IPL 2022: আইপিএলে নজির গড়া এই ক্রিকেটার অদূর ভবিষ্যতেই ভারতীয় দলে! কার কথা বললেন রোহিত?
আইপিএল থেকে ইতিমধ্যেই ছিটকে গিয়েছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। তবে এই হতাশাজনক মরশুমেও রোহিত শর্মার দলের যে ক্রিকেটাররা নজর কেড়েছেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম তিলক বর্মা। ব্যাট হাতে পরিণত ও দায়িত্বশীল ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়েছেন গতকাল চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধেও। তারই ফাঁকে গড়েছেন অনন্য নজির। তিলকের প্রশংসায় পঞ্চমুখ রোহিত শর্মাও।
|
তিলকের নজির
আইপিএলে যে কোনও মরশুমে টিনএজারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রান করার নজির গড়েছেন তিলক। চলতি আইপিএলে এখনও অবধি ১২টি ম্যাচে তিনি ৩৬৮ রান করেছেন। তিনবার অপরাজিত থেকেছেন। সর্বাধিক স্কোর ৬১, গড় ৪০.৮৯, স্ট্রাইক রেট ১৩২.৮৫। দুটি অর্ধশতরানও করেছেন। ২০১৭ সালের আইপিএলে ঋষভ পন্থ দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের হয়ে করেছিলেন ১৪ ম্যাচে ৩৬৬, ২০১৯ সালে দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে পৃথ্বী শ ১৬ ম্যাচে করেছিলেন ৩৫৩ রান। ২০১৪ সালে রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে সঞ্জু স্যামসন ১৩ ম্যাচে করেন ৩৩৯। ১৯ বছরের হায়দরাবাদি তিলক সিএসকে ম্যাচে সেই নজিরগুলি টপকে গিয়েছেন।
|
উচ্ছ্বসিত রোহিত
২০২০ সালে অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য তিলককে এবারই দলে নিয়েছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। তাঁর ব্যাটিং দেখে উচ্ছ্বসিত রোহিত শর্মা বলেন, প্রথম বছরেই অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন তিলক। ঠাণ্ডা মাথায় এমনভাবে খেলা সহজ ব্যাপার নয়। আমি তো মনে করি, অদূর ভবিষ্যতে ভারতের তিন ফরম্যাটের দলেই তিলক জায়গা করে নেবেন। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলার জন্য যে টেকনিক, টেম্পারামেন্ট দরকার হয়, তিলকের সবই আছে। অনেক উজ্জ্বল দিক রয়েছে তাঁর মধ্যে, রয়েছে সাফল্যের খিদেও। যখনই তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছে দেখেছি, ভালো করা, ম্যাচ ফিনিশ করা, সাফল্য এনে দেওয়ার খিদে তিলকের মধ্যে রয়েছে। সঠিক পথেই তিনি রয়েছেন। এভাবেই প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে হবে। প্লেয়ার হিসেবে তিলক নিজেকে আরও কতটা উন্নত করছেন সেদিকেও নজর রাখতে চান রোহিত।
ভরসা দিচ্ছেন মুম্বইকে
সূর্যকুমার যাদবের অনুপস্থিতিতে তিলক বর্মা যেভাবে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে ভরসা দিয়েছেন তাতে খুশি অনেকেই। এমআই টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিলক বলেছেন, নিলামের প্রথম দিন থেকেই টিভির সামনে বসে ছিলাম। স্ক্রিনে কখন আমার নাম ভেসে উঠবে তার অপেক্ষায়। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সে যখন সুযোগ পাই, সেটা ছিল স্বপ্নপূরণের মুহূর্ত। ছোটবেলা থেকে রোহিত স্যর, সচিন স্যরকে দেখেছি। কামব্যাক করা, যে কোনও পরিস্থিতি থেকে ম্যাচ জেতা নিশ্চিত করতে দক্ষ বলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে বরাবরই আমার ভালো লাগে। মাহেলা স্যর, সচিন স্যরদের মতো কিংবদন্তিরা রয়েছেন এই দলের সঙ্গে। সেখানে খেলার সুযোগ পেয়ে আমি ভাগ্যবান। এখানে সুযোগ পাওয়ায় অনেক কিছু শিখছি। সেগুলি ম্যাচে প্রয়োগও করছি।
জাতীয় দলের দরজা খোলার অপেক্ষা
তিলক আরও জানিয়েছেন, ১১ বছর বয়স থেকে ক্রিকেট খেলা শুরু তাঁর। কোচ সালাম বায়াসকেই তাঁর জীবনের প্রধান ব্যক্তি বলে অভিহিত করে তিলক বলেন, তিনিই আমাকে ক্রিকেট খেলতে উদ্বুদ্ধ করেছেন, শিখিয়েছেন কোন পরিস্থিতিতে কীভাবে খেলতে হয়। আমার জীবনে তাঁর গুরুত্ববপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তিনি না থাকলে আজ আমার ক্রিকেট খেলা সম্ভব ছিল না। রোহিত শর্মার সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতের বিষয়ে তিলক বলেন, যখন সামনাসামনি রোহিত শর্মাকে দেখি বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না। তাঁর সঙ্গে আলিঙ্গন করে শ্রদ্ধা জানাতে চাইলেও নার্ভাস হয়ে পড়েছিলাম। কথা বলার সময় কিছুটা ভয়ও লাগছিল। যদিও নিজের পারফরম্যান্সে রোহিতের মন জিতে নিয়েছেন। দল গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে অধিনায়কের ইনপুট। ফলে তিলক দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজেই সুযোগ পান কিনা সেটা দেখার। কেন না, রবীন্দ্র জাদেজা, সূর্যকুমার যাদবরা এই সিরিজে নেই। বিশ্রাম দেওয়া হতে পারে বিরাট কোহলিকেও। এই পরিস্থিতিতে তিলকের সামনে জাতীয় দলের দরজা খুলবে কি?