IPL 2022: গুজরাত টাইটান্সের সঙ্গে কোন তিনটি দল যাবে শেষ চারে? একনজরে আইপিএল প্লে অফের সমীকরণ
আইপিএলের ৭০টি লিগ ম্যাচের মধ্যে ৫০টি হয়ে গিয়েছে। ১৪টি ম্যাচের মধ্যে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর খেলেছে ১১টি, মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ৯টি। বাকি সব দলই এখনও অবধি ১০টি করে ম্যাচ খেলেছে। ইডেনে প্লে অফ খেলতে আসার দৌড়ে সবার আগে রয়েছে গুজরাত টাইটান্স। এ ছাড়া লখনউ সুপার জায়ান্টস ও রাজস্থান রয়্যালসের রয়েছে ১২ পয়েন্ট করে। আরসিবি, দিল্লি ক্যাপিটালস ও সানরাইজার্স হায়দরাবাদ দাঁড়িয়ে ১০ পয়েন্টে। একনজরে দেখে নেওয়া যাক প্লে অফে যেতে হলে কোন দলকে কী করতে হবে?
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ৯ ম্যাচের ৮টিতে পরাস্ত, রোহিত শর্মার দল ইতিমধ্যেই প্লে অফের দৌড় থেকে ছিটকে গিয়েছে। তাদের ম্যাচ বাকি- গুজরাত টাইটান্স (৬ মে), কলকাতা নাইট রাইডার্স (৯ মে), চেন্নাই সুপার কিংস (১২ মে), সানরাইজার্স হায়দরাবাদ (১৭ মে) ও দিল্লি ক্যাপিটালস (২১ মে)। নিজেরা ছিটকে গেলেও অন্য দলগুলির প্লে অফে ওঠার আশায় জল ঢেলে দিতে পারেই পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা। আপাতত মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের ঝুলিতে ৯ ম্যাচে ২ পয়েন্ট, নেট রান রেট মাইনাস (-)০.৮৩৬।
চেন্নাই সুপার কিংস
চেন্নাই সুপার কিংস রয়েছে পয়েন্ট তালিকার নয়ে। চেন্নাই সুপার কিংসও শুধু অঙ্কের হিসেবে সরু সুতোয় ঝুলছে। এমনিতে সিএসকের বিদায় কার্যত নিশ্চিতই হয়ে গিয়েছে। ১০ ম্যাচে তাদের রয়েছে ৬ পয়েন্ট, নেট রান রেট মাইনাস (-) ০.৪৩১। ম্যাচ বাকি- দিল্লি ক্যাপিটালস (৮ মে), মুম্বই ইন্ডিয়ান্স (১২ মে), গুজরাত টাইটান্স (১৫ মে) ও রাজস্থান রয়্যালস (২০ মে)-এর বিরুদ্ধে। আইপিএলের পয়েন্ট তালিকার যা পরিস্থিতি তাতে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে প্লে অফে ওঠা মুশকিল। যদি ১৪ পয়েন্ট নিয়ে কোনও দল শেষ চারে ওঠেও, সেটা হবে নেট রান রেটের নিরিখে। ধোনিরা চারটি ম্যাচ জিতলে পয়েন্ট হবে ১৪। তবে সেক্ষেত্রেও তাদের বিপক্ষে যেতে পারে নেট রান রেট। ফলে আইপিএলে সবচেয়ে সফল দুই দলই এবার ইডেনে আসতে পারবে না।
কলকাতা নাইট রাইডার্স
কলকাতা নাইট রাইডার্স পয়েন্ট তালিকার অষ্টম স্থানে রয়েছে ১০ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে, নেট রান রেট ০.০৬০। শ্রেয়স আইয়াররা মুখোমুখি হবেন লখনউ সুপার জায়ান্টস (৭ মে), মুম্বই ইন্ডিয়ান্স (৯ মে), সানরাইজার্স হায়দরাবাদ (১৪ মে) ও লখনউ সুপার জায়ান্টস (১৮ মে)-এর। চারটি ম্যাচ জিতলে কেকেআর পৌঁছাবে ১৬ পয়েন্টে। দুবারের চ্যাম্পিয়নদের যেমন শেষ চারে যেতে সব ম্যাচ জিততেই হবে, তেমনই অন্য দলের ফলাফলগুলির দিকেও তাকিয়ে থাকতে হতে পারে। তার মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে লখনউকে দুবার হারানোর কাজটাও মোটেই সহজ হবে না কেকেআরের পক্ষে। তিনটি ম্যাচ জিতলে পয়েন্ট হবে ১৪। সেটা প্লে অফে ওঠার পক্ষে যথেষ্ট হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।
পাঞ্জাব কিংস
পাঞ্জাব কিংস পয়েন্ট তালিকার সপ্তম স্থানে রয়েছে। ময়াঙ্ক আগরওয়ালেক দলের ঝুলিতে রয়েছে ১০ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট। ম্যাচ বাকি- রাজস্থান রয়্যালস (৭ মে), রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্য়াঙ্গালোর (১৩ মে), দিল্লি ক্যাপিটালস (১৬ মে) ও সানরাইাজার্স হায়দরাবাদ (২২ মে)। পাঞ্জাবের নেট রান রেট এখন মাইনাসে (-০.২২৯)। বাকি চারটি ম্যাচ জিতলে পাঞ্জাব কিংস শেষ চারে পৌঁছে যেতে পারবে। যদি তিনটিতে জেতে সেক্ষেত্রে তাকিয়ে থাকতে হবে অন্য ম্যাচগুলির দিকে। নেট রান রেট ভালো জায়গায় নিয়ে যেতেই হবে, ফলে জিততে হবে বড় ব্যবধানে।
সানরাইজার্স হায়দরাবাদ
হারের হ্যাটট্রিকের ফলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ এখন পয়েন্ট তালিকার ছয়ে নেমে এসেছে। ১০ ম্যাচের শেষে কেন উইলিয়ামসনের দলের পয়েন্ট ১০। নেট রান রেট কমতে কমতে ০.৩২৫-এ পৌঁছেছে। অরেঞ্জ আর্মির ম্যাচ বাকি- রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর (৮ মে), কলকাতা নাইট রাইডার্স (১৪ মে), মুম্বই ইন্ডিয়ান্স (১৭ মে) ও পাঞ্জাব কিংস (২২ মে)-এর বিরুদ্ধে। সানরাইজার্সের নেট রান রেট যেখানে পজিটিভ সেখানে তিনটি ম্যাচ জিতলেই তারা শেষ চারে চলে যেতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ হতে পারে পাঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে।
দিল্লি ক্যাপিটালস
সানরাইজার্সকে ছয়ে নামিয়ে সাত থেকে পাঁচে উঠে এসেছে দিল্লি ক্যাপিটালস। ১০ ম্যাচে তাদের ঝুলিতে ১০ পয়েন্ট। নেট রান রেট ০.৬৪১। ঋষভ পন্থদের ম্যাচ বাকি- চেন্নাই সুপার কিংস (৮ মে), রাজস্থান রয়্যালস (১১ মে), পাঞ্জাব কিংস (১৬ মে) ও মুম্বই ইন্ডিয়ান্স (২১ মে)-এর বিরুদ্ধে। দিল্লি ক্যাপিটালসও তিনটি ম্যাচ জিতলে শেষ চারে জায়গা করে নিতে পারে নেট রান রেট ভালো থাকায়। যদি দুটি ম্যাচে জিতে ১৪ পয়েন্টে থাকে তাহলে অন্য ফলাফলের উপর নির্ভর করবে তাদের প্লে অফ ভাগ্য।
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর পয়েন্ট তালিকার চতুর্থ স্থানে রয়েছে। ১১ ম্যাচে তাদের ঝুলিতে রয়েছে ১২ পয়েন্ট। ম্যাচ বাকি- সানরাইজার্স হায়দরাবাদ (৮ মে), পাঞ্জাব কিংস (১৩ মে) ও গুজরাত টাইটান্স (১৯ মে)। তিনটি ম্যাচে জিতলে ফাফ দু প্লেসির দলের শেষ চার নিশ্চিত হয়ে যাবে। যদি দুটিতে জয় আসে তাহলে পয়েন্ট হবে ১৬। কিন্তু আরসিবির নেট রান রেট খুব খারাপ (-০.৪৪৪)। সেক্ষেত্রে ১৬ পয়েন্টে পৌঁছেও খুব স্বস্তিতে থাকবে না আরসিবি। আপাতত তাদের বড় জয় ছিনিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে নামতে হবে। আর যদি ১৬ পয়েন্টেই তারা থেমে যায় তাহলে তাকিয়ে থাকতে হবে অন্য ম্যাচগুলির দিকে। সানরাইজার্স ও পাঞ্জাব ম্যাচ খুব গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।
রাজস্থান রয়্যালস
রাজস্থান রয়্যালস এখন রয়েছে পয়েন্ট তালিকার তিনে। ১০ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে। সঞ্জু স্যামসনদের পরবর্তী ম্যাচগুলি যথাক্রমে পাঞ্জাব কিংস (৭ মে), দিল্লি ক্যাপিটালস (১১ মে), লখনউ সুপার জায়ান্টস (১৫ মে) ও চেন্নাই সুপার কিংস (২০ মে)-এর বিরুদ্ধে। দুটি ম্যাচ জিতলেই প্লে অফে ওঠা কার্যত পাকা হয়ে যাবে রাজস্থানের। কেন না, তাদের নেট রান ০.৩৪০, যা আরসিবির চেয়ে অনেকটাই বেশি। প্লে অফে ওঠার পরিস্থিতি আরও স্পষ্ট হয়ে যাবে দিল্লি ও পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে রাজস্থানের ফলাফলের উপর।
লখনউ সুপার জায়ান্টস
লখনউ সুপার জায়ান্টস পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। লোকেশ রাহুলের দলের ১০ ম্যাচে রয়েছে ১৪ পয়েন্ট। ম্যাচ বাকি- কলকাতা নাইট রাইডার্স (৭ মে), গুজরাত টাইটান্স (১০ মে), রাজস্থান রয়্যালস (১৫ মে) ও কলকাতা নাইট রাইডার্স (১৮ মে)। একটি ম্যাচে জিতলেই প্লে অফ কার্যত নিশ্চিত হয়ে যাবে। লখনউয়ের নেট রান রেট ০.৩৯৭। চারটির তিনটি ম্যাচে হারলে নেট রান রেটে ধাক্কা লাগবে। ফলে ১৬ পয়েন্টে পৌঁছেও তাকিয়ে থাকতে হতে পারে অন্য দলগুলির ফলাফলের দিকে। দুটি ম্যাচ জিতলে শেষ চার কনফার্ম।
গুজরাত টাইটান্স
গুজরাত টাইটান্স এখন রয়েছে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে। ১০ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে কার্যত প্লে অফে পৌঁছেই গিয়েছে হার্দিক পাণ্ডিয়ার দল। বাকি চারটির মধ্যে একটি জয় এলেই তাদের ইডেনের টিকিট কনফার্ম হয়ে যাবে। গুজরাত টাইটান্সের নেট রান রেট ০.১৫৮। হার্দিক পাণ্ডিয়াদের ম্যাচ বাকি- মুম্বই ইন্ডিয়ান্স (৬ মে), লখনউ সুপার জায়ান্টস (১০ মে), চেন্নাই সুপার কিংস (১৫ মে) ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর (১৯ মে)-এর বিরুদ্ধে।