জসপ্রীত বুমরাহকে নিয়ে ঝুঁকি নেবে না বিসিসিআই, পিঠের চোট কি কেরিয়ার থামিয়ে দেওয়ার মতো?
টি ২০ বিশ্বকাপের আগে জসপ্রীত বুমরাহর চোট ভারতীয় শিবিরে বড় ধাক্কা দিয়েছে। পরিস্থিতি যেদিকে এগোচ্ছে তাতে টি ২০ বিশ্বকাপ থেকে তাঁর ছিটকে যাওয়ার ঘোষণা সময়ের অপেক্ষা মাত্র। আজই বিসিসিআই জানিয়েছে, বুমরাহ পিঠের চোটের কারণে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টি ২০ সিরিজের বাকি দুটি ম্যাচেও খেলতে পারবেন না। তিনি বিসিসিআইয়ের মেডিক্যাল টিমের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন।
বুমরাহর চোট
বুমরাহর কেরিয়ারে চোট সমস্যা নতুন নয়। যে কারণে ২০১৮ সালে তাঁর টেস্ট অভিষেকেও দেরি হয়। বর্তমানে বুমরাহ-র যে লোয়ার ব্যাক স্ট্রেস ফ্র্যাকচার হয়েছে তা আগের জায়গাতেই ফের চোট লাগা বলে জানা যাচ্ছে। কেউ এ বিষয়ে সরাসরি মুখ না খুললেও বিভিন্ন মাধ্যমে জানা যাচ্ছে, বিশ্রামের পর মাঠে ফিরতে তাড়াহুড়ো করাতেই পরিস্থিতি জটিল হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টি ২০ সিরিজে বুমরাহ প্রথম ম্যাচে খেলেননি। পরের দুটি ম্যাচে খেলেন। কিন্তু তারপরই চোটের কারণে ছিটকে যাওয়া প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে টি ২০ সিরিজ থেকে। এমনকী টি ২০ বিশ্বকাপ থেকেও ছিটকে যাওয়া কার্যত নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে।
আগে থেকেই সমস্যা
২০১৯ সালেও মাস পাঁচেক মাঠের বাইরে ছিলেন বুমরাহ। তখন বিসিসিআই জানিয়েছিল, সামান্য চোট রয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে টসের কয়েক মিনিট পর বিসিসিআই জানায়, মঙ্গলবার অনুশীলনে বুমরাহ পিঠে যন্ত্রণার কথা বলেন। এরপরই তাঁর চোট পর্যবেক্ষণ করছেন বিসিসিআইয়ের মেডিক্যাল টিমের বিশেষজ্ঞরা। এক সংবাদসংস্থায় বোর্ডের এক কর্তা জানিয়েছেন, বুমরাহর চোট কতটা গুরুতর তা বোঝা যাবে লোয়ার ব্যাকের স্ক্যান রিপোর্ট এলেই। তবে আর কোনও ঝুঁকি নেওয়া হবে না। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা যতদিন তাঁকে মাঠের বাইরে থাকার পরামর্শ দেবেন, সেটাই মেনে চলা হবে।
বিশ্রামই উপায়
আইসিসির মেডিক্যাল অ্যাডভাইসরি কমিটির সদস্য ডা. দিনশ পার্দিওয়ালা এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে বলেন, পিঠে স্ট্রেস ফ্র্যাকচার কারও কেরিয়ারকে সংশয়ে ফেলা বা কেরিয়ার শেষ করে দেওয়ার মতো চোট নয়। বিশ্রাম এবং রিহ্যাবের মাধ্যমেই এই চোট সমস্যা কাটিয়ে ওঠা যায়। একেবারে স্বাভাবিক ছন্দ ফিরে পেতেও অসুবিধা হয় না। স্ট্রেস রিয়্যাকশন সারতে বেশি সময় লাগে না। কিন্তু স্ট্রেস ফ্র্যাকচার পুরোপুরি সারতে অনেকটাই সময় লাগে। চোট সেরে ওঠার প্রক্রিয়াও চলে মন্থরভাবেই। প্রথমে চোটের জায়গায় কোনও লোড দেওয়া যায় না। সেরে উঠলে ধীরে ধীরে লোড বাড়াতে হয়। এই ধরনের চোটের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়াটা সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ।
তড়িঘড়ি মাঠে নামতে নিষেধ
পারদিওয়ালার চিকিৎসা করেছেন নীরজ চোপড়া, সাইনা নেহওয়াল, রবীন্দ্র জাদেজার মতো ক্রীড়াবিদদের। বুমরাহ-র যে চোট রয়েছে তাতে যন্ত্রণা কমানোর ওষুধ খেয়ে মাঠে খেলতে নামা উচিত নয় বলে সতর্ক করে দিয়েছেন এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। তাঁর কথায়, পেইনকিলার খেয়ে মাঠে নামলে প্রথমত কেউ নিজের সেরাটা দিতে পারবেন না। সর্বোপরি চোটের অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যাবে। এই চোটের সম্পর্কে যেটা জানা যাচ্ছে তা হলো, পেসারদের লোয়ার ব্যাকে স্ট্রেস ফ্র্যাকচার হয়। যে হাত দিয়ে তিনি বল করেন তার উল্টোদিকে এই চোট লাগে। সাধারণ ফ্র্যাকচারের ক্ষেত্রে চোটের জন্য হাড় ভেঙে যায়। কিন্তু স্ট্রেস ফ্র্যাকচার তা নয়। সামান্য চোট সপ্তাহ বা মাসের পর মাস ধরে বাড়তে বাড়তে স্ট্রেস ফ্র্যাকচারের আকার নেয়। এর নিরাময়ের একমাত্র পথ বিশ্রাম। অপারেশন নয়। এখানেই থাকছে প্রশ্ন। চোটপ্রবণ বুমরাহর ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টেই কি তবে খামতি থেকে গেল?
শেন ওয়াটসন বেছে নিলেন টি ২০ বিশ্বকাপের দুই ফেভারিটকে, অস্ট্রেলিয়া কেন বাড়তি সুবিধা পাবে?