টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ স্থগিত হওয়ার পরও কি ধোনির আন্তর্জাতিক প্রত্যাবর্তন সম্ভব?
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ স্থগিত হওয়ার পরও কি ধোনির আন্তর্জাতিক প্রত্যাবর্তন সম্ভব?
করোনা ভাইরাসের জেরে স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। তাতে ক্রিকেট প্রেমীদের হতাশ হওয়ার কারণ অবশ্য দ্বিমুখী। প্রথমত, ১৬টি দেশের ব্যাট-বলের লড়াই দেখতে অপেক্ষা আরও এক বছরের। একই সঙ্গে কিংবদন্তি মহেন্দ্র সিং ধোনির আন্তর্জাতিক প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনাও যে কার্যত বিশ বাঁও জলে ডুবে গিয়েছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে কি? ধোনি-ভক্তরা স্বপ্ন দেখলেও তা পূরণ হবে বলে মনে করছেন না ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু কেন তা জেনে নেওয়া যাক।
বয়স বালাই
২০১৯ সালের বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের জার্সিতে শেষবার বাইশ গজে নেমেছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। ভক্তরা যতই দাবি করুন, ৩৯ বছরের মাহির শরীরে সেই পুরনো ক্ষিপ্রতা যে আর আগের মতো নেই, তা স্পষ্ট। উল্টে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্য়াচে হার্ড হিটার ধোনির মন্থর ব্যাটিং সমালোচিত হয়েছিল। তা নিয়ে কথা ওঠে এখনও।
ভারতীয় দলের তরুণদের ভিড়
মহেন্দ্র সিং ধোনির শূন্যস্থান পূরণের জন্য ভারতীয় দলে বর্তমানে ঋষভ পন্থের মতো তরুণ উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান উপস্থিত রয়েছে। আন্তর্জাতিক স্তরে এখনও নিজেকে সেভাবে প্রমাণ করতে না পারলেও পন্থের প্রতিভার বিস্ফোরণ ঘটবে বলেই বিশ্বাস ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের। পাশাপাশি ব্যাটসম্যান কেএল রাাহুল ভারতীয় দলে যেভাবে দক্ষতার সঙ্গে উইকেটরক্ষকের ভূমিকা পালন করছেন, তাতে মুগ্ধ হয়েছেন ক্রিকেট প্রেমীরা। এরপরেও কিংবদন্তি এমএস ধোনিকে জায়গা করে দিতে হলে তরুণদের সঙ্গে অবিচার করা হবে বলে মনে করেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা।
দীর্ঘদিন ক্রিকেটের বাইরে ধোনি
এক বছরেরও বেশি সময় আগে শেষবার বাইশ গজে দেখা গিয়েছিল মহেন্দ্র সিং ধোনিকে। ২০১৯-এর ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচ খেলেছিলেন ভারতের সর্বকালের সেরা ক্রিকেট অধিনায়ক। দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে ধোনির শরীর আন্তর্জাতিক স্তরে ক্রিকেট খেলার জন্য কতটা তৈরি, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা।
করোনার থাবা
চলতি বছরের ২৯ মার্চ থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল আইপিএল। সেই মতো প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। চেন্নাইয়ের চিপক স্টেডিয়ামে সিএসকে ক্রিকেটারদের সঙ্গে অনুশীলনও শুরু করেছিলেন ক্যাপ্টেন কুল। আইপিএলে ভালো পারফরম্যন্স দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ধোনি কামব্যাক ঘটাবেন বলে ভেবেছিলেন তাঁর ভক্তরা। কিন্তু করোনা ভাইরাসের জেরে টুর্নামেন্ট স্থগতি হয়ে যাওয়ায় অনুশীলনও বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিশ বাঁও জলে ডুবে যায় এমএসের প্রত্যাবর্তন।
ঘরবন্দি ধোনি
করোনা ভাইরাসের আবহে মহেন্দ্র সিং ধোনিকে ক্রিকেট থেকে দূরে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটাতে দেখা গিয়েছে। কখনও ট্র্যাক্টর চালিয়ে নিজের ফার্মে চাষাবাদে মেতে থাকতে দেখা গিয়েছে ক্যাপ্টেন কুলকে। এই দীর্ঘ সময়ে তাঁকে ব্যাট হাতে নেটে নামতে কখনওই দেখা যায়নি।
ধোনি না থাকলে ভারতীয় ক্রিকেটে কোন কোন ঘটনা ঘটতই না, দেখুন তালিকা
সোশ্যাল মিডিয়ায় জল্পনা
মহেন্দ্র সিং ধোনির নীরবতা দেখে তাঁর অবসর নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় জল্পনা তোলেন নেটিজেনদের একটা অংশ। এর কড়া জবাব দেন ধোনির স্ত্রী সাক্ষী সিং। ধোনির মধ্যে এখনও অনেক ক্রিকেট বাকি রয়েছে বলে দাবি করেন তাঁর শৈশবের কোচ এবং বন্ধুও।
টিম ইন্ডিয়ার প্রস্তুতি শিবিরে ধোনি?
আগামী ডিসেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তাদের মাঠে টেস্ট খেলবে ভারতীয় ক্রিকেট দল। তার আগে দীর্ঘদিনের জড়তা কাটাতে বিরাট কোহলিদের জন্য প্রস্তুতি শিবির আয়োজন করতে চলেছে বিসিসিআই। সেই শিবিরে মহেন্দ্র সিং ধোনিকে দেখা যেতে পারে বলে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে।
ধোনির ম্যাচ জেতানো কিছু ওয়ান ডে ইনিংসগুলির দিকে নজর ফেরানো যাক
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে পাখির চোখ!
ঘটনাক্রম প্রত্যক্ষ করে ক্রিকেট প্রেমীদের মধ্যে ধারণা তৈরি হয়, তবে হয়তো ২০২০ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই ভারতীয় দলের জার্সি গায়ে ফের মাঠে দেখা যাবে এমএস ধোনিকে। করোনা ভাইরাসের জেরে টুর্নামেন্ট স্থগিত হয়ে যাওয়ায়, তা আর যে সম্ভব নয়, তা বলার অপেক্ষা রাখে কি!
কী বলছেন প্রাক্তনীরা
মহেন্দ্র সিং ধোনির আন্তর্জাতিক প্রত্যাবর্তন নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত হয়েছে দেশের ক্রিকেট মহল। একাংশের মতে, বর্তমান ভারতীয় দলে আর মানানসই নন ৩৯ বছরের এমএস। অন্য অংশের দাবি, ফিটনসে এখনও দলের তরুণ ক্রিকেটারদের টেক্কা দিতে পারেন ক্যাপ্টেন কুল। তাই ধোনি চাইলেই জাতীয় দলে ফিরতে পারেন বলে মনে করেন কেউ কেউ।
আদৌ আর খেলবেন কি ধোনি?
এমএস ধোনির আন্তর্জাতিক প্রত্যাবর্তন নিয়ে যখন তর্ক-বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে, তখন অন্য একটা অংশের তরফে দাবি করা হয়েছে, মাহি নিজেই নাকি আর জাতীয় দলে ফিরতে চাইছেন না। আর মেরেকেটে দুটি আইপিএল খেলে ধোনি ক্ষান্ত হবেন বলে মনে করে ক্রিকেট মহলের একটা অংশ। যদিও গোটা বিষয়টি এখন এমএসের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে।
লকডাউনের পর ক্রিকেটে ফিরলে কোন কোন রেকর্ডের মালিক হতে পারেন এমএস ধোনি