IPL 2022: রজত 'সঙ্কটমোচন' পাটীদারকে নিয়ে গর্বিত সতীর্থ থেকে পরিবার! আরসিবিতে ডাক পেতেই পিছিয়েছে বিয়ে
আইপিএল ক্রিকেটারদের কাছে নিজেদের প্রতিভা মেলে ধরার এক দারুণ মঞ্চ। প্রতি বছরই অনেক ক্রিকেটার নজর কাড়েন। আইপিএল খেলার পর জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার নজিরও রয়েছে। এবার প্লে অফে নায়ক হিসেবে অবতীর্ণ হলেন রজত পাটীদার। জাতীয় দলে না খেলা প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে শতরান করে তিনি অনন্য নজিরও গড়েছেন।
সঙ্কটমোচন পাটীদার
রজত পাটীদারের মধ্যপ্রদেশের হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট এবং ওয়ান ডে দলে অভিষেক হয় ২০১৫ সালে। টি ২০ দলে আসেন ২০১৮ সালে। মধ্যপ্রদেশের বোলার ঈশ্বর পাণ্ডে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে বলেন, রজত আমাদের দলের সঙ্কটমোচন। হনুমানজি যেমন সকল সমস্যা, সঙ্কট থেকে আমাদের রক্ষা করেন তেমনই ক্রিকেট মাঠে রজত করে থাকেন। আগেও তিনি এমন ইনিংস খেলেছেন। কিন্তু সেগুলি টিভিতে দেখা যায়নি। গতকাল রজত আরসিবির হয়ে যে ইনিংসটি খেলেছেন তাতে তাঁকে আরসিবির 'হনুমান' বলাই যায়।
বাঙ্গারের ফোনে ফেরার আশা
গত বছরের আইপিএলে রজত আরসিবির হয়ে চারটি ম্যাচ খেলেছিলেন। তবে এবারের মেগা নিলামে দল পাননি। মার্চ মাসে আরসিবি হেড কোচ সঞ্জয় বাঙ্গার রজতকে ফোন করে বলেন, পরিবর্ত ক্রিকেটার নিতে হলে তাঁকেই নেওয়া হবে। এরপর আরসিবির দুটি ম্যাচ হয়ে যাওয়ার পর লাভনিথ সিসোদিয়ার পরিবর্ত হিসেবে দলে ঢোকেন রজত। বেশ কয়েকটি ম্যাচে কম বলে ঝোড়ো রানও করেন। আত্মবিশ্বাস বাড়ায় গুজরাত টাইটান্সের বিরুদ্ধে অর্ধশতরান। তারপর গতকালের ঐতিহাসিক ইনিংস। প্রথম আনক্যাপড ক্রিকেটার হিসেবে প্লে অফে শতরানের নজির গড়ে দলে নিজের জায়গা পোক্ত করে ফেললেন রজত।
ব্যবসায় নয়, ক্রিকেটেই
রজত পাটীদার ব্যবয়ায়ী পরিবারের সন্তান। সেচের কাজে ব্যবহৃত পাইপ প্রস্তুতকারী সংস্থা রয়েছে তাঁদের। ক্রিকেটে খুব বেশি সুবিধা না হলে রজত ব্যবসার কাজে যুক্ত থাকুন, সেটাই চেয়েছিল তাঁর পরিবার। তবে রজতের ভাবনা ছিল অন্যরকম প্রথম পছন্দ ক্রিকেটই। খুব পরিশ্রমও করতে পারেন। বাঙ্গারের ফোন পাওয়ার পর থেকেই অনুশীলনে ডুবে ছিলেন। মেগা নিলামে দল না পাওয়ার হতাশায় ভেঙে না পড়ে অনুশীলন চালিয়ে যাওয়ার সুফলই যে এবারের আইপিএলে পাচ্ছেন তা স্বীকার করেছেন রজত পাটীদার।
বোলার থেকে ব্যাটার
রজত পাটীদারের ক্রিকেট শুরু হয়েছিল বোলার হিসেবেই। অনূর্ধ্ব ১৫ দলের হয়ে খেলার পর ব্যাটিংয়ে মনোনিবেশ করেন। প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার অময় খুরাশিয়ার প্রশিক্ষণে নিজের ব্যাটিং টেকনিক উন্নত করতে সক্ষম হন রজত। তবে হাঁটুর চোট তাঁর কেরিয়ার নিয়ে সংশয় তৈরি করেছিল। অস্ত্রোপচারও করাতে হয়। তবে ফিট হয়ে মাঠে ফেরার পর ক্রমাগত উন্নতি হতে থাকে রজতের খেলার। অভিষেকের মরশুমেই যেভাবে বিজয় হাজারে ট্রফিতে মহম্মদ শামি, অশোক দিন্দাদের কলকাতাতেই সামলেছিলেন তা ছিল অনবদ্য। তাঁর উল্লেখযোগ্য ইনিংসগুলির মধ্যে রয়েছে ২০১৮-১৯ মরশুমে তামিলনাড়ুর বিরুদ্ধে ১৯৬ রানের ইনিংস।
|
পিছিয়েছে বিয়ে
এবারের মেগা নিলামে দল পাননি রজত। এরপর পরিবার তাঁর বিয়ের দিন ধার্য করে ৯ মে। কিন্তু সেই বিয়ে পিছিয়ে দিতে হয়েছে রজত লাভনিত সিসোদিয়ার জায়গায় ২০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে আরসিবি দলে ঢোকায়। তাঁর বাবা মনোহর পাটীদার বলেন, খুব বড় অনুষ্ঠান নয়। তাই বিয়ের কার্ড ছাপাতে দেওয়া হলেও নিমন্ত্রণ শুরু করা হয়নি। ইন্দোরে হোটেল বুক করা ছিল। আইপিএলের পর রঞ্জি ট্রফি রয়েছে। তাই বিয়ের দিন পিছিয়ে জুলাইয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আপাতত সকলের মতো রজতের পরিবারও চাইছে পাটীদার দাপটেই আইপিএল খেতাব জিতুক আরসিবি।