IPL 2022: রশিদ খান আবিষ্কৃত স্নেক শটের ভিডিও ভাইরাল! উচ্ছ্বসিত হার্দিক জানতে চাইলেন ফিনিশারদের সাফল্যের রহস্য
আইপিএলের প্লে অফ কার্যত নিশ্চিত করে ফেলেছে হার্দিক পাণ্ডিয়ার গুজরাত টাইটান্স। ৬টি ম্যাচের একটিতে জিতলেই ইডেনের টিকিট পাকা হয়ে যাবে। প্রথম দল হিসেবে এবারের আইপিএলে ১৪ পয়েন্টে পৌঁছে গিয়েছে গুজরাত টাইটান্স। আর তা সম্ভব হয়েছে রশিদ খান ও রাহুল তেওয়াটিয়ার বিস্ফোরক ফিনিশিংয়ে। ১৬ ওভারে ১৪০ রানে পড়েছিল পঞ্চম উইকেট। ফলে চার ওভারে লাগত ৫৬। ২৩ বলে ৫০ পূর্ণ করা অবিচ্ছেদ্য জুটিতে শেষ চার বলে তিনটি ও শেষ দুই বলে জোড়া ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ জেতান রশিদ খান ও রাহুল তেওয়াটিয়া। ২১ বলে ৪০ রানে তেওয়াটিয়া ও ১১ বলে ৩১ করে অপরাজিত থাকেন রশিদ।
আত্মবিশ্বাসী জয়ের তৃপ্তি
রশিদ খান জানান, শেষ ওভারে ২২ রান দরকার ছিল। আমি রাহুল তেওয়াটিয়াকে বলি আমাদের সেরা বোলার লকি ফার্গুসন শেষ ওভারে যদি ২৫ রান দেন, আমরাও তেমনটাই করতে পারব, এই বিশ্বাসটাই রাখতে হবে। একটা বল মিস করলেও সেটা নিয়ে ভাবার দরকার নেই। প্যানিকড হওয়া চলবে না। মানসিকভাবে শক্তিশালী থেকে পরের বলে বড় শট খেলার চেষ্টা করতে হবে এবং ম্যাচ ফিনিশ করেই মাঠ ছাড়ব। আর যদি জয় নাও আসে তাতেও প্রতিপক্ষের রানের কাছাকাছি পৌঁছাতেই হবে। তা নেট রান রেটের ক্ষেত্রে সুবিধা দেবে। দু-রকম সম্ভাবনা সম্পর্কে অবহিত থেকে ক্রিজে থেকে বড় শট খেলারই পরিকল্পনা ছিল রাহুল ও রশিদের। চারটি ছয় মারতে পেরে দলকে জিতিয়ে তাই দুজনেই তৃপ্ত।
স্নেক শট
অধিনায়ক হার্দিক পাণ্ডিয়া রশিদ খানের ট্রেডমার্ক শটের বিষয়ে রশিদ খানের কাছে জানতে চেয়েছিলেন। ধোনির যেমন রয়েছে হেলিকপ্টার শট, তেমনই রশিদ খান তাঁর বিশেষ ধরনের শটটির নাম দিয়েছেন স্নেক শট। সাপ যেমন ছোবল মারে তেমন। তাঁর কথায়, শরীরের কাছাকাছি ধেয়ে আসা কোনও বল, বিশেষ করে ফুল লেংথ ডেলিভারি, তাতে বড় শট খেলতে আমার পজিশনের জন্য কিছু অসুবিধা হয়। তাই কব্জির জোর বাড়িয়ে এই শট বছর দুয়েক হলো রপ্ত করেছি। এই শটে বল মাঠের বাইরে পাঠাতে সক্ষম হই। হার্দিক রশিদকে বলেন, শটের নাম যাই হোক, এমন ব্যাটিংই চালিয়ে যেতে হবে। রশিদ আরও বলেন, এই ম্যাচে বল হাতে ভালো করতে পারেনি। লাইন ও লেংথ ঠিক হয়নি বলে ব্যাটাররা বড় শট খেলেছেন। কিন্তু এর থেকেই শিক্ষা নিয়ে পরের ম্যাচগুলিতে নামব।
সিচুয়েশন প্র্যাকটিসেই সাফল্য
রাহুল তেওয়াটিয়া আইপিএলে তাঁর দলকে এর আগেও অনেক কঠিন পরিস্থিতি থেকে ম্যাচ জিতিয়েছেন মাথা ঠাণ্ডা রেখে। এদিনের জয়ের পর তিনি বলেন, রশিদ ভাই শেষ ওভারে বলেছিলেন এই রান তুলে ফেলা সম্ভব। আমি তখন তাঁকে বলি, প্রথম বলে ছক্কা মারতে পারলেই আমরা লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেতে পারব। ফলে প্রথম বলে ছক্কা মারি, তারপর দেখা যাক কী হয়। হরিয়ানার হয়েও পাঁচে ব্যাট করি। এমন পরিস্থিতিতে রাজ্য দলের হয়েও খেলেছি। আইপিএলে ফিনিশারের ভূমিকায় বছর দুয়েক আগেও সফল হয়েছিলাম। হরিয়ানা তো বটেই, আইপিএল চলাকালীন অনুশীলনেও এমন পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যাটিং প্র্যাকটিস করি। বিশেষ করে ডেথ ওভারের কথা মাথায় রেখে। শেষ চার-পাঁচ ওভারে ৪০-৫০ রান দরকার হলে ঠিক করে নিতে হবে কোন বোলারের কোন বলগুলিকে টার্গেট করতে হবে।
|
ফিনিশার হিসেবে প্রত্যয়
গতকাল প্রথম বলে ছক্কা মারার পরের বলে এক রান নেওয়া প্রসঙ্গে তেওয়াটিয়া বলেন, রশিদ খান ভালো ব্যাট করছিলেন। এর আগেও তিনি ব্যাট হাতে ম্যাচ ফিনিশ করে আমাদের জিতিয়েছেন। ফলে তাঁর দক্ষতা নিয়ে আমার কোনও সংশয়ই ছিল না। ফলে আমি ঠিক করেছিলাম বাউন্ডারি মারব, আর তা না পারলে সিঙ্গলস নেব। তেওয়াটিয়া হার্দিক পাণ্ডিয়ার প্রশ্নের উত্তরে বলেন, শেষ বলে যদি ইয়র্কারও হতো তাহলেও ম্যাচ সুপার ওভারে যেত না। আমি নিশ্চিত ছিলাম ওই ধরনের বলেও রশিদ ভাই যেভাবে পায়ের মাঝখান দিয়ে শট খেলেন তেমন কিছু করবেন। দৌড়েই প্রয়োজনীয় রান তুলে ফেলার জন্যও প্রস্তুত ছিলাম। অধিনায়ক ও কোচ যেভাবে আস্থা দেখাচ্ছেন সেটাই তাঁকে ভালো খেলার জন্য অনুপ্রাণিত করছে বলে জানান রাহুল তেওয়াটিয়া। প্রত্যয়ী তেওয়াটিয়া বলেন, ফের এমন পরিস্থিতি এলেও দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়ব।