IPL 2022: ঋদ্ধিমানের ফর্ম কেন ঋষভ পন্থকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলছে? পাপালির প্রশংসায় বিশ্বকাপজয়ী কোচ
আইপিএলে প্রথম দল হিসেবে ২০ পয়েন্টে পৌঁছে গেল গুজরাত টাইটান্স। ইডেনে হার্দিক পাণ্ডিয়ার দল প্রথম কোয়ালিফায়ার খেলবে। আজ চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে গুজরাতের জয়ে অবদান রাখলেন দুই বাঙালি। মহম্মদ শামি চার ওভারে ১৯ রান দিয়ে দুই উইকেট নেওয়ার পর ৫৭ বলে ৬৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দলকে লক্ষ্যে পৌঁছে দিলেন ঋদ্ধিমান সাহা। ম্যাচের সেরাও হলেন তিনি।
|
ঋদ্ধি ম্যাজিক
পাওয়ারপ্লে-র ৬ ওভারে ঋদ্ধিমান সাহার আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের সাক্ষী থাকলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। প্রথম ৬ ওভারেই মারলেন সাতটি চার ও একটি ছক্কা। বেশি আক্রমণাত্মক ছিলেন মুকেশ চৌধুরীর বিরুদ্ধে। ম্যাচের সেরার পুরস্কার পেয়ে ঋদ্ধিমান সাহা সাফ জানিয়ে দিলেন, গুজরাত ড্রেসিংরুমের দারুণ পরিবেশ দলের সাফল্যে বড় ভূমিকা রাখছে। তাঁর কথায়, অনেক দিন ধরে খেলছি। কিন্তু এখানে যা সেট-আপ তা প্রত্যেকের প্রতি যত্নশীল। প্রথম দিকে আমি কিছু ম্যাচে সুযোগ পাইনি। কিন্তু যখনই সুযোগ পেয়েছি তখনই পরিকল্পনা রূপায়ণের চেষ্টা করেছি। আমাদের সামনে এদিন বড় রানের লক্ষ্য ছিল না। তাই পাওয়ারপ্লেতে আগ্রাসী ব্যাটিংয়েরই পরিকল্পনা করি। এতে পরের দিকে আর ঝুঁকি নিতে হয়নি রিকোয়ার্ড রেট ছয়ের নীচে থাকায়।
পারফরম্যান্সে পন্থকে চ্যালেঞ্জ
ঋদ্ধি আরও বলেন, বোলিংয়ের সময় লক্ষ্য করছিলাম, কিছু বল থমকে আসছে। তাই প্রথমদিকে চালিয়ে খেলার পরিকল্পনা নিই। দলে আমার ভূমিকা হলো, প্রথম ৬ ওভার আমার স্বাভাবিক খেলা চালিয়ে যাওয়ার। এরপর স্যুইপ বা স্টাম্প ছেড়ে বেরিয়ে আক্রমণাত্নক শট খেলা। চলতি আইপিএলে গুজরাতের ১৩টি ম্যাচের ৮টিতে খেলেছেন ঋদ্ধি। এই প্রথম অপরাজিতও রইলেন ওপেন করতে নেমে। মোট ২৮১ রান করেছেন। তিনটি অর্ধশতরান, সর্বাধিক স্কোর ৬৮। গড় ৪০.১৪, স্ট্রাইক রেট ১২৩.২৪। উল্লেখ্য, ঋদ্ধির চেয়ে চারটি ম্যাচ বেশি খেলেছেন ঋষভ পন্থ। তিনি মাত্র ১৩ রান এগিয়ে রয়েছেন ঋদ্ধির চেয়ে। ব্যাটিং গড়ে পিছিয়ে, মিডল অর্ডারে নামা পন্থের স্ট্রাইক রেট ১৫৬.৩৮। ফলে ঋদ্ধিকে যাঁরা বাতিলের খাতায় ফেলতে চান এই পরিসংখ্যান তাঁদের লজ্জা দেবে।
গ্যারির প্রশংসা
ঋদ্ধিমানের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন ভারতকে ২০১১ সালে বিশ্বকাপ জেতানো কোচ গ্যারি কার্স্টেন। গুজরাত টাইটান্সের মেন্টর গুরু গ্যারি বলেন, আমরা সাহাকে নিয়ে খুব খুশি। তাঁর মতো একজন দারুণ পেশাদার ক্রিকেটারকে দলে পাওয়া বিরাট ব্যাপার। আইপিএল-সহ সব ধরনের ক্রিকেটে তাঁর অভিজ্ঞতা রয়েছে। নিজের খেলা সম্পর্কে সচেতন থেকে পাওয়ারপ্লেতে দারুণ ব্যাটিং করেন সাহা। দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হিসেবে সব সময় তিনি প্রত্যাশা পূরণ করে চলেছেন। পাওয়ারপ্লেতে কীভাবে খেলতে হবে সে সম্পর্কে অবগত থাকায় তাঁকে বিশেষ কিছু বলার দরকার পড়ে না। আমাদের দলের প্রত্যেকেই নিজেদের শক্তি ও ক্ষমতা অনুযায়ী উজাড় করে দিচ্ছেন। ঋদ্ধিমান শর্ট বল খেলার ক্ষেত্রে একজন গ্রেট প্লেয়ার।
|
শামি ও ঋদ্ধি আরও কোন খেলায় পারদর্শী?
ঋদ্ধির পাশাপাশি এদিন উজ্জ্বল মহম্মদ শামি। ৪ ওভারে ১৯ রান খরচ করে তুলে নিয়েছেন ডেভন কনওয়ে ও মহেন্দ্র সিং ধোনির উইকেট। তিনি বলেন, বিকেলের ম্যাচে সঠিক লেংথ বজায় রাখাই গুরুত্বপূর্ণ। লেংথ বল মারা কঠিন। সেটা যাতে ঠিকঠাক হয় সেদিকে নজর রেখেছিলাম। আমাদের পরিকল্পনাগুলি সফলভাবেই প্রয়োগ করতে পেরেছি। দলের পরিবেশ, পারস্পরিক বন্ধনের প্রশংসা শোনা গিয়েছে শামির গলাতেও। হারলে খারাপ লাগে, তবে তা থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজের পারফরম্যান্স উন্নত করারও সুযোগ থাকে বলে জানান তিনি। সাপোর্ট স্টাফদের ভূমিকাতেও খুশি শামি। এদিন, শামি ও ঋদ্ধি গুজরাত টাইটান্সের তরফে থমাস কাপ জয়ী ভারতীয় দলকে অভিনন্দন জানান। ফিটনেস বাড়াতে দুজনেই যে ব্যাডমিন্টনও খেলেন সে কথাও জানাতে ভোলেননি।