ভারতীয় দলের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে দুরন্ত জয়। স্মৃতি মন্ধনা, হরমনপ্রীত কউরের সেঞ্চুরি , বোলারদের অনবদ্য বোলিং। হইহই ব্যপার। উড়ে গিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কেউ বলবে না এই দল সেই দলই। ছন্দ তো নেই পুরো ছন্নছাড়া।
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিধ্বস্ত ভারতীয় দল, নাইট বাহিনীর বিরুদ্ধে ৪ উইকেটে পরাজিত মিতালির দল
এদিন টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক। বোলারদের দাপটের সামনেপ্রথম থেকেই উইকেট হারাতে থাকে ভারতীয় দল। স্মৃতি মন্ধনা ৩৫ ও রিচা ঘোষ ৩৩ করেছিলেন। শেষে ঝুলনের ২০। তা নিয়েই লজ্জাজনক স্কোর ১৩৪ এ পৌঁছায় দল। লজ্জার রেকর্ড কারণ ২০০৯ বিশ্বকাপের পর এত কম রান করল ভারত।
সিডনিতে ২০০৯ শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ৫০ ওভার খেলে ৭ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১৩৭ রান করেছিল টিম ইন্ডিয়া। এ লজ্জার ১৩৪ রানেই অল আউট।৩৬.২ ওভারে ১৩৪ রানে অলআউট হয়ে যায় ভারতীয় দল। ইংল্য়ান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন চার্লি ডিন। এছাড়া দুটি উইকেট অ্যানায়া শ্রুবসোলে, একটি করে উইকেট নেন সোফি এক্লিসটোন ও ক্যাটে ক্রস।
রান তাড়া করতে ৫ রানের মধ্যে ২ উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়লেও ইংরেজ ইনিংসের রাশ ধরেন হেদার নাইট ও ন্য়াট স্কিভার। দুজন মিলে ৬৫ রানের পার্টনারশিপ করে দলকে শক্ত ভিতের উপর দাঁড় করিয়ে দেয়। ৬৯ রানে তৃতীয় উইকেট পড়ে ইংল্য়ান্ডের। ৪৫ রান করে আউট হন স্কিভার। এরপর একদিক থেকে অদিনায়র হেদার নাইট অধিনায়কোচিত ইনিংস খেললেও অপরদিকে কেউ আর ক্রিজে বেশি সময় দাঁড়াতে পারেনি।
অ্যামি জোনস করেন ১০ রান, সোফিয়া ডাঙ্কলে করেন ১৭ রান। খাতাই খুলতে পারেননি ক্যাথসিন ব্রান্ট। অপরদিকে নিজের অর্ধশতরান পূরণ করেন হেদার নাইট। শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেট হারিয়ে জয়ের লক্ষ্যে পৌছে যায় ইংল্যান্ড। ৫৩ রানে অপরাজিত থাকেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক। এই হারের ফলে ৪ ম্য়াচে ৪ পয়েন্ট লিগগ টেবিলের তৃতীয় স্থানে ভারত। পিছনে নিউজিল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ।