IPL 2022: রাহুল তেওয়াটিয়াকে 'আইসম্যান' বলার কারণ ব্যাখ্যা গাভাসকরের, আত্মবিশ্বাস বাড়ায় শারজার কোন ইনিংস?
রাহুল তেওয়াটিয়া। বর্তমানে হার্দিক পাণ্ডিয়ার গুজরাত টাইটান্সের বড় অস্ত্র। ব্যাট হাতে ঝড় তুলে নিমেষে ম্যাচের রং বদলে দিচ্ছেন। চলতি আইপিএলে ৯টি ম্যাচে তেওয়াটিয়া ৪ বার অপরাজিত থেকে ১৭৯ রান করেছেন। সর্বাধিক অপরাজিত ৪৩, গড় ৪৪.৭৫, স্ট্রাইক রেট ১৬১.২৬। ফিনিশার হিসেবে তেওয়াটিয়া, ডেভিড মিলার, রশিদ খানরা যে ভূমিকা পালন করছেন তাতে গুজরাত টাইটান্সের ব্যাটিং গভীরতাও বেড়েছে। প্রতিপক্ষের চিন্তার কারণও হয়ে দাঁড়াচ্ছেন তাঁরা। আজ পাঞ্জাব কিংস ম্যাচেও তাঁদের দিকে নিশ্চিতভাবেই নজর থাকবে।
সানির কথায় শারজার ঝড়়
ব্যাট হাতে রাহুল তেওয়াটিয়া যে ধারাবাহিকতা দেখাচ্ছেন, ফিনিশার হিসেবে দলকে জেতাচ্ছেন তাতে হরিয়ানার এই ক্রিকেটারের প্রশংসা শোনা গিয়েছে সুনীল গাভাসকরের গলায়। স্টার স্পোর্টসের ক্রিকেট লাইভ অনুষ্ঠানে গাভাসকর বলেন, শারজায় শেলডন কটরেলের বিরুদ্ধে ব্যাট হাতে যে সংহার চালিয়েছিলেন তেওয়াটিয়া, তা অসম্ভবকে সম্ভব করার ক্ষেত্রে তাঁর আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে। তিনি যে অসম্ভব ম্যাচও বের করতে পারেন সেই বিশ্বাস নিজের উপর রয়েছে। চলতি আইপিএলেও অসম্ভবকে সম্ভবে পরিণত করেছেন তেওয়াটিয়া। ডেথ ওভারে তাঁকে একেবারেই নার্ভাস দেখাচ্ছে না। বলের জন্য অপেক্ষা করছেন এবং শট নিচ্ছেন। তিনি সব রকমের শট খেলতে পারেন। চাপের মুখেও যেভাবে তিনি নিজেকে শান্ত রাখেন, কুল রাখেন, সেই টেম্পারামেন্টই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
কটরেলের এক ওভারে ৫ ছক্কা
সুনীল গাভাসকর যে ম্যাচের কথাটি বলেছেন সেটি ছিল ২০২০ সালের আইপিএলে ২৭ সেপ্টেম্বর শারজায় কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব বনাম রাজস্থান রয়্যালস ম্যাচ। জয়ের জন্য রাজস্থান রয়্যালস ২২৪ রানের টার্গেট তাড়া করছিল। রাহুল তেওয়াটিয়া ১৮তম ওভারে শেলডন কটরেলের এক ওভারে পাঁচটি ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন, শুধু পঞ্চম বলটিই ডট ছিল। এই ওভারই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। সাতটি ছয়ের সাহায্যে ৩১ বলে ৫৩ রান করেছিলেন তেওয়াটিয়া। তিন বল বাকি থাকতে ম্যাচ জিতেছিল রাজস্থান রয়্যালস। রাজস্থানের জার্সি গায়ে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলার পর এবারের আইপিএলেও বেশ কয়েকটি ম্যাচে ব্যাট হাতে দুরন্ত পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে গুজরাত টাইটান্সকে অবিশ্বাস্য কয়েকটি জয় এনে দিয়েছেন।
অভিভূত কাইফ
রাহুল তেওয়াটিয়া যখন আইপিএলে দিল্লির ফ্র্যাঞ্চাইজিতে ছিলেন তখন সহকারী কোচ ছিলেন মহম্মদ কাইফ। প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার উচ্ছ্বসিত যেভাবে তেওয়াটিয়া নিজেকে বাউন্ডারি-হিটার থেকে সিক্স-হিটারে উন্নীত করেছেন। কাইফ বলেন, তেওয়াটিয়া যখন ক্যাপিটালসে ছিলেন তখন অলরাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। অমিত মিশ্রর সঙ্গে স্পিন বোলিং জুটিতে কার্যকরী ভূমিকা নিতেন। দিল্লিতে থাকাকালীন তিনি চার মারতে দক্ষ ছিলেন। এখন নিজেকে ছক্কা মারায় পারদর্শী করেছেন। ফিনিশার হিসেবে তিনি আমাদের সকলকে অবাক করে দিয়েছেন। কঠোর অধ্যবসায় ও পরিশ্রমের মধ্যে দিয়েই নিজের খেলাকে উন্নত করেছেন রাহুল, মন্তব্য কাইফের।
কেন আইসম্যান?
চাপের মুখে মাথা ঠাণ্ডা রেখে যেভাবে তেওয়াটিয়া দলের জয়ে অবদান রাখছেন তা দেখে তাঁকে আইসম্যান নামে প্রথম অভিহিত করেন গাভাসকর। এর কারণ হিসেবে সানি বলেন, তেওয়াটিয়া ক্রিজে দাঁড়িয়ে থাকেন, চাপের মুখেও কোনওরকম অসহায়তা বা আত্মবিশ্বাসের অভাব দেখা যায় না। তাঁর ব্যাটিং জমাট, কী ধরনের বল আসতে পারে তা আগাম আঁচ করে উপযোগী শট খেলার জন্য প্রস্তুত থাকেন। তাঁর মনে এই স্থির ধারণা থাকে যে, বল যদি তাঁর প্রত্যাশামতো জায়গায় পড়ে তবে তিনি পছন্দের শটটিই খেলবেন। বল তাঁর ব্যাটের মাঝখানে লাগলে ছক্কা হবেই। পরিস্থিতির কাছে কুঁকড়ে না গিয়ে তিনি নিজের স্বাভাবিক খেলা যেভাবে খেলেন তাতেই তাঁকে আইসম্যান তকমা দেওয়া।