IPL 2022: শ্রেয়স আইয়ার চাইছেন রক্ষণশীলতা ঝেড়ে নির্ভীক হোক কেকেআর! খামতি কোন জায়গাগুলিতে?
আইপিএলে ৯টি ম্যাচের মধ্যে মাত্র তিনটিতে জিতেছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। টানা পাঁচটি ম্যাচ হেরে পয়েন্ট তালিকার অষ্টম স্থানে শ্রেয়স আইয়ারের দল। শ্রেয়স যে অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠার হুঙ্কার ছেড়েছিলেন, মাঠে তার ধারেকাছে পৌঁছাতে না পেরে বিদায়ের মুখে কেকেআর। এই পরিস্থিতিতে ব্যাটিং বিভাগের দিকেই আঙুল তুলে দলকে নির্ভীক ক্রিকেট খেলার ডাক দিলেন শ্রেয়স। সোমবার কেকেআরের পরবর্তী ম্যাচ রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে দুটি এবং মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ও সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে ম্যাচ বাকি নাইটদের।
পর্যাপ্ত রান নেই
নীতীশ রানার ৩৪ বলে ৫৭ রানের সুবাদে ৬ উইকেটে ৮৩ থেকে ৯ উইকেটে ১৪৬ অবধি পৌঁছেছিল কেকেআর। মাঝের ওভারে দিল্লি ক্যাপিটালসের কয়েকটি উইকেট দ্রুত তুলে নিলেও শেষ অবধি জয় অধরাই থেকে যায় নাইটদের কাছে। শ্রেয়স বলেন, আমাদের শুরুটা মন্থর হয়েছিল। এরপর দ্রুত কয়েকটি উইকেট পড়ে যায়। উইকেটে প্রথম দিকে বল থমকে ব্যাটে আসছিল। তবু বলব, এই উইকেটে পর্যাপ্ত রান আমরা তুলতে পারিনি। যেভাবে প্রথমার্ধ আমরা খেলেছি তাতে কোনও অজুহাত দিতে চাই না। কোথায় ভুল হয়েছে সেগুলি আমাদের চিহ্নিত করতে হবে।
ব্যর্থ টপ অর্ডার
চলতি আইপিএলে টপ অর্ডার ভোগাচ্ছে কেকেআরকে। ভেঙ্কটেশ আইয়ার গত মরশুমে যেভাবে খেলেছেন, এবার তার ধারেকাছে পৌঁছাতে পারছেন না। অজিঙ্ক রাহানে ওপেন করলেও পাঁচটি ম্যাচের পর বাদ পড়েন। অ্যারন ফিঞ্চ ও স্যাম বিলিংসও হাল্কা চোটের কারণে নিয়মিত নন, ফর্মেও ধারাবাহিকতা নেই। ব্যাট হাতে ভরসা দিতে ব্যর্থ সুনীল নারিন। ভেঙ্কটেশকে ব্যাটিং অর্ডারে নামিয়ে এনেও লাভ হয়নি। সবমিলিয়ে চলতি আইপিএলে ৯ ম্যাচে পাঁচটি ওপেনিং জুটি নামিয়েও ভালো শুরু পেতে ব্যর্থ কেকেআর। ওপেনিং জুটি বদলাতে গিয়ে ব্যাটিং অর্ডারেও রদবদল করতে হচ্ছে। এবারের ব্যর্থতার কারণ হিসেবে এই বিষয়ে আলোকপাত করে শ্রেয়স বলেন, বিগত কয়েকটি ম্যাচে আমরা সঠিক ওপেনিং জুটি নামাতে পারিনি। অনেক বদল করতে হয়েছে। কেউ চোটের কারণে খেলতে পারেনি। এতে ব্যাটিং ও বোলিং বিভাগ স্থিতিশীল হয়নি। এই ধরনের লিগে প্রথম ম্যাচ থেকে সঠিক কম্বিনেশন নিয়ে খেললে কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়।
মিডল অর্ডারের সমস্যা
মিডল অর্ডারও নাইটদের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে যেহেতু আর পাঁচটি ম্যাচ বাকি, খুব বড়সড় রদবদলের সম্ভাবনা নেই। শ্রেয়স বলেন, আমরা যে দল খেলাচ্ছি সেটা নিয়েই আগামী কয়েকটি ম্যাচ খেলতে হবে। নির্ভীক ক্রিকেট খেলতে হবে। সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে রক্ষণশীল মানসিকতা ছাড়তে হবে। বাকি পাঁচটি ম্যাচে ফ্র্যাঞ্চাইজির জন্য নিজেদের সেরাটা উজাড় করে দিতে হবে। সতীর্থদের বলব, বেশি চিন্তা করে লাভ নেই। যা হয়েছে তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে হবে। নতুন করে সব শুরু করতে হবে, প্রাথমিক বিষয়গুলি ঠিকঠাক রাখতে হবে। কী করলে সেটা সঠিক হয় সে বিষয়ে মানসিকভাবে সকলকে প্রস্তুত থেকে স্বচ্ছ্ব ধারণা নিয়ে এগিয়ে চলার পরামর্শই দেন শ্রেয়স। অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস নিয়েই ঝাঁপাতে হবে। তাতে ভুল হলেও তা মেনে নিতে আপত্তি নেই নাইট-সারথীর।
বোলিং প্রত্যাশিত মানের নয়
কেকেআরের বোলিংও প্রত্যাশিত মানে পৌঁছায়নি। বরুণ চক্রবর্তী তো বাদই পড়েছেন। তাতেও জয়ের রাস্তায় ফেরা যাচ্ছে না। বোলিং বিভাগে অবশ্যই উজ্জ্বল উমেশ যাদব। পাওয়ারপ্লে বোলিংয়ে টু্নামেন্টে অন্যতম সেরা বোলার উমেশ। প্রথম ওভার থেকেই আঘাত হানছেন। গতকালও প্রথম বলে ফিরিয়েছেন পৃথ্বী শ-কে। প্রথম চারটি ম্যাচেই তিনি ঝুলিতে পুরেছিলেন ৯ উইকেট। ৯ ম্যাচে ১৪ উইকেট নিয়ে আইপিএলে সর্বাধিক উইকেটশিকারীদের তালিকায় রয়েছেন ছয়ে। শ্রেয়স উমেশকে নিয়ে বলেন, দিল্লির বিরুদ্ধে প্রথম বলে উইকেট নেওয়ার পর উমেশ ১১ রান দেওয়ায় প্রতিপক্ষ কিছুটা সুবিধা পেয়ে যায়। তবে এরপরেও তিনি দারুণ কামব্যাক করে দুটি উইকেট নিয়েছেন। এই ম্যাচে তিনি বিশেষ কিছু মুহূর্ত উপহার দিয়েছেন। যখনই তাঁকে বল করতে ডেকেছি, উমেশ ব্রিলিয়ান্ট কিছু করে দেখিয়েছেন। তিনি ধারাবাহিকভাবে ভালো করছেন, যা দলের কাছেও যথেষ্ট ইতিবাচক।