IPL 2022: বিরাট-সাঙ্গওয়ান দ্বৈরথে ফিরল ২০০৮-এর স্মৃতি! গুজরাতের সামনে ১৭১ রানের টার্গেট দিল আরসিবি
আইপিএলের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে গুজরাত টাইটান্সের সামনে জয়ের জন্য ১৭১ রানের লক্ষ্যমাত্রা দিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৭০ রান তুলেছে ফাফ দু প্লেসির দল। বিরাট কোহলি ৫৮ ও রজত পাতিদার ৫২ রান করেন। ৪ বছর পর আইপিএলে ফিরে প্রদীপ সাঙ্গওয়ান নিয়েছেন ২টি উইকেট।
ধাক্কা সামলালেন বিরাট-পাতিদার
টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আরসিবি অধিনায়ক ফাফ দু প্লেসি। ১.৫ ওভারে তিনি প্রদীপ সাঙ্গওয়ানের বলে কট বিহাইন্ড হন। ৪ বল খেলে কোনও রান করতে পারেননি। এরপর বিরাট কোহলি ও রজত পাতিদার মিলে ৯৯ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। পাওয়ারপ্লে-র ৬ ওভারে স্কোর ছিল ১ উইকেটে ৪৩। বিরাট ও পাতিদারের জুটিতে ৫০ রাব আসে মাত্র ৪৫ বলে। ১২.১ ওভারে ১০০ রান পূর্ণ হয় আরসিবির। দ্বিতীয় স্ট্র্যাটেজিক টাইম আউটে ১৩ ওভারে স্কোর ছিল ১ উইকেটে ১০২। ১৫তম ওভারের প্রথম বলে পাতিদারের উইকেটটিও তুলে নেন সাঙ্গওয়ান। ২৯ বলে অর্ধশতরান পূর্ণ করার পর পাতিদার আউট হন ৩২ বলে ৫২ রানে। তিনি পাঁচটি চার ও দুটি ছয় মেরেছেন।
সর্বাধিক স্কোর কোহলির
চলতি আইপিএলে প্রথম তথা আইপিএল কেরিয়ারের ৪৩তম অর্ধশতরানটি বিরাট কোহলি পূর্ণ করেন ৪৫ বলে। প্রথম ম্যাচে পাঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে অপরাজিত ছিলেন ৪১ রানে। কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে ১২, রাজস্থান রয়্যালস ম্যাচে ৫, মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে ৪৮, চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে ১ ও দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে ১২ রানে আউট হয়েছিলেন কোহলি। এরপর লখনউ সুপার জায়ান্টস ও সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে দুটি গোল্ডেন ডাক। ফর্মে ফেরাতে রাজস্থান রয়্যালস ম্যাচে ওপেন করতে পাঠানো হয় বিরাটকে, সেই ম্যাচেও ৯ রানের বেশি করতে পারেননি। তবে এবারের আইপিএলে দ্বিতীয়বার ওপেন করতে নেমে ফিরলেন চেনা ছন্দে। ৫৩ বলে ৫৮ রান করে মহম্মদ শামির বলে বোল্ড হন কোহলি। তাঁর ইনিংসে রয়েছে ৬টি চার, যার প্রথম দুটি প্রথম ওভারে শামির বলেই। এ ছাড়া লকি ফার্গুসনের বলে একটি ছক্কাও মারেন বিরাট। অর্ধশতরান পূর্ণ করার পর বিরাটকে জড়িয়ে ধরে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মহম্মদ শামি। উল্লেখ্য, সোশ্যাল মিডিয়ায় শামি যখন কটাক্ষে বিদ্ধ হয়েছিলেন তখন তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে সমালোচকদের পাল্টা আক্রমণের রাস্তা বেছে নিয়েছিলেন তৎকালীন ভারত অধিনায়ক।
|
কামব্যাকে নজর কাড়লেন সাঙ্গওয়ান
ক্রিকেটপ্রেমীরা আজ গুজরাত টাইটান্স বনাম আরসিবি ম্যাচে স্মৃতিমেদুরও হয়ে পড়লেন। আরসিবির হয়ে যেখানে দুরন্ত ছন্দে পাওয়া গেল বিরাট কোহলিকে, তেমনই গুজরাত টাইটান্সের হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই নজর কাড়লেন প্রদীপ সাঙ্গওয়ান। উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে বিরাট কোহলির নেতৃত্বাধীন অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য ছিলেন তিনি। সেবার প্রথম আইপিএলের আগে ড্রাফট পিকের মাধ্যমে নেওয়া হয়েছিল অনূর্ধ্ব ১৯ ক্রিকেটারদের। প্রথম সুযোগ পেয়ে দিল্লি ডেয়ারডেভিলস নেয় সাঙ্গওয়ানকে। এর ঠিক পরেই বিরাট কোহলিকে নিয়েছিল আরসিবি। ২০০৭-০৮ রঞ্জি মরশুমে ৩৩ উইকেট নিয়ে তিনি অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপের দলে ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ৪৪ রানে ৫ উইকেট-সহ বিশ্বকাপে ৮টি উইকেট নেন। দিল্লি ফ্র্যাঞ্চাইজির পাশাপাশি কলকাতা নাইট রাইডার্স, গুজরাত লায়ন্সের হয়েও আইপিএল খেলেছেন সাঙ্গওয়ান। ২০১৮ সালে শেষবার মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে একটি ম্যাচ খেলেছিলেন। আজ কামব্যাকেই নজর কাড়লেন। চার ওভারে ১৯ রান দিয়ে পেলেন ২টি উইকেট।
কোহলি শামির শিকার
বিরাট কোহলি শামির বলে আউট হলে ১৬.৪ ওভারে আরসিবির স্কোর দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ১২৯। ১৭.৩ ওভারে দীনেশ কার্তিকের উইকেটটি তুলে নেন রশিদ খান। ৩ বলে ২ রানের বেশি করতে পারেননি ডিকে। ১৮.৩ ওভারে দলের ১৫০ রানের মাথায় আউট হন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। লকি ফার্গুসনের বলে তাঁর ক্যাচ দারুণভাবে তালুবন্দি করেন রশিদ খান। তিনটি চার ও দুটি ছয়ের সাহায্যে ম্যাক্সওয়েল করেন ১৮ বলে ৩৩। শেষ ওভারে নাটকীয় ঘটনা ঘটে। আলজারি জোসেফের বলে মহীপাল লোমররের ক্যাচ ডেভিড মিলারের হাতে জমা পড়লেও তা টেলিভিশন সম্প্রচারের জন্য ব্যবহৃত তারে লাগায় বলটি ডেড বল ঘোষিত হয়। যদিও শেষ বলে লোমরর জোসেফের শিকার হন ৮ বলে ১৬ রান করে। মহম্মদ শামি, রশিদ খান, আলজারি জোসেফ ও লকি ফার্গুসন নিজেদের ৪ ওভারে যথাক্রমে ৩৯, ২৯, ৪২ ও ৩৬ রান দিয়ে একটি করে উইকেট দখল করেন।