আইপিএল অভিযানে কেমন দল সানরাইজার্স হায়দরাবাদের, জেনে নিন কবে কাদের বিরুদ্ধে ম্যাচ
সংযুক্ত আরব আমিরশাহীতে গত আইপিএল সাক্ষী ছিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদের দুরন্ত কামব্যাকের। প্রথন ৯টি ম্যাচের মধ্যে মাত্র তিনটিতে জয় এসেছিল। তারপরও তৃতীয় হয়ে আইপিএল অভিযান শেষ করে আইপিএলে নিজামের শহরের দলটি। এলিমিনেটরে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরকে হারাতে সক্ষম হলেও সানরাইজার্সকে কোয়ালিফায়ার-২-তে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছিল দিল্লি ক্যাপিটালস। এবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যে খুব বেশি রদবদলের পথে না হেঁটে কোর গ্রুপ একই রেখে নামছে ডেভিড ওয়ার্নারের দল।
সানরাইজার্স হায়দরাবাদের পুরো দল
সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে এ বছরও নেতৃত্ব দেবেন ডেভিড ওয়ার্নারই। দলে রয়েছেন কেন উইলিয়ামসন, জেসন রয়, আব্দুল সামাদ, কেদার যাদব, ঋদ্ধিমান সাহা, অভিষেক শর্মা, সিদ্ধার্থ কৌল, সন্দীপ শর্মা, খলিল আহমেদ, ভুবনেশ্বর কুমার, বিজয় শঙ্কর, জনি বেয়ারস্টো, মহম্মদ নবি, জগদীশা সুচিথ, বেসিল থাম্পি, মুজিব উর রহমান, বিরাট সিং, প্রিয়ম গর্গ, শাহবাজ নাদিম, রশিদ খান, শ্রীবৎস গোস্বামী, টি নটরাজন, জেসন হোল্ডার ও মণীশ পাণ্ডে। দলের ডিরেক্টর টম মুডি। হেড কোচ ট্রেভর বেলিস। সহকারী কোচ ব্র্যাড হ্যাডিন। বোলিং কোচ মুথাইয়া মুরলীধরন। ফিল্ডিং কোচ বিজু জর্জ। ভিভিএস লক্ষ্মণ এই দলের মেন্টর।
ব্যাটিং গভীরতা বেড়েছে
গত কয়েক বছর ধরে দেখা গিয়েছে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ বারবারই দ্বিধায় ভুগেছে জনি বেয়ারস্টো ও কেন উইলিয়ামসনের মধ্যে একজনকে প্রথম একাদশের বাইরে রাখা নিয়ে। গত বছর দেখা গিয়েছিল আইপিএলের দ্বিতীয়ার্ধে জনি বেয়ারস্টোকে বসিয়ে ওপেন করতে পাঠানো হয়েছিল ঋদ্ধিমান সাহাকে। সফলও হন ঋদ্ধি। উইলিয়ামসন চারে ব্যাট করেছিলেন। অলরাউন্ডার জেসন হোল্ডারের উপরও ভরসা রাখতে হচ্ছিল সানরাইজার্সকে। তবে এবার তাদের সেই চিন্তা করতে হবে না কেদার যাদব ও ফিট ভুবনেশ্বর কুমার চলে আসায়। হোল্ডারকে বাইরে রেখে তাই বেয়ারস্টো আর উইলিয়ামসন দুজনকেই খেলাতে পারবে সানরাইজার্স। কোপ পড়তে পারে ঋদ্ধিমান সাহার উপরেও। ঋদ্ধি অনেকদিন মাঠের বাইরে। বেয়ারস্টো সম্প্রতি ভারতের বিরুদ্ধে দারুণ ছন্দে ছিলেন। পাওয়ারপ্লেতে কার্যকারিতাতেও ঋদ্ধির চেয়ে এগিয়েই বেয়ারস্টো। সর্বোপরি ওয়ার্নার আর বেয়ারস্টোর ওপেনিং জুটি আইপিএলের অন্যতম সেরা। তাঁরা ছন্দে থাকলে গড়ে ৬.৩ ওভারে ৬০ রান ওঠে। ওয়ার্নারের চোট প্রবণতার কথা মাথায় রাখলেও খুব চিন্তা নেই। কারণ, মিচেল মার্শ আইপিএল থেকে সরে দাঁড়ানোর পর ইংল্যান্ডের ওপেনার তথা বেয়ারস্টোর সঙ্গে যাঁর জুটিকে এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা বলা হচ্ছে সেই জেসন রয়কে নিয়েছে সানরাইজার্স। কেদার যাদব মিডল অর্ডারে খেললেও লোয়ার মিডল অর্ডার কতটা পোক্ত তার প্রমাণ মিলবে খেলা শুরু হলেই।
শক্তিশালী বোলিং
গত বছর আইপিএলে ভুবনেশ্বর কুমারের চোট ভুগিয়েছিল সানরাইজার্সকে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে যে ছন্দে বোলিং করেছেন তাতে অবশ্য সানরাইজার্স শিবিরে হাসি চওড়া হয়েছে। সন্দীপ শর্মার সঙ্গে পাওয়ারপ্লেতে আর টি নটরাজনের সঙ্গে ডেথ ওভারে ভুবি দলের বোলিং আক্রমণকে নেতৃত্ব দিতে পারবেন। দলে রয়েছেন রশিদ খানও। পিচের চরিত্র অনুযায়ী বোলিং আক্রমণ সাজাতে পারে সানরাইজার্স। বেয়ারস্টো বা উইলিয়ামসনের মধ্যে কাউকে বাইরে রাখতে না চাইলে বিজয় শঙ্কর, কেদার যাদব ও আব্দুল সামাদকে মিলে চার ওভার বল করতেই হবে। নাহলে দুই বিদেশি ব্যাটসম্যানের মধ্যে একজনকে বাইরে রেখে মহম্মদ নবি বা জেসন হোল্ডারকে খেলাতে হবে। মুজিব উর রহমানকেও দলে নিয়েছে সানরাইজার্স। চেন্নাইয়ের চিপকে স্লো উইকেটে পাঁচটি ম্যাচ খেলতে হবে। তাই মুজিবকেও দেখা যেতেই পারে রশিদের বিকল্প হিসেবে। নজর থাকবে আব্দুল সামাদের দিকেও। ১৯ বছরের সামাদকে ২০১৯-এর নিলাম থেকে নিয়েছিল সানরাইজার্স। ছক্কা মারায় পারদর্শী, স্ট্রাইক রেটও ভালো। গত বছরও ভালো খেলেছেন। জম্মু-কাশ্মীরের হয়ে সৈয়দ মুস্তাক আলি টি ২০-তেও ৪ ম্যাচে ১৪০ রান করেছেন। গড় ৪৬-এর উপর, স্ট্রাইক রেট প্রায় ১৪৯। ফিনিশারের ভূমিকায় তিনি কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারেন।
সানরাইজার্স হায়দরাবাদের প্রতিপক্ষ
১১ এপ্রিল- কলকাতা নাইট রাইডার্স, ১৪ এপ্রিল- রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর, ১৭ এপ্রিল- মুম্বই ইন্ডিয়ান্স, ২১ এপ্রিল- পঞ্জাব কিংস (বিকেল সাড়ে ৩টে), ২৫ এপ্রিল- দিল্লি ক্যাপিটালস, ২৮ এপ্রিল- চেন্নাই সুপার কিংস, ২ মে- রাজস্থান রয়্যালস (বিকেল সাড়ে ৩টে), ৪ মে- মুম্বই ইন্ডিয়ান্স, ৭ মে- চেন্নাই সুপার কিংস, ৯ মে- রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর, ১৩ মে- রাজস্থান রয়্যালস, ১৭ মে- দিল্লি ক্যাপিটালস, ১৯ মে- পঞ্জাব কিংস, ২১ মে- কলকাতা নাইট রাইডার্স (বিকেল সাড়ে ৩টে)
সম্ভাব্য প্রথম একাদশ
ডেভিড ওয়ার্নার (অধিনায়ক), জনি বেয়ারস্টো (উইকেটকিপার), মণীশ পাণ্ডে, কেন উইলিয়ামসন, বিজয় শঙ্কর, কেদার যাদব, আব্দুল সামাদ, রশিদ খান, ভুবনেশ্বর কুমার, সন্দীপ শর্মা, টি নটরাজন