IPL 2022: কুলদীপের কামালে কেকেআর টেনশনে! রানার লড়াইয়ে ডু অর ডাই ম্যাচে দিল্লির বিরুদ্ধে পুঁজি ১৪৬
কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে বল হাতে ফের জ্বলে উঠলেন কুলদীপ যাদব। পুরানো দলের বিরুদ্ধে নেমে বঞ্চনার জবাব দিতে ভিতরে ভিতরে তৈরি হচ্ছিলেন প্রাক্তন এই নাইট। দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে কেকেআরের বিরুদ্ধে প্রথম সাক্ষাতে ৪ ওভারে নিয়েছিলেন ৩৫ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট। এদিন ফের দখল করলেন চার উইকেট। কুলদীপ কেকেআরের কোমর ভেঙে দেওয়ায় ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৪৬ রানের বেশি তুলতে পারল না নাইটরা। ৩৪ বলে সর্বাধিক ৫৭ রান করেন নীতীশ রানা, তাঁর ইনিংসে রয়েছে তিনটি চার ও চারটি ছয়।
শুরু থেকেই ব্যাটিং বিপর্যয়
টস হারার পর নাইট অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার মেনে নিয়েছিলেন, প্লে অফে যেতে হলে তাঁদের ৬টি ম্যাচের ৬টিতেই জিততে হবে। ওয়াংখেড়েতে রান তাড়া করা সহজ বলেও মন্তব্য করেন আইয়ার। সেজন্য দরকার ছিল দিল্লি ক্যাপিটালসের উপর বড় টার্গেট চাপানো। কিন্তু ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই অস্বস্তিতে ছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। পাওয়ারপ্লে-র ৬ ওভারে স্কোর ছিল ২ উইকেটে ২৯। ১.৩ ওভারে দলের ৪ রানের মাথায় অ্যারন ফিঞ্চ প্যাভিলিয়নে ফেরেন। সাত বলে তিন রান করে তিনি দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা চেতন সাকারিয়ার বলে বোল্ড হন। ৪.৩ ওভারে ভেঙ্কটেশ আইয়ার ১২ বলে ৬ রানে অক্ষর প্যাটেলের শিকার, কেকেআরের দ্বিতীয় উইকেটটি পড়ে ২২ রানে।
|
কুলদীপের কামাল
এরপর অষ্টম ওভারে নাইট শিবিরে জোড়া ধাক্কা দেন কুলদীপ যাদব। ৩৫ রানের মাথায় তৃতীয় ও চতুর্থ উইকেট পড়ে। ৭.২ ওভারে বাবা ইন্দ্রজিৎ ৮ বলে ৬ রান করে রভম্যান পাওয়েলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। পরের বলেই লেগ বিফোর সুনীল নারিন। রিভিউ নিয়েও গোল্ডেন ডাক থেকে রক্ষা পাননি। এরপর দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার ও নীতীশ রানা। কিন্তু ফের সেই কুলদীপই জোড়া ধাক্কা দেন নাইট ইনিংসে।
|
ফের চার উইকেট
১৩.১ ওভারে কুলদীপের বল শ্রেয়সের ব্যাট ছুঁয়ে জমা পড়ে ঋষভ পন্থের হাতে। দারুণ দক্ষতার সঙ্গে ক্যাচটি তালুবন্দি করেন পন্থ। চারটি চারের সাহায্যে ৩৭ বলে ৪২ রান করে সাজঘরে ফেরেন শ্রেয়স। এর তিন বল পরেই আউট আন্দ্রে রাসেল। প্রথম দুটি বলে কোনও রান না পাওয়ায় ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে আগ্রাসী শট খেলতে গিয়েছিলেন। সহজেই স্টাম্প আউট করে দেন পন্থ। ৮৩ রানেই পঞ্চম ও ষষ্ঠ উইকেট হারায় কেকেআর। উল্লেখ্য, প্রথম সাক্ষাতে কুলদীপ ঝুলিতে পুরেছিলেন শ্রেয়স, প্যাট কামিন্স, সুনীল নারিন ও উমেশ যাদবের উইকেট।
|
মান বাঁচালেন রানা-রিঙ্কু
কেকেআরকে কিছুটা লড়াইয়ের জায়গায় পৌঁছে দেয় নীতীশ রানার লড়াকু অর্ধশতরান। তাঁকে যোগ্য সঙ্গত দেন রিঙ্কু সিং। সপ্তম উইকেট জুটিতে তাঁরা ৫০ রান যোগ করে ফেলেন মাত্র ২৮ বলে। এই জুটিতে ওঠে ৬২ রান। শেষ ওভারে অবশ্য দুরন্ত বোলিং করলেন মুস্তাফিজুর রহমান। দ্বিতীয় বলে রিঙ্কু সিংকে ফেরান, ১৬ বলে ২৩ করে রিঙ্কু আউট হন দলের ১৪৫ রানে। এর দুই বল পরেই নীতীশ রানাকেও আউট করেন মুস্তাফিজুর। নীতীশ এদিন আইপিএলে ২ হাজার রান ও ১০০টি ছক্কা মারার নজির গড়েছেন। পঞ্চম বলে টিম সাউদিকে বোল্ড করে দেন তিনি। শেষ ওভারে মাত্র ২ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট নেন বাংলাদেশের পেসার।
|
চাহালের কাছাকাছি
এদিন ৩ ওভারে ১৪ রান খরচ করে চার উইকেট নেওয়ায় চলতি আইপিএলে ১৭টি উইকেট এলো কুলদীপের ঝুলিতে। সর্বাধিক উইকেটশিকারী যুজবেন্দ্র চাহাল কুলদীপের চেয়ে আর একটি উইকেট বেশি পেয়েছেন। ১৭তম ওভারটি পন্থ ললিত যাদবকে দেন, সেই ওভারে ১৭ তোলে নাইটরা। পন্থের এই সামান্য ভুলে কুলদীপের কোটা পূরণ হয়নি। যে ছন্দে ছিলেন তাতে উইকেটও পেতেই পারতেন। মুস্তাফিজুর রহমান ৪ ওভারে ১৮ রান খরচ করে তিন উইকেট নেন। চার ওভারে ২৮ রান দিয়ে একটি উইকেট নেন অক্ষর প্যাটেল। চেতন সাকারিয়া ৩ ওভার বল করেছেন, ১৭ রান খরচ করে নিয়েছেন একটি উইকেট। ললিত যাদব ও শার্দুর ঠাকুর দুজনেই ৩ ওভারে ৩২ রান দিয়ে কোনও উইকেট পাননি।