IPL 2022: কেকেআর ম্যাচের আগে উমরান মালিককে পরামর্শ মহম্মদ শামির, মহসীন খানকে নিয়ে কতটা আশাবাদী?
চলতি আইপিএলে বেশ কয়েকজন তরুণ পেসার নজর কেড়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন চেন্নাই সুপার কিংসের মুকেশ চৌধুরী ও সিমরজিৎ সিং, পাঞ্জাব কিংসের অর্শদীপ সিং, লখনউ সুপার জায়ান্টসের মহসীন খান। গতির দ্যুতিতে উজ্জ্বল উমরান মালিক, চলতি আইপিএলে ঘণ্টায় ১৫৭ কিলোমিটার বেগে সবচেয়ে জোরে বলটি করেছেন। আইপিএলের ইতিহাসে কোনও ভারতীয় পেসার এতো জোরে বল করেননি। যদিও উমরানের বোলিংয়ে ধারাবাহিকতার অভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কেকেআর ম্যাচের আগে তাঁকে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিলেন গুজরাত টাইটান্স পেসার মহম্মদ শামি।
উমরানকে শামির পরামর্শ
উমরান মালিক চলতি আইপিএলে ১১টি ম্যাচে ১৫টি উইকেট পেয়েছেন। সেরা বোলিং গুজরাত টাইটান্সের বিরুদ্ধে ২৫ রানের বিনিময়ে ৫ উইকেট। গড় ২৪.২৬, ইকনমি ৯.১০, স্ট্রাইক রেট ১৬। যদিও টাইটান্স ম্যাচের পর থেকে তিনি তিনটি ম্যাচে উইকেটহীন। চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে ৪৮, দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে ৫২ ও আরসিবির বিরুদ্ধে ২ ওভারে ২৫ রান দিয়েছেন। আজ কলকাতা নাইট রাইডার্স ম্যাচে তিনি উইকেটের মুখ দেখতে পারবেন কিনা তা বলবে সময়। তবে এরই মধ্যে উমরানের জন্য মূল্যবান পরামর্শ দিলেন মহম্মদ শামি। শামি কথায়, উমরানের বলে গতি রয়েছে। কিন্তু আমি খুব জোরে বোলিংয়ের ফ্য়ান নই। যদি কেউ ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার বেগে বল করে দু-দিকে মুভ করাতে বা রিভার্স করাতে পারেন, সেটাই ব্যাটারদের সমস্যায় ফেলতে যথেষ্ট। উমরানের সব কিছুই রয়েছে। কিন্তু পরিণত হতে আরও সময় দরকার। দ্রুতগতির বল করার সময় নিশানাতেও অভ্রান্ত থাকতে হবে।
ইকনমি নিয়ে
উমরানের গতি দেখে ইতিমধ্যেই অনেকে তাঁকে ভারতীয় দলে খেলানোর দাবি জানাচ্ছেন। কিন্তু শেষ তিনটি ম্যাচে উমরানের ইকনমি ১২ বা তারও বেশি। টুর্নামেন্টে ইকনমিও ১০টি ইনিংসে বল করে বেশি রান দেওয়া পেসারদের তালিকায় ছয়ে। তবে ইকনমি নিয়ে মাথা ঘামাতে নারাজ শামি। তিনি বলেন, দেখতে হবে সংশ্লিষ্ট বোলার কোন পরিস্থিতিতে কেমন বল করছেন। যদি কেউ পাওয়ারপ্লেতে বেশি রান দেন তাহলে সমস্যা নেই। কেন না, প্রথম ৬ ওভারে উইকেট ফেলাটাই গুরুত্বপূর্ণ। তবে পরিস্থিতি অনুযায়ী ইকনমি রেটেও নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে। টি ২০ ক্রিকেটে অ্যাটাকিং বোলারদের ইকনমি ৮ থেকে সাড়ে আটের মধ্যে থাকাই উচিত বলে মনে করেন শামি।
মহসীনকে পরামর্শ
লখনউ সুপার জায়ান্টসের মহসীন খান ৬টি ম্যাচে ১০টি উইকেট দখল করেছেন। সেরা বোলিং ১৬ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট। গড় ১০.৯০, ইকনমি ৫.১৯, স্ট্রাইক রেট ১২.৬। মহসীনের ইকনমি চলতি আইপিএলে অন্তত ৫ ইনিংসে বল করা বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে কম। আইপিএলের আগে আমরোহায় গিয়ে শামির তত্ত্বাবধানে বোলিং অনুশীলন করেছেন ২৩ বছরের মহসীন। শামি সে কথা জানিয়ে বলেন, মহসীনকে গেমপ্ল্যানে ফোকাস করতে হবে আরও বেশি এবং সেটিকে রুটিন করে এগোতে হবে। সেই সঙ্গে মানসিক ও শারীরিকভাবেও নিজেকে উন্নত করতে হবে, যা পরে কাজে দেবে। আমরা যখন খেলতাম তখন জানতাম না সর্বোচ্চ স্তরে খেলার জন্য কী কী দরকার। তবে আমার বিশ্বাস মহসীন, উমরানদের জন্য যথেষ্ট উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে। অনেক নতুন বোলার উঠে আসছেন। ফলে ভারতীয় ক্রিকেটের পেস বোলিং তাঁদের হাতেই থাকবে।
নিজের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট
মহম্মদ শামি মুখিয়ে রয়েছেন ইডেনে প্লে অফে খেলার জন্য। ১২ ম্যাচে তিনি এখনও অবধি ১৬ উইকেট নিয়েছেন। সেরা বোলিং ২৫ রানে ৩ উইকেট। গড় ২৩.১২, ইকনমি ৭.৮৭, স্ট্রাইক রেট ১৭.৬। পাওয়ারপ্লে-তে তাঁর ইকনমি ৬.১২ এই সময়কালে ৯ ইনিংসে বল করা বোলারদের মধ্যে সেরার তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে। পাওয়ারপ্লেতেই নিয়েছেন ১০ উইকেট। বিগত তিন-চারটি মরশুমে নিজের পারফরম্যান্সে শামি সন্তুষ্ট। দায়িত্ব পালনে নিজের সেরাটা সব সময় উজাড় করে দেওয়াই তাঁর লক্ষ্য থাকে। অধিনায়ক হিসেবে হার্দিকের পরিণতবোধেরও প্রশংসা শোনা গিয়েছে শামির গলায়।