আইপিএলে আরসিবি-র রানের পাহাড় পেরোতে ব্যর্থ কেকেআর, জ্বলেও নিভে গেলেন রাসেল
আরসিবি-র রানের পাহাড় টপকাতে ব্যর্থ কেকেআর, জ্বলেও নিভে গেলেন রাসেল
আইপিএলের অতি গুরুত্বপূ্র্ণ ম্যাচে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের রানের পাহাড় অতিক্রম করতে ব্যর্থ হল কলকাতা নাইট রাইডার্স। চেনা মেজাজে ব্যাট চালিয়েও আরসিবি বোলারদের দক্ষতার সামনে মাথা নত করলেন আন্দ্রে রাসেল। হাই-ভোল্টেজ ম্যাচ ৩৮ রানে হেরে গেল শাহরুখ খানের দল। পরপর তিন ম্যাচে তিন হাসিল করে ফের লিগ তালিকার শীর্ষ স্থানে উঠে এলে ব্যাঙ্গালোর।
ব্যাঙ্গালোরের দেওয়া ২০৫ রান লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ঝড়ের গতিতে করে কেকেআর। ২ ওভার শেষ হওয়ার আগেই ২৩ রানে পৌঁছে যায় ইয়ন মর্গ্যানের দল। তবে ওই ওভারেই তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ আউট হয়ে সাজঘরে ফিরে যান মারকুটে গিল। ৯ বলে ২১ রান করেন কেকেআর ওপেনার। দুটি চার ও দুটি ছক্কা আসে তাঁর ব্যাট থেকে। এরপর একই ছন্দে কলকাতার ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ চালিয়ে যান নীতীশ রানা ও রাহুল ত্রিপাঠী। দুই ক্রিকেটারের মধ্যে ৩৪ রানের পার্টনারশিপ হয়।
চালিয়ে খেলতে গিয়ে আউট হন রানা এবং ত্রিপাঠী। পাঁচটি তার সহযোগে ২৫ রান করেন রাহুল। দুটি চার ও একটি ছক্কা সহযোগে ১৮ রান করে আউট হন রানা। মাত্র ২ রান করে আউট হন দীনেশ কার্তিক। ২৯ রান করে সাজঘরে ফিরে যান কেকেআর অধিনায়ক ইয়ন মর্গ্যান। শেষ বেলায় সেই পুরনো মেজাজে ব্যাটিং করে কলকাতা ফ্যানদের মনে কিছুটা হলেও জয়ের আশা জাগান। কিন্তু ২৬ রান করে আউট হয়ে রাসেলের কাজ আরও কঠিন করে দেন শাকিব আল হাসান।
অন্যদিকে ২০ বলে ৩১ রান করে আউট হন রাসেল। তিনটি চার ও দুটি চার আসে তাঁর ব্যাট থেকে। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬৬ রান তুলতে সক্ষম হল কেকেআর। আরসিবি-র হয়ে ৩ উইকেট নেন কাইল জেমিয়েসন। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন যুজবেন্দ্র চাহাল ও হর্ষল প্যাটেল। এক উইকেট নেন ওয়াশিংটন সুন্দর।
আইপিএলের অতি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে টসে জিতে আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর। চেন্নাইয়ের এমএ চিদম্বরম স্টেডিয়ামে আগে বড় রান খাড়া করে প্রতিপক্ষের ওপর চাপ বাড়ানোই তাঁর লক্ষ্য বলে জানিয়েছিলেন বিরাট কোহলি। মন্থর উইকেটে রান তাড়া করে ম্যাচ জেতা কঠিন হবে বলেও মনে করেছিলেন আরসিবি অধিনায়ক।
টি২০-তে এর আগে ইয়ন মর্গ্যানের বিরুদ্ধে টানা সাত বার টসে হেরেছেন বিরাট কোহলি। দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে শাপমোচন ঘটল আরসিবি অধিনায়কের কেরিয়ারে। ইংল্যান্ড অধিনায়কের সঙ্গে বিরাটের টসে হার-জিতের ব্যবধান ৭-১। তাতে যে তিনি যে বেশ সন্তুষ্ট, তা জানাতে কোনও দ্বিধা করেননি আরসিবি অধিনায়ক। বলেছেন যে আজকের ম্যাচ জিততেও তিনি মরিয়া।
যদিও শুরুটা ততটাও ভাল করতে পারেনি ব্যাঙ্গালোর। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে কেকেআর স্পিনার বরুণ চক্রবর্তীর বলে তুলে মারতে গিয়ে আউট হয়ে যান বিরাট কোহলি। মাত্র ৫ রান করেন আরসিবি অধিনায়ক। মাত্র ১ রান করে একই ওভারে আউট হয়ে সাজঘরে ফিরে যান রজত পতিদার। চার নম্বরে ব্যাট করতে নামা গ্লেন ম্যাক্সওয়েল স্বভাবসিদ্ধ বিধ্বংসী মেজাজ থেকে বেরিয়ে দায়িত্বশীল ভঙ্গিতে আরসিবি-র ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ চালিয়ে যান।
শুরুতে দুই উইকেট হারিয়ে নড়বড়ে হয়ে যাওয়া আরসিবি ইনিংস গড়ার কাজে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের সঙ্গে ব্রতী হন দলের দ্বিতীয় ওপেনার দেবদত্ত পাড়িক্কল। ২৮ বলে ২৫ রানের দায়িত্বপূর্ণ ইনিংস খেলে তিনি আউট হন। ইতিমধ্যে দুই ক্রিকেটারের মধ্যে ৮৬ রানের পার্টনারশিপ হয়। ততক্ষণে ম্যাচে আরসিবি-র ভিত দুর্দান্তভাবে তৈরি হয়ে যায়।
পাঁচ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে চিপকের মন্থর উইকেটকে প্রথমে ভাল করে বুঝে নিয়ে ব্যাট চালাতে শুরু করেন এবি ডিভিলিয়ার্স। অন্যদিকে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ব্যাট থেকে রান বর্ষণ বন্ধ করতে ব্যর্থ হন কেকেআরের বোলাররা। পাল্লা দিয়ে চলা মিস ফিল্ডিংয়ে ম্যাচে শাহরুখ খানের দলকে বেশ খানিকটা পিছনে ঠেলে দেয়।
৪৯ বলে ৭৮ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলে প্যাট কামিন্সের বলে আউট হয়ে সাজঘরে ফিরে যান গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ৯টি চার ও তিনটি ছক্কা আসে তাঁর ব্যাট থেকে। ক্রিজের অন্য প্রান্ত আঁকড়ে ধরে রাখা এবি ডিভিলিয়ার্সের ব্যাট থেকে ঝড়ের গতিতে রান বোরোতে থাকে। ৩৪ বলে ৭৬ রান করেন এবিডি। ৯টি চার ও তিনটি ছক্কা আসে তাঁর ব্যাট থেকে। ম্যাচে কেকেআরের হয়ে ২ উইকেট নেন বরুণ চক্রবর্তী। একটি করে উইকেট নেন প্যাট কামিন্স ও প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ।